ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপি রায় নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে : কাদের

প্রকাশিত : ০৩:৫৭ পিএম, ১২ আগস্ট ২০১৭ শনিবার | আপডেট: ০৪:৫৬ পিএম, ১২ আগস্ট ২০১৭ শনিবার

ছাত্র সমাবেশে বক্তৃতা করছেন ওবায়দুল কাদের। ছবি: সংগৃহিত

ছাত্র সমাবেশে বক্তৃতা করছেন ওবায়দুল কাদের। ছবি: সংগৃহিত

বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আজকে যারা শেখ হাসিনার উন্নয়নকে সহ্য করতে পারছে না, তারা সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়কে কেন্দ্র করে নতুন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। এ ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে নেতাকর্মীদের সাংগঠনিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন তিনি।


শনিবার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্রলীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা আন্দোলন করতে ব্যর্থ। নির্বাচনে হেরে যাবে বলে তারা অংশ নেয়নি। তারা আন্দোলন করতে ব্যর্থ হয়ে ষড়যন্ত্রের জাল পেতেছে। সরকার হটাতে নতুন নতুন ইস্যু খুঁজে বেড়াচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাংলাদেশের রাজনীতির অঘটন ঘটিয়ে ডিগবাজিতে চ্যাম্পিয়ন মওদুদ আহমেদ আনন্দে মেতে উঠেছেন।


বিএনপি মহাসচিবের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা আলমগীর আপনি এত লাফালাফি করছেন কেন? কারণটা কি? আট বছরে আট মিনিটের জন্যও আন্দোলন করতে পারেননি। পারেননি কারণ, জনগণ আপনাদের সঙ্গে ছিল না। এত দিন যারা আন্দোলনের ডাক দিয়ে ঘরে বসে হিন্দি সিরিয়াল দেখে সময় কাটত, তারা এখন ঘর থেকে বেরিয়ে এসে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠছেন; যেন আদালত তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবেন। এরা এতদিন বিদেশিদের কাছে নালিশ করেছেন, যেন বিদেশিরা তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবেন।


ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি বলতে চাই, মির্জা আলমগীর সাহেবকে, আওয়ামী লীগ কখনো পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। বিএনপির জন্ম হয়েছে বন্দুকের নল দিয়ে; পেছনের দরজা দিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে। অন্ধকার আর ষড়যন্ত্রের পথ দিয়েই তারা এগিয়ে যাচ্ছে। সেভাবেই ২০০১-এর ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচন করেছিলেন। আপনি আবার মনে করছেন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর সেই ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচন হবে, সেই রঙিন খোয়াব র্পূরের মতো উড়ে যাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব।


বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার মওদুদ আহমেদের সমালোচনা করে বলেন, এই মওদুদ সাহেব জিয়াউর রহমানের সরকার থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। কারণ জিয়াউর রহমান ইংরেজি জানেন না এই বলে। ভুলে গেছেন বিএনপির লোকেরা? বন্যাদুর্গত এলাকায় যাওয়ার সময় চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত বেগম জিয়া যখন কুমিল্লা হাসপাতালে, তখন মওদুদ সাহেব তাঁকে হাসপাতালে রেখে জেনারেল এরশাদের সরকারে যোগ দিয়েছেন। এই মওদুদ সাহেব একবার বিএনপি, একবার জাতীয় পার্টি, আবার বিএনপি। কী করে তাঁর পরামর্শ নেন খালেদা জিয়া?’


মওদুদ আহমদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, মওদুদ আহমদরা অবৈধভাবে দখল করা বাড়ির মামলায় হেরে গেলে বলেন বিচারবিভাগ স্বাধীন নয়; আবার বেগম জিয়ার বাড়ির মামলা হেরে গেলেও বিচারবিভাগ স্বাধীন নয়। ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট যখন রায় দিল, তখন মওদুদ আহমেদ বলছেন, বিচারবিভাগ স্বাধীন। এই হচ্ছে এ দলের অবস্থা।


দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের কঠিন চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে। এই ষড়যন্ত্রের খুঁটি কোথায় কোথায় আছে, তা আমরা জানি। এই খুঁটি তারা আঁকড়ে ধরে আছে। জনগণের মাঝে তাদের কোনো অবস্থান নেই। তাই তারা নতুন নতুন ষড়যন্ত্রের ইস্যু খুঁজে।


ছাত্রলীগের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংগঠনের সুনামের ধারা বজায় রাখতে হবে। দল ভারি করার জন্য ছাত্রলীগে খারাপ লোক নেবে না। অনুপ্রবেকারীদের ছাত্রলীগে স্থান নেই। আগাছামুক্ত, পরগাছামুক্ত ছাত্রলীগ গড়তে হবে। গুটিকয়েক খারাপ লোকের জন্য ছাত্রলীগের দুর্নাম হতে পারে না। খারাপদের বের করে দাও, এদের আমাদের প্রয়োজন নেই।

 

//এআর