ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৩ ১৪৩১

গ্রামীণ ঐহিত্যে ভরপুর জল ও জঙ্গলের কাব্য

প্রকাশিত : ০৩:৩৭ পিএম, ৩১ জুলাই ২০১৭ সোমবার | আপডেট: ০৬:৩৫ পিএম, ৯ আগস্ট ২০১৭ বুধবার

শহরের যান্ত্রিকতা থেকে ক্ষণিকের জন্য প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যেতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন ‘জল ও জঙ্গলের কাব্য’ থেকে।

এখানে রয়েছে পাখ-পাখালি দুরন্তপনা, বাড়ন্ত স্বাধীনতায় নিজেদের মতো করে কিছুটা সময় কাটানোর জন্য গ্রামীণ ব্যবস্থাপনা। তার ওপর রয়েছে অফুরান সবুজের মাঠ, মাঁচা করা কুটির। যে দিকে দু’চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ।

পাশের খালে কচুরিপানার মাঝ দিয়ে ছোট্ট ডিঙি নৌকার মৃদু দোলুনি। এর ওপর বাড়তি পাওনা গ্রামবাংলার বারোয়াড়ি ভর্তা, পুকুরের টাটকা মাছ থেকে শুরু করে নানা স্বাদের সব মেন্যু। শুনতে পারবেন গ্রামীণ লোকশিল্পীদের কণ্ঠে মন উজাড় করা আবহমান বাংলার জারি-সারি-ভাটিয়ালি গান।

শহর থেকে একটু দূরে এই গ্রামবাংলার প্রতিচ্ছবি ‘জল ও জঙ্গলের কাব্য ২০০৫ সালে বিমান বাহিনী থেকে অবসর নেওয়া এক বৈমানিক শখের বসে গড়ে তোলেন। তার ইচ্ছে ছিল প্রকৃতির কাব্যে নিজেই ঘুরে বেড়াবেন একা একা। আর শুনবেন পাখির মিষ্টি কলতান।

তিনিই একদিন ভাবলেন, এর স্বাদ কেন আমি শুধু একা নেব? কেন পাবে না আর সবাই? যেই ভাবা সেই কাজ। আনন্দ ভাগাভাগির জন্য উন্মুক্ত হলো সবার।

গ্রামীণ পরিবেশে তৈরি পুরোটা এলাকাজুড়ে ১০-১২টা শেড রয়েছে। এর এক একটি শেডের আলাদা আলাদা নাম আর সাইজ, বকুল তলা, বট তলা ইত্যাদি। মাঝে মাঝে তার মেঠো পথ।

একপাশে ঢেঁকিতে চাল গুড়ো হচ্ছে; চালের আটা দিয়ে রুটি আর চিতই পিঠা তৈরি হচ্ছে। আরেক পাশে বিশাল হেসেলে পুরোদমে চলছে খাবারের প্রস্তুতি। একদিকে চা-ঘর, দু’ পা ছড়িয়ে বাঁশের বেঞ্চে বসে চা খাওয়া। চোখে সবুজ আর হাতে গরম চায়ের মগ, অমৃত এই সুখের অফুরান আস্বাদন একদম ফ্রি।

আবার কারো মন চাইলে একটু নৌকা ভ্রমণ করতে পারেন। রয়েছে বেশ কয়েকটা ছোট্ট ডিঙি। বিলের শাপলার পথ মাড়িয়ে আসতেও কোনো বাঁধা নেই।

মাত্র ৭৫ বিঘা জমির সঙ্গে বিস্তীর্ণ বিলে সাজানো এই কাব্যের পরতে পরতে স্বস্তির স্বাদ। আর যদি একটু ঝুম বৃষ্টি থাকে তাহলে তো কথাই নেই!

কীভাবে যাবেন: পুবাইল কলেজ গেট থেকে জল-জঙ্গলের কাব্য মাত্র ৩ কিলোমিটার আবার জয়দেবপুর রাজবাড়ির পাশ দিয়েও যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে গেলে টঙ্গী স্টেশন রোড বা ৩০০ ফিট দিয়ে যাওয়া যায়। জল-জঙ্গলের কাব্য পুবাইল, ডেমুরপাড়াতে অবস্থিত। এছাড়া মহাখালী থেকে নরসিংদী বা কালীগঞ্জগামী যেকোনো বাসে উঠুন। ১ ঘণ্টা পর পুবাইল কলেজ গেট এলাকায় নেমে পড়ুন। ভাড়া নেবে ৪০ টাকা। এরপর একটা ব্যাটারিচালিত রিকশায় করে পাইলট বাড়ি। তবে অবশ্যই আগে বুকিং থাকতে হবে।

অথবা ঢাকার সায়েদাবাদ, গুলিস্তান, আজিমপুর, মহাখালী থেকে গাজীপুর পরিবহন, ঢাকা পরিবহন, ভিআইপি পরিবহন ও বলাকা পরিবহনে শিববাড়ী চলে যাবেন। ভাড়া ৭০ টাকা। শিববাড়ী থেকে অটোরিকশায় ভাদুন (ইছালি) জল-জঙ্গলের কাব্য রিসোর্ট। ভাড়া ৮০-১০০ টাকা।

খরচাপাতি: এখানে জনপ্রতি নেওয়া হয় ২,০০০ টাকা। নাস্তা, দুপুর ও রাতের খাবারসহ। খরচটা একটু বেশি মনে হতে পারে। তবে খাবারের বহরা দেখলে তা আর মনে হবে না। সারাদিনের জন্য ১,৫০০ টাকা জনপ্রতি (সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার আর বিকেলে হালকা নাস্তা)। শিশু (৫-১০ বছর), কাজের লোক ও ড্রাইভার জনপ্রতি ৬০০ টাকা।

আর/ডব্লিউএন