ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

এস কে সিনহার পদত্যাগপত্র বঙ্গভবনে

প্রকাশিত : ০১:৪৩ পিএম, ১১ নভেম্বর ২০১৭ শনিবার | আপডেট: ০১:৪৪ পিএম, ১১ নভেম্বর ২০১৭ শনিবার

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা পদত্যাগ করেছেন। বঙ্গভবনের পক্ষ থেকে শনিবার দুপুরে বিচারপতি সিনহার পদত্যাগপত্র পাওয়ার কথা জানানো হয়। ছুটি থাকায় প্রধান বিচারপতি গত শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ১০ টায় সিঙ্গাপুর থেকে কানাডার উদ্দেশে রওনা হন। এর আগে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছিলেন। আজ সেটা বঙ্গভবনের এসেছে। দুপুর ১টায় রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আজ সকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ বিষয়ে তিনি বিকেলে কথা বলবেন। তবে তার জানা মতে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতির দফতরে পৌছেন নি।

এ  বিষয়ে শুক্রবার রাত পৌনে ২টায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক  বলেছিলেন, ‘এ রকম কোনো কিছু তার জানা নেই।’ পরে এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার ও তথ্য কর্মকর্তা সাইফুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ-সংক্রান্ত চিঠির বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। প্রধান বিচারপতির ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পদত্যাগপত্র পাঠানোর খবরটি তারাও শুনেছেন। তবে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগপত্র পাঠানোর বিষয়ে রাত ৩টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুরো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এদিকে, সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে প্রধান বিচারপতি শুক্রবার কানাডা গেছেন। এর আগে সোমবার তিনি অস্ট্রেলিয়া থেকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যান। শুক্রবার তার ছুটির মেয়াদ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হলেও তিনি ঠিক কবে দেশে ফিরবেন, তা জানাতে পারেননি সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জেনারেল জাকির হোসেন জানান, `ছুটির মেয়াদ শেষ হলেও কাজে যোগ দেওয়া বা ছুটি বাড়ানোর ব্যাপারে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার কাছ থেকে কোনো চিঠি তারা এখনও পাননি।`

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রধান বিচারপতি পদ নিয়ে সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে কি-না-এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, ছুটি শেষ হওয়ায় শনিবার থেকে তিনি অনুপস্থিত বলে বিবেচিত হবেন। আর এ ক্ষেত্রে সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপিল বিভাগের প্রবীণতম ব্যক্তি দায়িত্ব পালন করবেন। এখন সেটাই হচ্ছে, আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি (মো. আবদুল ওয়াহ্‌হাব মিঞা) দায়িত্ব পালন করছেন। প্রধান বিচারপতি দেশে ফিরলে তখন দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। সাংবিধানিক কোনো শূন্যতা সৃষ্টি হয়নি।

এর আগে গত বুধবার অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, গত ১৪ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, নৈতিক স্খলন, দুর্নীতি অসদাচরণসহ ১১টি সুর্নিদিষ্ট অভিযোগ ওঠায় প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আপিল বিভাগের অপর পাঁচ বিচারপতি বসতে চাননি। এমন বাস্তবতায় বিচারপতি ফের আদালতে বসতে চাইলে বা নতুন করে দায়িত্ব নেওয়ার চেষ্টা করলে তা হবে আদালত অবমাননার শামিল।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়সহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে ২ অক্টোবর অসুস্থতাজনিত কারণে ছুটিতে যান প্রধান বিচারপতি। ১৩ অক্টোবর তিনি অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। যাওয়ার আগে প্রধান বিচারপতি লিখিত বক্তব্যে সাংবাদিকদের বলেন, `আমি অসুস্থ নই। পালিয়েও যাচ্ছি না। সাময়িকভাবে যাচ্ছি। আবার ফিরে আসব। বিচার বিভাগের মর্যাদা রক্ষার জন্য যাচ্ছি। সরকারকে ভুল বোঝানো হয়েছে।` পরদিন এ ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এক বিবৃতিতে জানায়, প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ১১টি দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে তার কাছ থেকে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

টিআর/ এআর