ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে প্রথম নিবন্ধিত রোহিঙ্গা রুবিয়া

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:২০, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ২২:৩৭, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সহিংসতার মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের পরীক্ষামূলকভাবে বায়োমেট্রিক নিবন্ধন গতকাল শুরু হয়েছে। কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে গতকাল সোমবার রাতে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে প্রথম নিবন্ধিত হন রোহিঙ্গা নারী রুবিয়া খাতুন। রাত পৌনে নয়টায় রুবিয়া প্রথম বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত হন।

নাম: রুবিয়া খাতুন। নারী। বয়স ৬০। বাবার নাম: নাগু। মায়ের নাম: সুফিয়া খাতুন। জন্মতারিখ: অজানা। জন্মস্থান: মিয়ানমার। দেশ: মিয়ানমার। জাতীয়তা: রোহিঙ্গা। এসব তথ্য দিয়ে নিবন্ধিত হন রুবিয়া।

আজ মঙ্গলবার সকালে এই বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান জানান, সোমবার পরীক্ষামূলকভাবে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রোহিঙ্গা নিবন্ধন শুরুর হওয়ার পর ২০ জন রোহিঙ্গার নিবন্ধন করা হয়। এর মধ্যে আটজনকে আমরা পরিচয়পত্র তুলে দিয়েছি।

গত ২৫ আগস্ট রাতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের উৎপীড়নে ব্যাপকহারে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। সহিংসতার মুখে আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে ছুটে আসছে রোহিঙ্গারা।

আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তাকারী সংগঠনগুলোর জোট ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ (আইএসসিজি)- এর মতে, রাখাইন থেকে এবারের সহিংসতায় ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে।

চলতি দফায় বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসার পর সরকার বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের পরিকল্পনা নেয় সরকার। রোহিঙ্গাদের এই বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান জানান, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের কাজ করছে। এতে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটি।

কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরের পাশাপাশি অন্যান্য স্থানে আরও ১৫ থেকে ২০টি কেন্দ্র খুলে এখন থেকে প্রতিদিন বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের কার্যক্রম চলবে বলে জানান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান। প্রতিটি কেন্দ্রে প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩৫০ জন রোহিঙ্গার নিবন্ধন করা হতে পারে বলে জানান তিনি।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান বলেন, ‘নিবন্ধনের প্রক্রিয়াটি জটিল ও সময়সাপেক্ষ। তবে আমরা সফলভাবে এটা শেষ করতে পারব বলে আশা করছি।’

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরসহ বিভিন্ন সংস্থার ভাষ্য, বাংলাদেশে ১৯৭৮ সালে প্রথম রোহিঙ্গারা আসতে শুরু করে। ১৯৯২ সালে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। পরে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তির পর রোহিঙ্গাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ চলে যায়। ১৯৯২ সাল থেকেই কুতুপালং ও নয়াপাড়ায় দুটি আশ্রয় শিবির খোলা হয়। সেখানে ৩০ হাজারের বেশি নিবন্ধিত রোহিঙ্গা আছে। এসব নিবন্ধিত রোহিঙ্গার পাশাপাশি দেশে তিন লাখের বেশি রোহিঙ্গা আছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানায়। গত বছরের অক্টোবরে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর নিপীড়ন শুরু হয়। ওই দফায় ৯২ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। আর সাম্প্রতিক অভিযানে প্রায় তিন লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

 

ডব্লিউএন


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি