ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

ক্যাবলের গুণগত মানই আমাদের ভরসা

প্রকাশিত : ০৮:৩৩ পিএম, ৩১ জুলাই ২০১৭ সোমবার | আপডেট: ০৫:৩০ পিএম, ১৮ আগস্ট ২০১৭ শুক্রবার

ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদার বিবিএস ক্যাবলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ব্যবসা শুরু করেছেন বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস্ লিমিটেড (বিবিএস) এর মাধ্যমে। বর্তমানে বিবিএস গ্রুপে রয়েছে নয়টি প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি বিবিএস ক্যাবলস পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। বিবিএস ক্যাবলসকে নিয়ে তিনি অনেক স্বপ্ন দেখেন। দেশের নাম্বার ওয়ান কোম্পানিতে পরিণত করতে চান বিবিএস ক্যাবলসকে। সম্প্রতি তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন ইটিভির সঙ্গে। তার সঙ্গে কথোপকথনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। 

ইটিভি : ব্যবসার শুরুটা কীভাবে।

আবু নোমান হাওলাদার : মূলত আমরা, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা কয়েকজন প্রকৌশলী, যৌথভাবে বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম প্রতিষ্ঠা করি। আমাদের পারস্পরিক বোঝাপড়া খুবই ভালো। প্রথমদিকে স্টিল স্ট্রাকচার বিল্ডিং অনেকে চিনতো না। আমাদের যারা ক্লায়েন্ট তাদের কেউ কেউ জানতেন। আমাদের দেশের শিল্প-কারখানার বিল্ডিংগুলো অ্যাংগেলের বা আরসিসির হতো। এর জায়গায় আমরা প্রি-ফেব্রিকেটেড স্টিল বিল্ডিং নিয়ে আসি।

ইটিভি : স্টিল বিল্ডিং থেকে ক্যাবল তৈরির দিকে ঝুঁকলেন কেন?

আবু নোমান হাওলাদার : ক্যাবল ইঞ্জিনিয়ারিং খাত সংশ্লিষ্ট একটি পণ্য। আর আমরা ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টর নিয়ে কাজ করি। একটা বিল্ডিংয়ের সাথে ক্যাবলও সম্পৃক্ত। আমরা যেসব প্রতিষ্ঠানের জন্য বিল্ডিং তৈরি করি, নানা কাজে তাদের ক্যাবলও প্রয়োজন হয়। বিল্ডিং দিয়ে যেহেতু আমরা গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করেছি, তাই ক্যাবল উৎপাদন করলে সহজেই তাদেরকে ক্রেতা হিসেবে পাওয়া যাবে এমন ভাবনা থেকে এই শিল্প শুরু করি আমরা।  ২০০৯ সালের ১২ এপ্রিল একটি প্রাইভেট কোম্পানি হিসেবে বিবিএস ক্যাবলের যাত্রা শুরু। ২০১১ সালে আমরা বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করি।

যে কোনো শিল্পে নিজেদের অবস্থান তৈরি করা যে সহজ নয় আমরা জানতাম। ক্যাবল শিল্পের চ্যালেঞ্জগুলোও আমাদের মাথায় ছিল। আমরা জানতাম, প্রথম চ্যালেঞ্জ হবে উৎপাদিত ক্যাবলের গুণগত মান নিশ্চিত করা। ক্যাবল খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। এর সঙ্গে সম্পদ ও জীবনের নিরাপত্তার বিষয় জড়িত। দ্বিতীয়টি চ্যালেঞ্জটি ছিল এই শিল্পে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে এগিয়ে যাওয়া।

আমরা এসব ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে নিজেদের প্রতি বিশ্বাস অটুট রেখে মেধা ও কর্মদক্ষতা নিয়ে মাঠে নামি। ক্যাবলের গুণগত মানের উপর ভর করেই আমরা এতদূর এসেছি।

ইটিভি : বিবিএস ক্যাবলস কী ধরনের ক্যাবল তৈরি করে।

আবু নোমান হাওলাদার : আমরা অ্যালুমিনিয়াম ক্যাবলস, কপার ক্যাবলস, সিলিকন ক্যাবলস, অপটিক্যালস ফাইবার ক্যাবলস, পাওয়ার ক্যাবলস, রাবার ক্যাবলস, রেলওয়ে সিগনালিং ক্যাবলস, ওয়েল্ডিং ক্যাবলস, জেলিফিলস ক্যাবলস, অটোমোবাইলস ক্যাবলস, সাবমার্সিবল ক্যাবলস, কক্সিয়াল ক্যাবলস, ফেল্ক্সিবল ক্যবলস, হাউজ ওয়ার ক্যাবলসহ বিভিন্ন ধরনের ইলক্ট্রিক্যাল, ইলেক্ট্রনিক এবং টেলিকমনিকেশন ক্যাবলস উৎপাদন করি।

ইটিভি :  ক্যাবলের মানের বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত করেন।

আবু নোমান হাওলাদার : আমাদের খুবই সমৃদ্ধ একটি ল্যাবরেটরি আছে। উৎপাদিত ক্যাবলস প্রথমে সেই ল্যাবে পরীক্ষা করি। এখান সফল হওয়ার পরে অন্যদিকে যাই। আইএসই স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী যে ধরণের পরীক্ষা করা প্রয়োজন হয়, সেগুলো করার পরে আমরা গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাই। নিজস্ব পরীক্ষা-নিরীক্ষার বাইরে আমরা বুয়েট ও থার্ড পার্টির মাধ্যমে পরীক্ষা করি। যেমন বুয়েটের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান সিপিআরআই পরীক্ষার রিপোর্ট আমাদের আছে। সরকারের যে কোনো টেন্ডারে এই দুটি রিপোর্ট চায়। এর বাইরেও মাঝে মাঝে আমরা আন্তর্জাতিক আরও পরীক্ষা করে থাকি।

ইটিভি : দেশে প্রায় শ’খানেক কোম্পানি ক্যাবল প্রস্তুত করছে। এতো প্রতিযোগিতার মধ্যে কেমন করছে আপনার প্রতিষ্ঠান?

আবু নোমান হাওলাদার : বাজারে আসার কিছু দিনের মধ্যেই বিবিএস ক্যাবলস নিজেদের একটি জোরালো অবস্থান তৈরি করে নিতে সক্ষম হয়। পণ্য তথা ক্যাবলসের গুণগত মান দিয়েই আমরা এটি করেছি। প্রথমত: আমরা আমাদের মেশিনারিজ এনেছি জার্মানি এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে। দ্বিতীয়ত: র-মেটেরিয়াল প্রথম দিন থেকে এলএমই ক্যাথটিক ব্যবহার করি। এই এলএমই ক্যাথটি জাপানের মারুবেনি কোম্পানি থেকে নিয়ে আসি। কাজেই আমাদের মেশিনারিজ নাম্বার ওয়ান। আমরা ভালো মানের কাঁচামাল জাপান থেকে আমদানি করি। তৃতীয়ত: আমাদের ইঞ্জিনিয়ার ও টেকনিশিয়ানরা হলেন বাংলাদেশের বিভিন্ন কারখানায় কাজ করা অভিজ্ঞ ও সুনামধারী। এই তিনের তিনের সমন্বয়ে বিবিএস ক্যাবলস প্রথম দিন থেকে ভালো মানের ক্যাবলসে রূপ নিয়েছে।

ইটিভি : বৈদ্যুতিক ক্যাবল শিল্পের বর্তমান প্রেক্ষাপট কেমন বলে আপনি মনে করছেন?

আবু নোমান হাওলাদার : ইলেকট্রিসিটি বর্তমান সরকারের একটা প্রায়োরিটি সেক্টর। জনসংখ্যা যেভাবে বাড়ছে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়ার হারও তেমনি বাড়ছে। কাজেই বিদ্যুতের চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। ফলে বৈদ্যুতিক ক্যাবলের চাহিদাও বেশ ভালো।

ইটিভি : আমরা যতটুকু জানি খুব কম সময়ের মধ্যে আপনারা ভালো  অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন। বড় বড়  উদ্যোগের ফলে দেশীয় চাহিদা পূরণ করে রফতানির দিকে ঝুঁকছেন। এই জায়গাগুলো যদি একটু বলেন- 

আবু নোমান হাওলাদার : বিবিএস ক্যাবলস ২০১১ সালে মার্কেটে আসে। মার্কেটে আসার আগে দু’বছর ফ্যাক্টরি, মেশিনারি সিলেকশন এবং টেকনিক্যাল ম্যান পাওয়ার সিলেকশনের ব্যাপারে কাজ করি। আমরা অস্ট্রেলিয়ান একজন কনসালটেন্ট নিয়োগ করি। যার ফলে আমরা বিশ্বমানের একটা ফ্যাক্টরি স্থাপন করতে সক্ষম হই। বর্তমানে যারা লেটেস্ট মেশিনারি তৈরি করেন সেই প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আমাদের ফ্যাক্টরিতে মেশিন সংযোগ করি। সাথে সাথে আমাদের রেপুটেড যে সকল ইঞ্জিনিয়ার এবং প্রোডাকশন পিপল রয়েছেন তাদেরকে আমরা আমাদের ফ্যাক্টরিতে আমাদের সাথে সংযোগ করি। অনেকে বলে থাকেন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমাদের মার্কেটিং ও সেলস টিমটা বেশ ভালো টিম। সবগুলোর সমন্বয়ে আমরা প্রথম দিন থেকে বিশ্বমানের ক্যাবল ভোক্তাদেরকে দিতে পেরেছি। আমরা আমাদের রেপুটেশন ধরে রেখেছি। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমরা বেষ্ট ক্যাবল তৈরি করেছি।

ইটিভি : কোয়ালিটির পাশাপাশি নিন্মমানের প্রোডাক্ট বিক্রির অভিযোগ আমরা ক্রেতাদের কাছে পাই। এটা আপনি কিভাবে দেখেন?

আবু নোমান হাওলাদার : আমার একটু দুঃখ কাজ করে বাংলাদেশে প্রায় ১০০ টার মতো কোম্পানি ক্যাবল তৈরি করে। তার মধ্যে আমার মনে হয় যে, ৮০ থেকে ৮৫ জনই নকল ক্যাবল তৈরি করে। তাদের মার্কেট ছোট, তাদের ব্রান্ড নেই, অন্যান্য ব্রান্ডের ক্যাবল আছে তাদেরকে তারা নকল করে। কিন্তু আমি তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনারা আপনাদের নিজস্ব ব্রান্ড নিয়ে কোয়ালিটি নিয়ে মার্কেটে আসেন। কারণ, এটা আমাদের দেশের উন্নয়নের স্বার্থে দরকার। এটা যেকোনো প্রোডাক্ট না। ইলেকট্রিসিটি বিপদজনক, এটা আমাদের জীবনের সাথে মিশে গেছে।

কাজেই ইলেকট্রিসিটি পরিবহন করার জন্য যে ক্যাবল, সেটা নিরাপদ হতে হবে। এটা শুধু ব্যবসায়িকভাবে না, এটা আমাদের দেশের স্বার্থে, কোয়ালিটির স্বার্থে প্রয়োজন। আপনারা কোয়ালিটি ক্যাবল নিয়ে আসেন। আর যারা ক্যাবল কিনেন বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে ইঞ্জিনিয়ার নেই, যেখানে আমাদের ইউজাররা সচেতন নন, তাদের আমি অনুরোধ করব আপনারা ব্রান্ড ক্যাবল ব্যবহার করুন। এবং আপনারা একটু, আপনাদের পরিচিতদের বা শিক্ষিত যারা, তাদের পরামর্শ নিন এবং ভালো ক্যাবল ব্যবহার করুন।

ইটিভি : ঢাকা শহরের মানুষ হয়ত কিছুটা সচেতন কিন্তু প্রত্যন্ত অঞ্চলে ফারাকটা হয়ত অনেকে বোঝেন না। সে ফারাকটা আসলে বোঝার উপায় কী?

আবু নোমান হাওলাদার : খারাপটা বোঝার উপায় আসলে নেই। কারণ, ক্যাবল টেস্ট সবখানে করার সুযোগ নেই। ক্যাবল টেস্টের জন্য যে সকল মাধ্যম আছে, যেমন বুয়েট। সবখানে এ সুযোগ নেই। তবে দেশব্যাপী যেসব কোম্পানির ডিলার আছে তাদের পণ্য ব্যবহার করা যেতে পারে। বিবিএস ক্যাবলের ডিলার আছে সারা দেশে। এসব জায়গা থেকে যদি কেনা যায় তবে প্রতারিত হবে না।

ইটিভি : কিন্তু যারা সুনামের সাথে কাজ করছেন তাদের নাম, লোগো দিয়ে যারা বৈদ্যুতিক ক্যাবল তৈরি করেছেন তাদের আসলে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন?

আবু নোমান হাওলাদার :  এটা আসলে সরকারের নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। আমি মনে করি যে, খাদ্যের ভেজাল যেভাবে সরকার নিয়ন্ত্রণ করছে সেভাবে এটা করা দরকার। সরকারের কোনো আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যদি কাজ করে তবে অনেকভাবেই নকল প্রতিহত করা যাবে। বুয়েট থেকে তাৎক্ষণিক পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন। আমাদের কাছে চাইলে আমরাও ইকুপমেন্ট দিয়ে, লোকবল দিয়ে সহযোগিতা করতে পারব। এটা অতীব দরকার, জনস্বার্থে দরকার।

ইটিভি : ইলেকট্রিক ক্যাবলের ক্ষেত্রে আমাদের দেশ এক সময় আমদানিনির্ভর ছিল, সেখান থেকে আমাদের বড় চাহিদা আমাদের দেশীয় কোম্পানিগুলো পূরণ করছে। এখন রফতানি করতে পারবে কিনা? এক্ষেত্রে সরকারের সহযোগিতা কেমন?

আবু নোমান হাওলাদার : প্রথমে ক্যাবল আমদানিনির্ভর ছিল। আমি ধন্যবাদ দিতে চাই, পূর্বসূরি ক্যাবল নেটওয়ার্ক এর মালিকদের। যারা আমাদের এই পথ দেখিয়েছেন। যেমন সুপার সাইন, বিআরবি ক্যাবলস। যারা বিদেশি আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় উৎপাদনকারী হিসেবে নাম করেছেন। এবং তাদের দেখানো পথে আমরা এই পথে এসেছি। সরকারি লেভেলে কিছু ইমপোর্ট হচ্ছে। আমাদের ক্যাবলের জবাবদিহিতা রয়েছে। ইমপোর্ট করতে গেলে হয় কি, যেমন পোর্টের মাল আসার পর তাদের জবাবদিহিতা থাকে না আর। যেখানে আমাদের জবাবদিহিতা থাকে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো দেশীয় কোম্পানির প্রস্তুতকৃত ক্যাবল কিনলে উনারা আমাদের আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। আমরা সতর্কতার সাথে এটাকে দেখি।

ইটিভি : পুরো আমদানি নির্ভরতা থেকে চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানির প্রত্যাশা করেছেন। সে ক্ষেত্রে সক্ষমতার জায়গাটা সম্পর্কে যদি বলেন -

আবু নোমান হাওলাদার : আগামী দু’তিন বছর পর আমাদের নিজস্ব উৎপাদন থেকে একটা সময় আসবে, বাংলাদেশ ক্যাবল আমদানি না করে রপ্তানি করতে পারবে। এ ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। আমাদের অফিস, ফ্যাক্টরি, সেটআপ বাড়াচ্ছি। এটা শেষ করতে ১ বছরের মতো সময় লেগে যাবে। আর এক্সপোর্ট করতে গেলে কিছু সার্টিফিকেশনের দরকার হয়। আশা করছি ১ বছরের মধ্যে এটা শেষ করতে পারব। বাংলাদেশের বড় ধরনের একটা আয় হবে এই শিল্পে।

ইটিভি : সেক্ষেত্রে সরকারের কী ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করেন-

আবু নোমান হাওলাদার : এক্সপোর্টের ক্ষেত্রে সরকারের দিক থেকে আমরা ইনসেনটিভ প্রত্যাশা করি। কারণ, মার্কেটে প্রথম ঢুকতে গেলে বাঁধা-বিপত্তি থাকে। সরকার যদি প্রথম দিক থেকে ১৫- ২০ শতাংশ ইনসেনটিভ দেন তাহলে প্রতিযোগিতা থাকে। 

ইটিভি : বিবিএস ক্যাবল করছে কী ধরণের প্রোডাক্ট তৈরি করছে? এক্সপোর্ট করতে গেলে উচ্চমূল্য সক্ষমতা কতটুকু?

আবু নোমান হাওলাদার : ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোডাক্ট হিসেবে আমরা ক্যাবল তৈরি করছি। এক্সপোর্ট মার্কেটেও একই রকম। বাহিরে এক্সপোর্ট করতে গেলে কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়। আশা করছি সেগুলো হয়ে যাবে।

ইটিভি : বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে বড় ধরনের বিপদ ঘটে। অসচেতনতার কারণে কমদামি তার ব্যবহার করার কারণে সেফটি সিকিউরিটি থাকে না। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী?

আবু নোমান হাওলাদার : আপনি যদি খারাপ ক্যাবল ব্যবহার করেন তাহলে বিপদ ঘটবে। কোয়ালিটি ক্যাবল উৎপাদন করে আমাদের কাজ শেষ। যিনি কানেকশন দিবেন তিনি যদি তারে লুজ রাখেন তাহলে শর্ট সার্কিট হবে, আগুন লাগবে, ইস্পারকিং হবে। লোড ক্যালকুলেশন খুব জুরুরি। বৈদ্যুতিক পাখার তার দিয়ে তো আর ফ্রিজ চলবে না। কাজেই তার ভিন্ন হবেই। বেশি কারেন্ট ড্র করতে গিয়ে সেখানে বিপদ ঘটে। আমরা মনে করি ইলেট্রিসিয়ানরা যদি শিক্ষিত হন, সচেতন হন তবে বিপদ কম ঘটবে।

ইটিভি : বিবিএস ক্যাবল পুঁজিবাজারে ট্রেডিং করছে, অনুমোদন পেয়েছে। এই ব্যাপারে আপনার অভিমত কী ?

আবু নোমান হাওলাদার : আমি এই ক্ষেত্রে ধন্যবাদ জানাতে চাই, শেয়ারবাজারে যাদের বিও হিসাব আছে। কিন্তু আমাদের কোম্পানির আইপিওতে অনেক আবেদন জমা পড়েছিল। আমি মনে করি বিবিএস ক্যাবলের শেয়ার যারা রাখবেন তারা বেষ্ট শেয়ার রাখছেন। এটা অব্যাহত লাভ দিয়ে যাবে। এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নাই।

ইটিভি : বিবিএস ক্যাবলস্ নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?

আবু নোমান হাওলাদার :  বিবিএস ক্যাবলসকে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের নাম্বার ওয়ান ক্যাবল প্রস্তুতকারক কোম্পানিতে উন্নীত করতে চাই। সেই বিশ্বাস নিয়ে আমাদের ব্যবস্থাপনা পর্ষদ কাজ করছে। দ্বিতীয়ত বিবিএস ক্যাবলস রপ্তানির ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। আগামী বছর থেকে আমরা ক্যাবল রপ্তানি করার স্বপ্ন দেখছি। সে লক্ষ্য নিয়ে কাজও করছি।