ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

দুই মামলায় খালেদা জিয়ার ‍বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

প্রকাশিত : ০১:০১ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০১৭ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৫:২৩ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০১৭ বৃহস্পতিবার

দুর্নীতি ও জাতীয় পতাকার মানহানির দুটি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার শুনানিতে হাজির না হওয়ায় বৃহস্পতিবার ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ মো. আখতারুজ্জামান খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।

আর স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকার মানহানি করার অভিযোগে আরেক মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার মহানগর হাকিম নূর নবী।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন। তিনি চিকিৎসার উদ্দেশ্যে সেখানে গেলেও এখনও দেশে ফেরেননি। খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, খালেদা জিয়া যাতে দেশে আসতে না পারেন, সেজন্য ইচ্ছাকৃতভাবে একদিনে দুই মামলায় সরকার এভাবে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করিয়েছে।

আওয়ামী লীগ সমর্থক সংগঠন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকীর করা মানহানির মামলায় সমন জারির পরও খালেদা জিয়া আদালতে হাজির না হওয়ায় মহানগর হাকিম নূর নবী তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন বলে এ আদালতের পেশকার মো. ইখতিয়ার রহমান জানান। মামলার বাদী এ বি সিদ্দিকী গণমাধ্যমকে বলেন, বিএনপি নেত্রী আইনের পরোয়া করেন না। আদালতের সমন পেয়েও আসেন না। আদালত আজ তাই পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন।

২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার হাকিম আদালতে এবি সিদ্দিকীর করা এ মামলার আর্জিতে বলা হয়, স্বীকৃত স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতকা তুলে দিয়ে খালেদা জিয়া দেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকার ‘মানহানি ঘটিয়েছেন’।

ঢাকা মহানগর হাকিম রায়হানুল ইসলাম সেদিন বাদীর আর্জি শুনে তেজগাঁও থানা পুলিশকে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এ বি এম মশিউর রহমান চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি যে প্রতিবেদন দেন তাতে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার কথা বলা হয়।

সেখানে বলা হয়, ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদকে মন্ত্রী বানান। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ইতোমধ্যে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

কিন্তু তারা ক্ষমতায় থাকাকালে মন্ত্রিত্বের সুবিধা নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা তাদের বাড়ি এবং গাড়িতে ব্যবহার করেছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পতাকাকে স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে তুলে দিয়ে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক জনগণের মর্যাদা ভূলণ্ঠিত করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০০ ধারার মানহানির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

এ বি সিদ্দিকীর মামলার আর্জিতে খালেদা জিয়ার পাশাপাশি তার প্রয়াত স্বামী এক সময়ের সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানকেও আসামি করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের আইনে মৃত ব্যক্তির বিচারের সুযোগ না থাকায় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয় তদন্ত প্রতিবেদনে।

গত  ২২ মার্চ বিচারক প্রতিবেদনটি আমলে নেন এবং পরে ২০ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন।  এরপরও খালেদা জিয়া হাজির না হলে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন এ বি সিদ্দিকী। 

এর আগে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে দুই বছর আগে বাসে পেট্রোল বোমা মেরে আটজনকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় বিস্ফোরক আইনের মামলায় গত মঙ্গলবার খালেদা জিয়াসহ ‘পলাতক’ আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

 

/এমআর/এআর