ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

৮০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা শিশু অপুষ্টির শিকার

প্রকাশিত : ০৬:৩১ পিএম, ১৭ জুলাই ২০১৭ সোমবার | আপডেট: ০৮:১৩ পিএম, ১৭ জুলাই ২০১৭ সোমবার

মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলের রোহিঙ্গা মুসলমান অধ্যুষিত এলাকায় পাঁচ বছরের কম বয়সী ৮০ হাজারেরও বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। তীব্র অপুষ্টিতে ভুগতে থাকা ওই শিশুদের অাগামী বছরের মধ্যে চিকিৎসা সেবা দিতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য বিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম, ডব্লিউএফপি।

মিয়ানমারের পশ্চিম রাখাইন রাজ্যের গ্রামগুলোতে জরিপ চালিয়ে প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ডব্লিউএফপি এ প্রতিবেদন তৈরি করছে। সেখানে প্রায় ৭৫ হাজার সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা দেশটির রক্তাক্ত সেনা অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

বিশ্ব খাদ্য সংস্থা জরিপে উঠে এসেছে, নির্যাতিত রোহিঙ্গারা এখন চরম খাদ্য সংকটে পড়েছেন। মংডু এলাকার এক-তৃতীয়াংশ মানুষ চরম খাদ্য সংকটের মধ্যে রয়েছেন। সেখানকার একটি জেলা ভয়ঙ্করভাবে সহিংসতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোনো কোনো বাড়িতে ২৪ ঘণ্টায় একবার খাবারেরও ব্যবস্থা নেই।

সামরিক বাহিনীর অভিযানে মংডুর প্রাপ্তবয়স্ক অধিকাংশ পুরুষ সদস্যরা পালিয়ে গেছেন। এক চতুর্থাংশ নারী সদস্য তাদের পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। পুরুষ সদস্যদের হারিয়ে ওই পরিবারগুলো চরম খাদ্য সংকটের মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছে।

বিশ্ব খাদ্য সংস্থা বলছে, রাখাইনে ২ লাখ ২৫ হাজার মানুষের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের ন্যূনতম খাবারের চাহিদাও পূরণ হচ্ছে না রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায়।

মিয়ানমারে যাওয়ার পর ডব্লিউএফপির মুখপাত্র বলেছেন, রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে, এই পরিস্থিতির পরিণতি প্রাণঘাতী হতে পারে। এমনকি প্রতিষেধক দিয়েও তা সারানো কঠিন হয়ে পড়বে। আগামী ১২ মাসের মধ্যে সেখানকার ৮০ হাজার ৫০০ শিশুকে অপুষ্টিজনিত চিকিৎসা সেবা দেওয়ার প্রয়োজন হবে।

বিশ্ব খাদ্য সংস্থার জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৬ সালের শেষের দিকের সহিংসতার কারণে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রাখাইনের বিভিন্ন এলাকায় খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতি একেবারে ভেঙে পড়েছে।

গত বছরের অক্টোবরে রাখাইনের সীমান্ত এলাকায় অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ওপর হামলা চালায়। এরপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় ব্যাপক অভিযান শুরু করে। বিভিন্ন গ্রামে বিমান হামলাও চালানো হয়।

এর আগে রোহিঙ্গা নিপীড়নের জেরে দেশটির সাবেক গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী ও বর্তমান স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির নোবেল পুরস্কার বাতিলের দাবি উঠে। রোহিঙ্গা মুসলমানদের খুন, নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগে গত মাসে জাতিসংঘ রাখাইনে তদন্তকারী দল পাঠাতে চাইলে সুচি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) সরকার তা নাকচ করে দেয়।

 তবে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রমাণ পেয়েছে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা। সহিংসতা সংঘটিত হওয়া এলাকার বাজারগুলোতে চড়া দামে খাদ্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে। সেখানে শুটকি মাছ প্রোটিনের চাহিদা পূরণের একমাত্র উপায়। সূত্র : গার্ডিয়ান।

ডব্লিউএন