ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

ইটিভি অনলাইনের সঙ্গে দেবাশীষ

‘এবার কমেডি নয়, থ্রিলার দেখবে দর্শক’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:০৫, ১১ নভেম্বর ২০১৭

একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) পথ চলার শুরুর দিকের কথা। সেই সময় সম্পূর্ণ নতুন ধারণা নিয়ে চ্যানেলটিতে সম্প্রচার শুরু হয় বিনোদনধর্মী স্ট্রিট শো ‘পথের প্যাঁচালী’। অনুষ্ঠানটি দারুণ দর্শকপ্রিয়তা পায়। এর পাশাপাশি একটি নামও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে। তিনি হলেন উপস্থাপক দেবাশীষ বিশ্বাস। উপস্থাপক হিসেবে জনপ্রিয়তা পেলেও দেবাশীষ বিশ্বাসের অন্যতম বড় পরিচয় তিনি একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা। আগামী ৮ ডিসেম্বর মুক্তি পাচ্ছে তাঁর নতুন সিনেমা ‘চল পালাই’। সিনেমাটি নিয়ে একুশে টেলিভিশন (ইটিভি) অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেন দেবাশীষ। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন- সোহাগ আশরাফ

 

একুশে টিভি অনলাইন : দাদা কেমন আছেন?

দেবাশীষ বিশ্বাস : জি অনেক ভালো আছি। তবে ব্যস্ত আছি নতুন সিনেমার কাজ নিয়ে।

একুশে টিভি অনলাইন : আপনার নির্মিত নতুন সিনেমা ‘চল পালাই’ কোন অবস্থাতে আছে?

দেবাশীষ বিশ্বাস : সিনেমাটির সব কাজ শেষ। এখন শুধু মুক্তির অপেক্ষায়। মুক্তির তারিখও ঠিক হয়ে গেছে।

একুশে টিভি অনলাইন : কবে মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি?

দেবাশীষ বিশ্বাস : আগামী ৮ ডিসেম্বর আমরা সিনেমাটি মুক্তির জন্য দিন নির্ধারণ করেছি। সেই অনুযায়ী প্রচারণাও শুরু হয়েছে। আমি মনে করি সিনেমায় প্রচারণার বিষয়টি অনেক জরুরি। সেভাবেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

একুশে টিভি অনলাইন : সিনেমাটি নির্মাণের শুরুর গল্পটা বলবেন কি?

দেবাশীষ বিশ্বাস : সিনেমাটি নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু প্রায় দেড় বছর আগে। মজার বিষয় হচ্ছে যখন দেড় বছর আগে এই সিনেমার গল্প নিয়ে চিন্তুাভাবনা শুরু হলো তখন আমি একটু ভিতুই ছিলাম। গল্পটি ভারতের একজন নামকরা গল্পকার লিখেছেন। ওনার নাম হচ্ছে রজনীশ ঠাকুর। আমার মতই বয়স। ওনার একটা বই আছে অনেকগুলো গল্প নিয়ে প্রকাশিত। যে বইয়ের গল্প দিয়ে ইতিমধ্যে কয়েকটি সিনেমাও নির্মাণ হয়েছে। বইটির একটা গল্প আমার বেশ পছন্দ হয়। ওটাকে ভেঙ্গেও একটা সিনেমা হয়েছে। যেটা তাদের আদলে নির্মিত। আমার মাথায় গল্পটার একটা আলাদা আদল চলে আসলো। ভাবলাম এভাবেও করা যেতে পারে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমি সাধারণত রোমান্টিক কমেডি অথবা কমেডি সিনেমা করি। আমার আগের সিনেমাগুলো তেমনই ছিলো।

ব্যাপারটা হচ্ছে এই গল্পটা একেবারে অন্যরকম। টানটান উত্তেজনা। থ্রিলার সিনেমা। সিনেমাটি রাস্তার উপরে শুরু আবার রাস্তাতেই শেষ। একটু ইংরেজি স্টাইলের গল্প। ততক্ষণে আমার মধ্যে ইচ্ছে জেগেছে আমি এ ধরণের সিনেমা তৈরি করব। পরে আবার চিন্তাও হলো। মনে হলো বিপদজনক সিদ্ধান্ত। কারণ এটা আমার আয়ত্তের গল্প না। তবে একজন নির্মাতা মানেই তাকে যেকোন গল্পের চিত্ররূপ দেওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। অনেকে আমাকে সেভাবেই বললেন। আমিও তাই ভাবলাম- কেনো আমি একই ধারায় আটকে থাকবো। এভাবেই ভাবনাটা শুরু হয়।

একুশে টিভি অনলাইন : গল্পটা সম্পর্কে কিছু বলবেন?

দেবাশীষ বিশ্বাস : গল্পটা হচ্ছে থ্রিলারধর্মী। তবে এটাতে রোমান্সই বেশি। রোমান্টিকতার কারণেই থ্রিলার প্যাটার্নটা চলে আসে। আর গল্পটা যদি বলি তাহলে বলবো- একটি ছেলে একটি মেয়েকে ভালোবাসে। ছেলেটি হচ্ছে শিপন, আর মেয়েটি হচ্ছে তমা মির্জা। ভালোবাসার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় তমা মির্জার বাবা বিশিষ্ট শিল্পপতি সাদেক বাচ্চু সাহেব। তিনি বাঁধা দিলে তমা বলেন, তুমি যদি আমাদের সম্পর্কের মধ্যে বাঁধা হয়ে দাঁড়াও বা আমাদের সম্পর্কটা মেনে না নেও তাহলে আমরা পালিয়ে যাবো। ঠিক ঠিক তমা মির্জা শিপনকে নিয়ে পালিয়ে যায়। যেই রাস্তা ধরে পালাচ্ছে সেই পথেই শাহরিয়াজ নামে একটা ছেলের সঙ্গে তাদের দেখা হয়। ওরা তখন শাহরিয়াজের কাছে সহযোগিতা চায়। পরে শাহরিয়াজের বিভিন্ন কর্মমান্ড দেখে ওদের মধ্যে সন্দেহ হয়। ইতিমধ্যে শাহরিয়াজ তমাকে পছন্দও করে ফেলে। এবার উল্টো শিপনকে বিপদে ফেলে শাহরিয়াজ তমাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এই তমাকে শাহরিয়াজের হাত থেকে একবার শিপন উদ্ধার করে, আবার উদ্ধারকৃত তমাকে শিপনের কাছ থেকে শাহরিয়াজ নিয়ে পালিয়ে যায়। এই হচ্ছে সিনেমার গল্প।

একুশে টিভি অনলাইন : আপনি যে গল্পটা বললেন এমন গল্পতো এর আগে বহু সিনেমাতেই দেখা গেছে। তবে দেবাশীষের সিনেমায় এমন একই গল্প কেনো?

দেবাশীষ বিশ্বাস : গল্পটার ভালো লাগার জায়গাটা হচ্ছে গৎবাঁধা বাংলাদেশের কমার্শিয়াল সিনেমার থেকে এটি একেবারেই আলাদা। আপনি হয়তো এর আগে এমন গল্প দেখেছেন কিন্তু এই সিনেমায় যে ট্রিটমেন্ট বা প্যাটার্ন তা পুরোপুরি আলাদা। নায়িকা প্রেম করে, বাবা বাঁধা দেয়, নায়ক পালিয়ে যায় এটুকু পর্যন্ত হয়তো মিল পাবেন কিন্তু তারপরের ঘটনা পুরোপুরি ভিন্ন। আমার গল্পটা আসলে ওখান থেকেই শুরু হবে।

একুশে টিভি অনলাইন : সিনেমাটিতে কে কে অভিনয় করেছেন?

দেবাশীষ বিশ্বাস : ‘চল পালাইয়ে’ অভিনয় করেছেন- শাহরিয়াজ, তমা মির্জা, শিপন, শিমুল খান, আহমেদ শরীফ, সাদেক বাচ্চু, জাদু আজাদসহ অনেকে। ছবিটি প্রযোজনা করছে লাইভ এন্টারটেইনমেন্ট।

একুশে টিভি অনলাইন : নতুন সিনেমা নিয়ে দর্শকদের উদ্দেশ্যে কি কিছু বলবেন?

দেবাশীষ বিশ্বাস : আসলে আমি একেবারেই মূল ধারার চলচ্চিত্রের মানুষ। ছোটবেলা থেকেই চলচ্চিত্র মানেই মূলধারাকে বুঝি। সেই হিসেবে দর্শকদের বলতে চাই, আপনারা হলে এসে একটি পরিপূর্ণ সিনেমাই দেখতে পারবেন। একটিবারও আপনাদের মনে হবে না টাকা দিয়ে একটা লম্বা নাটক দেখেছেন। আমি সিনেমার গল্পে পূর্ণতা রেখেছি। কখনই মনে হবে না সিনেমার গল্পটা শেষ হয়নি। আর মেকিংয়ে, বর্তমান সময় তুলে আনার চেষ্টা করেছি। দর্শক যদি হলে এসে সিনেমাটি দেখেন তাহলে উৎসাহ পাব।

একুশে টিভি অনলাইন : সিনেমাটিতে কি কোন চমক থাকছে?

দেবাশীষ বিশ্বাস : পুরো সিনেমাটিই একটা চমক। দর্শক হলে এসে পয়সা খরচ করে বিনোদন না পেলে কেন সিনেমা দেখবে? আমার এই সিনেমায় দর্শক বিনোদন তো পাবেই, সঙ্গে একটা ভিন্ন কিছু মাথায় নিয়ে ঘরে ফিরে যাবে।

দর্শকদের জন্য নতুন সংবাদ হচ্ছে সিনেমাটিতে একটা আইটেম গান থাকছে। ‘দে নারে নিভিয়ে রাতের বাতি, আয়নারে দু’জনে আজকে মাতি’- সুদীপু কুমার দ্বীপের এমন কথার আইটেম গানটিতে নেচেছেন নায়লা নাঈম। আসলে শেষ সময় এসে ভেবে দেখলাম সিনেমায় একটি আইটেম গান দেওয়াই যায়। গল্পের ধারাবাহিকতায় গানটির চাহিদা আছে। তাই এটিও দর্শকদের জন্য একটা আলাদা চমক। আশা রাখি দর্শকদের ভালো লাগবে।

একুশে টিভি অনলাইন : একুশে টিভি অনলাইনের পক্ষ থেকে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। নতুন সিনেমার জন্য শুভ কামনা।

দেবাশীষ বিশ্বাস : একুশে টিভি অনলাইনের সকল পাঠকদের প্রতিও আমার শুভেচ্ছা রইলো। সবার প্রতি আহ্বান থাকবে সিনেমা হলে এসে সিনেমাটি দেখুন। বাংলাদেশের সিনেমা এখন অনেক ভালো হচ্ছে। হলে এসে সিনেমা দেখলে আমরা অনুপ্রাণিত হব।

এসএ/ এআর

 

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি