ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

আয়হীন কর্মসংস্থানের দিকে এগুচ্ছে দেশ: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:৩৮, ১৭ এপ্রিল ২০১৮

সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশ এখন কর্মসংস্থানহীন প্রবৃদ্ধির ধারা থেকে বেরিয়ে আয়হীন কর্মসংস্থানের দিকে এগুচ্ছে। দেশে জিডিপি (মোট দেশীয় উৎপাদন) প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, কর্মসংস্থানও কিছুটা বেড়েছে। তবে সে কর্মসংস্থান মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়াতে ভূমিকা রাখেনি।

মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটের সুপারিশ তুলে ধরতে আয়োজিত এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সিপিডির পক্ষে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময়  সিপিডির ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালকের (ইডি) ড. ফাহমিদা খাতুন, খন্দকার  গোলাম মোয়াজ্জেমসহ অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, জিডিপির বিষয়ে সরকারের যে হিসাব, বাস্তবের সঙ্গে তার কোনও সামঞ্জস্যতা নেই। জিডিপির প্রবৃদ্ধির হারের সঙ্গে আয় বৃদ্ধির হার এবং কর্মসংস্থানের হারের যে সামঞ্জস্যতা থাকার কথা, সেটি নেই। বর্তমানে মানুষের আয়হীন কর্মসংস্থান হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ হোক, ৭ শতাংশ হোক, ৮ শতাংশ হোক তাতে কিছুই যায় আসে না। ফলাফল কী সেটাই মূল কথা। কর্মসংস্থান বেড়েছে, কিন্তু প্রকৃত আয় কমেছে আড়াই শতাংশের মতো। এই কর্মসংস্থানের মধ্যে আবার পুরুষদের চেয়ে নারীদের আয় কমেছে। শহরের চেয়ে গ্রামীণ আয় কমেছে। আগে বলা হতো, পড়াশোনা করে যে চাকরি-বাকরি পায় সে। কিন্তু বর্তমানে পড়াশোনা করেও অনেকেই চাকরি পাচ্ছে না।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘আগে আমরা উচ্চতর প্রবৃদ্ধির তাগাদা দিতাম। কিন্তু এখন বিষয়টি সে রকম না। এখন দরকার শোভন কর্মসংস্থান। যাদের কর্মসংস্থান হয়েছে তাদের আয় কম। আবার শ্রমের পরিবেশও নেই।’

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তিনি বলেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতে কয়েক বছর ধরে বিনিয়োগ স্থবির রয়েছে। অথচ বেসরকারি খাতে সাড়ে ১৮ শতাংশ ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এত টাকা গেলো কোথায়? অথচ আমদানি বাড়ছে। এই টাকা পাচার হয়েছে কিনা তা নিয়ে আমার সংশয় রয়েছে।

ব্যাংকিং খাতের সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ব্যাংক খাতে চরম বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। এ খাত বর্তমানে এতিম অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে খাতটি বিকলাঙ্গে পরিণত হয়েছে।

তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষিত মুদ্রানীতি মেনে চলতে হবে উল্লেখ করে বলেন, তারল্য ঘাটতির কথা বলে সরকার মুদ্রানীতি ঘোষণার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সিআরআর কমিয়ে দিয়ে মুদ্রার ফ্লো বাড়ানোর চেষ্টা করলো। আসলে তারল্য ঘাটতি একটি রোগের উপসর্গ, এটা কোন রোগ না। রোগ হলো আপনি (সরকার) একটি বিকলাঙ্গ ব্যাংকিং ব্যবস্থা সৃষ্টি করেছেন।

তিনি বলেন, ব্যাংকিং ব্যবস্থার বিষয়ে গত বছরের শুরুতে আমরা বলেছিলাম ২০১৭ সাল ব্যাংকিং কেলেঙ্কারির বছর। এবার আমাদের মনে হচ্ছে ব্যাংকিং খাত নিতান্তই এতিমে পরিণত হয়েছে। এর রক্ষকরাই এখন এই শিশু, এতিমের ওপর অত্যাচার করছেন। যাদের এটা রক্ষা করার কথা ছিল, তারাই বিভিন্ন চাপের মুখে বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছেন।

দেবপ্রিয় বলেন, মুদ্রানীতি ও ব্যাংকিং খাতে সংযত থাকার দরকার আছে। একই রকমভাবে মুদ্রা বিনিময় হারে সংযত থাকার দরকার আছে। আপনি এটাকে গতিশীল ও স্থিতিশীল করবেন। বিনিময় হারে হয় তো ডলারের দাম বাড়বে। কিন্তু এমনভাবে মজুদ বাড়িয়ে সামাল দিতে হবে যাতে আমদানি ব্যয় উস্কে না দেয়। সুদের হার, বিনিময় হার, ঋণের প্রবাহ সংযতই রাখতে হবে।

আরকে// এসএইচ/

 

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি