ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

শান্তিতে নোবেলের আদ্যপান্ত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:২৬, ৬ অক্টোবর ২০১৭ | আপডেট: ২২:৩৩, ৬ অক্টোবর ২০১৭

বর্তমানে মোট ছটি বিষয়ে নোবেল পুরষ্কার দেওয়া হয়। তবে ১৯০১ সাল থেকে পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা বিজ্ঞান ও শান্তি এই ৫টি বিষয়ে নোবেল পুরষ্কার দেওয়া হতো। অর্থনীতিতে নোবেল দেওয়া শুরু হয় ১৯৬৮ সাল থেকে। পাঁচটি বিষয়ে প্রার্থী চূড়ান্ত করে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস। শুধু শান্তিতে নোবেল প্রার্থীতা চূড়ান্ত করে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি।

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী বাছাইয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। আর এ কমিটিকে নিয়োগ দেয় নরওয়ের পার্লামেন্ট স্টর্টিং।

শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য প্রার্থীতা নির্বাচন প্রক্রিয়াটি শুরু হয় মূলত আগের বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে। ওই সময় মনোনয়ন দেওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত ব্যক্তিদের কাছে আমন্ত্রণপত্র পাঠায় নোবেল কমিটি। বিভিন্ন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমপি, মন্ত্রী), বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধান, ইন্টারন্যাশনাল কোর্টস অব ল, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস, দর্শন, আইন ও ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক; শান্তি গবেষণা ইন্সটিটিউটের নেতা, পররাষ্ট্রবিষয়ক ইন্সটিটিউট; শান্তিতে নোবেল জয়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান; নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির সাবেক ও বর্তমান সদস্য এবং নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউটের সাবেক উপদেষ্টারা এই যোগ্য ব্যক্তিদের তালিকায় থাকেন। তবে কেউ নিজেকে মনোনয়ন দিতে পারেন না। 

আমন্ত্রণপত্র পাওয়ার পর পরের বছরের ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ থাকে। এ সময় পার হয়ে যাওয়ার পর যারা মনোনয়নপত্র দাখিল করেন তাদেরকে পরের বছরের জন্য বিবেচনা করা হয়। যারা নির্ধারিত সময়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন সেগুলো থেকে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়। নোবেল কমিটি প্রার্থীদের কাজগুলো মূল্যায়ন করে ওই সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করে। পরে মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে উপদেষ্টাদের মতামত নেওয়া হয়। সংক্ষিপ্ত তালিকাটি কমিটির স্থায়ী উপদেষ্টারা পুনরায় মূল্যায়ন করেন।

শুরুর সংক্ষিপ্ত গল্প-

বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেল জীবদ্দশায় ৩৫৫টি উদ্ভাবনের মালিক। এসব উদ্ভাবনের মাধ্যমে প্রচুর অর্থবিত্তের মালিক হয়েছিলেন তিনি। সুইডিশ এ বিজ্ঞানীর বড় ভাই লুডভিগ ১৮৮৮ সালে ফ্রান্সে বেড়াতে গিয়ে মারা যান। কিন্তু ফরাসি এক দৈনিক ভুল করে আলফ্রেড নোবেল মারা গেছেন ভেবে নিয়ে নথিতে শিরোনাম করেন, ‘মৃত্যুর সওদাগর মারা গেছেন’। আর এরকম শিরোনামের পেছনে কারণ ছিল আলফ্রেডের অধিকাংশ আবিষ্কারই ছিল আগ্নেয়াস্ত্র। আলফ্রেড নোবেল তখনই বুঝতে পেরেছিলেন, মৃত্যুর পর ইতিহাস তাঁকে কীভাবে মূল্যায়ন করবে।  তাই জীবদ্দশায় করে যাওয়া অনেকগুলো উইলের মধ্যে শেষ উইলে নোবেল উল্লেখ করেন যে, তাঁর সব সম্পদ পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে, যাঁরা পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, শান্তি ও সাহিত্যে মানবতার স্বার্থে কাজ করবেন। এ জন্য নোবেল তাঁর মোট সম্পদের ৯৪ শতাংশ উইল করে যান, যা এখন নোবেল পুরস্কার হিসেবে স্বীকৃত।

১৯০১ সালে নোবেল পুরস্কার চালু হওয়ার পর থেকে গত বছর পর্যন্ত ২৩টি প্রতিষ্ঠান ও ৮৮১ জন্য ব্যক্তি জিতেছেন  সম্মানজনক এ পুরস্কার। নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের বলা হয় ‘নোবেল লরিয়েট’।

১৯৮০ সালের আগ পর্যন্ত নোবেল বিজয়ীরা যে পদক পেতেন, সেটা ছিল ২৩ ক্যারেট স্বর্ণের। এরপর থেকে ১৮ ক্যারেট ‘সবুজ স্বর্ণে’র ধাতবের ওপর ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের প্রলেপ দেওয়া পদক দেওয়া হচ্ছে নোবেল বিজয়ীদের। এ ছাড়া একটি সনদ এবং মোটা অঙ্কের অর্থ পুরস্কার দেওয়া হয় নোবেল লরিয়েটদের।

গত বছর নোবেল বিজয়ীদের নগদ অর্থের পরিমাণ ছিল ৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় আট কোটি টাকা।

তবে গত ১৪ সেপ্টেম্বর সুইডেনের স্টকহোমে নগদ অর্থপুরস্কার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় নোবেল ফাউন্ডেশন। তাই এ বছর নগদ অর্থের পরিমাণ হবে ১১ লাখ ডলার, মানে ৯ কোটি টাকার কিছু বেশি।

সূত্র: নোবেলপ্রাইজডটওআরজি, সিএনএন।

ডব্লিউএন


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি