ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মিয়ানমারকে চাপ দিতে সংসদে প্রস্তাব পাস

প্রকাশিত : ১০:৫৪ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ সোমবার | আপডেট: ১০:৩৮ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ মঙ্গলবার

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়া এবং তাদের নাগরিকত্ব দিয়ে নিরাপদে বসবাস করার সুযোগ করে দিতে মিয়ানমারে উপর কূটনৈতিক চাপ দেওয়ার একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সোমবারের অধিবেশনে সর্বসম্মতভাবে এই প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়।

মিয়ানমারে নিপীড়নের মুখে এই দফায় ৩ লাখের মতো রোহিঙ্গার পালিয়ে আসার প্রেক্ষাপটে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের মধ্যে এ প্রস্তাব পাস হলো। সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ ধারায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনির উত্থাপিত এই প্রস্তাবের উপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংসদ সদস্যরা আলোচনায় অংশ নেন।

মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হলেও তাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারকে চাপ দেওয়ার ওপর জোর দেওয়ার কথা বলেন সংসদ সদস্যরা।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিপীড়নের শিকার হয়ে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা দশকের পর দশক ধরে বাংলাদেশে রয়েছে।

এরপর ২০১২ সালে সহিংসতার পর ফের রোহিঙ্গারা বাংলাদেশমুখী হলে তখন সীমান্তে কড়াকড়ি করে সরকার। তখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন দীপু মনি। গত বছর একই ধরনের ঘটনা ঘটলেও একই অবস্থানেই থাকে বাংলাদেশ। তার মধ্যেও দুই বারও আরও কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে।

এবার গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের সেনা ও পুলিশ চৌকিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযান শুরুর পর সীমান্তে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। দুই সপ্তাহে বাংলাদেশে ঢুকে পড়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ৩ লাখে পৌঁছে গেছে।

বাংলাদেশ পরিস্থিতি শান্ত করতে এবং রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমারে ‘সেইফ জোন’ গড়ে তুলতে প্রস্তাব দিলেও ইয়াঙ্গুন সরকার তাতে সাড়া দিচ্ছে না। উল্টো রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি সন্ত্রাসী’ বলার মাধ্যমে মিয়ানমার বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

রোহিঙ্গা সঙ্কটের পরিস্থিতি বর্ণনা করে বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকের পরপরই মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ দিতে সংসদে প্রস্তাবটি গ্রহণ হল।

প্রস্তাবের নোটিসে দীপু মনি মিয়ানমারের দাবি প্রত্যাখ্যান করে নানা ইতিহাস থেকে তথ্য এনে বলেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারেরেই নাগরিক। তারা ৫০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আরাকান রাজ্যে বসবাস করছে। চতুর্দশ ও পঞ্চদশ শতাব্দীতে আরাকান ছিল স্বাধীন মুসলিম রাজ্য। ১৪০৪ সাল থেকে ১৬২২ সাল পর্যন্ত ১৬ জন মুসলিম সম্রাট আরাকান শাসন করেছেন। রাজা বোধাপোয়া ১৭৮৪ সালে আরাকান দখল করে তৎকালীন বার্মার সঙ্গে যুক্ত করেন।

দীপু মনি বলেন, ভূমধ্যসাগরে এক আইলানের লাশ বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছিল। শত আইলানের ক্ষত-বিক্ষত লাশ আজ নাফ নদীর তীরে ভাসছে।আমরা চাই বিশ্ব বিবেক এগিয়ে আসুক, রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াক।

আরকে/ডব্লিউএন