ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সিজার না স্বাভাবিক প্রসব ভালো...

প্রকাশিত : ১১:৩২ এএম, ২৪ আগস্ট ২০১৭ বৃহস্পতিবার

অন্ত:স্বত্তা মা ও তার স্বামীর সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয় প্রসব স্বাভাবিক হবে, না কি সিজার হবে। প্রসবের এই বিষয়গুলো নির্ভর করে মা ও গর্ভের শিশুর অবস্থার ওপর। স্বাভাবিক প্রসব নাকি সিজার ভালো এ বিষয় জানাচ্ছেন উত্তরা মডার্ন হাসপাতালের গাইনী বিভাগের প্রধান ডা. দিলরুবা খানম।

যখন কোনো নারী গর্ভবতী হন তখন মাথায় চিন্তা আসে প্রসবটা কীভাবে হবে। স্বাভাবিক নাকি সিজার। তবে স্বাভাবিক প্রসব হওয়ানোর ক্ষেত্রে আমরা দেখি মা ও বাচ্চা উভয় সুস্থ আছে কি না।  যে পথটা দিয়ে প্রসব হবে সেটি যেন প্রশস্ত হয়। প্রসবের সময় যেন পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্যথা থাকে এবং জরায়ুর মুখটাও যথাযথভাবে খোলে। এসব বিষয় যদি ঠিক থাকে তখন অবশ্যই স্বাভাবিক প্রসব হবে।

এটা ঠিক যে, সিজার প্রবণতা হাল সময়ে বেড়ে গেছে। অনেক সময় সিজার করা জরুরি হয়ে পড়ে। আবার কখনও কখনও অন্ত:স্বত্তাই প্রসব বেদনা সইতে না পেরে সিজার করার জন্য অনুরোধ করে।

উন্নত প্রযুক্তির কারণে আগে ভাগেই আমরা বুঝতে পারি মায়ের পেটে যে শিশুটি রয়েছে সে অক্সিজেন পরিবহন কী রকম পাচ্ছে। যদি সমস্যা হয় তখন অবশ্যই অস্ত্রোপচারে যেতে হবে।

আবার ইদানীং দেখা যায় নারীরা একটু বেশি বয়সে সন্তান নিচ্ছেন। বয়স হয়ে গেলে মায়ের নানা রকমের স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দেয়। তখন এটাকে উচ্চ ঝুঁকি সম্পন্ন গর্ভধারণ বলা হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে সিজার করতে হয়। তবে স্বাভাবিক প্রসবই ভালো। স্বাভাবিক প্রসব হাসপাতালেও করানো সম্ভব।

তবে সিজার নিয়ে কেউ কেউ মনে করেন যে, সিজারিয়ান শিশুদের মেধা কমবেশি হয়, অসুখ বা রোগ-ব্যাধি বেশি হয়। আসলে শিশুটি যখন গর্ভাবস্থায় থাকে তখন সে জানে না তার স্বাভাবিক প্রসব হবে, নাকি সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে তাকে বের করা হবে। তার বুদ্ধিমত্তা পেটের ভেতর থেকেই একই রকম হচ্ছে। এটাতে কোনো পার্থক্য আসলে হয় না। তবে অপরিপক্ব শিশুকে সিজার করে বের করে আনা হলে তার বুদ্ধিমত্তা কম হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ৩৭ সপ্তাহ হয়ে গেলে আমরা পরিপক্ব বলি।

আর তার থেকে একটু আগেও যদি করি, ৩৪ সপ্তাহ থেকে তখনো সে ধরনের কোনো সমস্যা পাওয়া যায় না। দুটো শিশু একই রকম হয়ে থাকে। প্রথম দিকে হয়তো বা তাদের শ্বাসকষ্ট বা কোনো ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। পরাবর্তীকালে বুদ্ধিমত্তার দিক থেকে কেউ কোনো অংশে কম থাকে না।

আবার সিজারিয়ান সেকশনের পর অনেক মায়ের একটি ভাবনার বিষয় হয় পেটে দাগ থাকা। এই সেলাইয়ের বিষয়ে, আর দাগের বিষয়ে মায়েরা খুব সচেতন। এটি নিয়ে তারা খুব চিন্তিত থাকেন। আসলে এটি নির্ভর করে শরীরের ওপর। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় অস্ত্রোপচারের তিন মাস পরে কারো কোনো দাগই থাকে না। এটাতে আসলে কারোরই হাত নেই। তবে দাগ তুলে ফেলার জন্য বিভিন্ন ধরনের লোশন আছে সেগুলো দিয়ে থাকি।

এখন প্রশ্ন হলো একজন মায়ের হয়তো স্বাভাবিক প্রসব হলো, আরেকজনের সিজারিয়ান প্রসব এক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য হয় কি না? অবশ্যই একটু পার্থক্য করতে হয়। কেননা স্বাভাবিক প্রসবের পর একদিন হাসপাতালে থেকে সে চলে যেতে পারছে। তবে সিজারিয়ান ডেলিভারি হলে তো তার তিন থেকে চার দিন থাকতে হয়। স্বাভাবিক প্রসবে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।
আর//এআর