ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

নোবেল জয়ী জিয়াওবোর মৃত্যু

বিদেশে না পাঠানোয় তোপের মুখে চীন

প্রকাশিত : ১২:০৭ পিএম, ১৪ জুলাই ২০১৭ শুক্রবার | আপডেট: ০৬:১৪ পিএম, ১৪ জুলাই ২০১৭ শুক্রবার

সদ্য প্রয়াত শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী চীনা মানবাধিকার কর্মী লিউ জিয়াওবোকে  চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি না দেওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছে বেইজিং। ভিন্নমতাবলম্বী এ লেখকের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানী, ফ্রান্স শোক জানানোর পাশাপাশি তার মৃত্যুর জন্য চীনা সরকারকে দায়ী করছে। তবে এসব সমালোচন প্রত্যাখান করেছে চীন সরকার। খবর বিবিসির।

চীন বলছে তাদের অভ্যন্তরীন বিষয়ে অন্যদেশের হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।

লিউ জিয়াওবো কারাবন্দী থাকা অবস্থায় লিভার ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে বৃহস্পতিবার বিকালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

১৯৮৯ সালের তিয়েনআনমেনের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের এই কর্মীর মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। তিনি লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ক্যানসারের শেষ ধাপে থাকা জিয়াওবোকে কারাগার থেকে সুরক্ষিত একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে তিনি এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা গেলেন।

চিকিৎসার জন্য জিয়াওবোকে বিদেশে পাঠানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। সেই আহ্বানে চীনা কর্তৃপক্ষ সাড়া দেয়নি। নোবেল কমিটি জিয়াওবোর মৃত্যুকে অকাল মৃত্যু বলছে। চিকিৎসার্থে জিয়াওবোকে বিদেশ যেতে অনুমতি না দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশ চীন সরকারকে দোষছে। তারা বলছে, এ মৃত্যুর জন্য চীন সরকার ভীষনভাবে দায়ী। তারা লিউ জিয়াওবোর স্ত্রীকে এখন গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তি দিতে বেইজিং-এর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

এক বিবৃতিতে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েল বলেন, ‘কেন আরও আগে লিউ জিয়াওবোর ক্যান্সার শনাক্ত করা যায়নি তা নিয়ে দ্রুত, স্বচ্ছ এবং যৌক্তিকভাবে উত্তর দেওয়া এখন চীনের দায়িত্ব।’ বিবৃতিতে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, লিউ জিয়াওবোকে বিদেশে নিজের চিকিৎসা করানোর সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল, কিন্তু চীনা কর্তৃপক্ষ বার বার তা অস্বীকার করেছেন। এ সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। আমি এখন তাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যেন লিউ জিয়াওবোর স্ত্রীকে গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।

চীনের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত এক সংবাদপত্রের সম্পাদকীয়তে অভিযোগ করা হয়েছে, পশ্চিমা বিশ্ব এ ঘটনাকে ‘রাজনীতিকরণের’ চেষ্টা করছে।

চীনে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং রাজনৈতিক সংস্কারের জন্য কাজ করে যাওয়া লিউ ২০১০ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। চীনে আমূল রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে অন্যান্য অধিকারকর্মীদের সঙ্গে ‘চার্টার ৮’ শীর্ষক একটি পিটিশন সই করেছিলেন লিউ। চীনে একদলীয় শাসনের অবসান ঘটিয়ে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক শাসনের সূচনার আহ্বান জানানো হয়েছিল ওই চার্টারে। ২০০৯ সালে রাষ্ট্রক্ষমতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ উস্কে দেওয়ার অভিযোগে তাকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল চীন সরকার। গত মাসে কারাগার থেকে শেনইয়াং এর একটি হাসপাতালে তাকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।  

//এআর