মেসি জাদুতে বিশ্বকাপ নিশ্চিত আর্জেন্টিনার

বাঁচা মরার ম্যাচে সব শঙ্কা কাটিয়ে আর্জেন্টিনা সরাসরি উঠে গেল রাশিয়া বিশ্বকাপে। লিওনেল মেসি হ্যাটট্রিক করে জেতালেন শুরুতেই পিছিয়ে পড়া দলকে।

মাঠে নেমে ৪০ সেকেন্ডের মধ্যেই গোল হজম করে বসলো আর্জেন্টিনা। প্রথম মিনিটেই বিপদ ঘটিয়ে ফেলবে কে জানতো! এ খেলা দেখে শঙ্কায় ভুগতে শুরু করে আর্জেন্টিনা ভক্তরা। এর মধ্যে নিয়তি বুঝি আড়াল থেকে হাসছিল! কারণ আর্জেন্টিনা দলে যে মেসি নামক এক জাদুকর ছিলেন! এ জাদুকরের জাদুর ছোঁয়ায় ১২ মিনিটেই বদলে গেলো খেলার দৃশ্যপট। অবশেষে সেই জাদুকর করলেন বিরল এক হ্যাটট্রিক। তার হ্যাটট্রিকেই শেষ পর্যন্ত ইকুয়েডরকে ৩-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করলো আর্জেন্টিনা।

অন্য ম্যাচে ব্রাজিলের কাছে চিলি হেরে যাওয়ায় আর কলম্বিয়া-পেরু ম্যাচ ড্র হওয়ায় মেসিরা চলে এলো তিন নম্বরে। এর সঙ্গে সরাসরিই ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে উঠে গেল হোর্হে সাম্পাওলির দল।

ব্রাজিল আগেই বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত করে নিয়েছিল। বাছাই পর্বে দ্বিতীয় হয়ে সুয়ারেজের উরুগুয়ে, তৃতীয় হয়ে আর্জেন্টিনা, চতুর্থ হয়ে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করলো কলম্বিয়া। পেরু সুযোগ পেলো প্লে-অফ খেলার। আর দু’বারের কোপা আমেরিকা জয়ী চিলিকে বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে পড়তে হলো।

খেলার শুরুতেই মেসি ভক্তদের স্তব্ধ করে দেয় স্বাগতিক ইকুয়েডর। খেলা শুরুর ৪০ সেকেন্ডের মধ্যেই পিছিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। লম্বা বাড়ানো বল ধরে সতীর্থকে হেডে পাস দিয়েছিলেন রোমারিও ইবাররা। আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক রোমেরোকে পরাস্ত করেন এই মিডফিল্ডার।

খেলার ১২ মিনিটেই আর্জেন্টিনাকে সমতায় ফেরালেন মেসি। অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া বাঁ দিকে বল বাড়িয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন বার্সেলোনার ফরোয়ার্ড। ডি মারিয়ার কাছ থেকে বল ফেরত পেয়ে প্রথম ছোঁয়াতেই বাঁ পায়ের টোকায় ইকুয়েডরের জালে বল পাঠান লিওলেন মেসি।

সমতায় ফিরে খেলার পুরো নিয়ন্ত্রণ নেয় আর্জেন্টিনা। যার ফলে ২০ মিনিটে আবারও গোলের দেখা। এবারও জাদুকর মেসির পায়ের কারুকাজ।

ডিফেন্ডার আইমার আলভারেজের ভুলে বল পেয়েছিলেন মেসি। সেটা নিয়ন্ত্রণে রেখেই ডি-বক্সে ঢুকে উপরের বাঁ-কোন দিয়ে কোনাকুনি শটে প্রতিপক্ষের জালে পাঠান পাঁচবারের বর্ষসেরা এই ফুটবলার। একই সঙ্গে রেকর্ড গড়েন মেসি। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটিও এখন মেসির দখলে। তার গোলসংখ্যা এখন ২০।

২-১ লিড নিয়েই প্রথমার্ধের খেলা শেষ করে আর্জেন্টিনা-ইকুয়েডর। বিরতির পর আবারও প্রভাব বিস্তার করে আর্জেন্টিনা। যার ধারাবাহিকতায় ৬২ মিনিটে আবারও গোল। এর মাধ্যমে মেসির দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক। এমন চাপের ম্যাচে অসাধারণ হ্যাটট্রিক যেন মেসির ক্ষেত্রেই সম্ভব।

ডি বক্সের সামনে বলটা পেয়েই ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে মাপা লবে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে ইকুয়েডরের জালে জড়িয়ে দিলেন তিনি। আর্জেন্টিনাকে এনে দিলেন অবিশ্বাস্য এক জয়। এই জয়েই শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ নিশ্চিত হলো আর্জেন্টিনার।

আর/এআর