ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সোফিয়াকে দেখতে তরুণ-তরুণীদের উপচে পরা ভিড়

প্রকাশিত : ১০:১৭ পিএম, ৬ ডিসেম্বর ২০১৭ বুধবার

বাংলাদেশে আসা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন রোবট সোফিয়াকে দেখতে দর্শনার্থীদের ছিল উপচে পরা ভিড়। আগতদের বেশিরভাগই ছিল তরুণ এবং তরুণী। তবে সব বয়সীদের ভিড়ই দেখা যায়।

ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৭ উপলক্ষ্যে বুধবার দর্শনার্থীদের সামনে আনা হয় মা রোবট সোফিয়াকে। সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেরে বাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। তার প্রস্থানের পর সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয় অনুষ্ঠানস্থল।

গণমাধ্যমের কল্যাণে সোফিয়ার বাংলাদেশ সফরের কথা আগে থেকেই জানত বাংলাদেশের তরুণেরা। এক নজর এই রোবট মানবীকে দেখতে সকাল থেকেই ভিড় জমাতে শুরু করেন তারা। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে তরুণদের ভিড় বাড়তে থাকে। ভিড় রীতিমত জটলায় রুপ নেয়।

প্রধানমন্ত্রীর প্রস্থান শেষে গেট খুলে দেওয়া হলে হুড়মুড় করিয়ে ঢুকতে থাকে তারা। কনফারেন্স সেন্টারের হল অব ফেম-এ কে কার আগে ঢুকতে পারবে তার অলিখিত প্রতিযোগিতা চলে তাদের মাঝে। হুড়োহুড়িতে নিচতলা থেকে দ্বোতলায় ওঠার স্বচালিত সিড়ির কাচ ভেঙ্গে যায়। তারপরেও অনেকেই স্থান সংকুলান না হওয়ায় প্রবেশ করতে পারেনি। কয়েক হাজার সৌভাগ্যবানই শুধু সেখানে স্থান পায়।

সোফিয়া দর্শন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রনি বলেন, "নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। এমন এক সৃষ্টি আর কোনদিন দেখতে পারব কী না সন্দেহ"।

তবে সোফিয়াকে দেখতে তরুণদের পাশাপাশি তরুণীদের আগ্রহও ছিল চোখে পড়ার মত। অনেক তরুণীই একাই অথবা প্রিয়জনের সঙ্গে চলে আসেন সোফিয়া দর্শনে।

বাবার সঙ্গে সোফিয়া দেখতে আসা ইডেন কলেজের ছাত্রী লোপা বলেন, "ভাল লাগছে যে এমন এক আশ্চর্য রোবট একজন নারীর আদলে করা হয়েছে। এটা আমাদের নারীদের আরও উজ্জীবত করবে। সোফিয়াকে দেখতে পেরে খুবই ভাল লাগছে"।

তবে আয়োজকদের অব্যবস্থাপনার সমালোচনা করেন অনুষ্ঠানে আসা অনেক দর্শনার্থী। ডিজিটাল অনুষ্ঠানে এমন এনালগ অব্যবস্থাপনা মেনে নিতে পারেননি অনেকেই। প্রচণ্ড ভিড় এবং গাদাগাদি অবস্থায় প্রদর্শনী ঘুরে দেখতে হয় সবাইকে। সবথেকে বিব্রতকর অবস্থায় ছিলেন নারী দর্শনার্থীরা। প্রচণ্ড ভিড়ে তাদের অবস্থা ছিল নাভিশ্বাস।

দিনের শুরুতেই আয়োজক পক্ষের লোকদের সঙ্গে আগত দর্শনার্থীদের বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রুপ নেয়। আয়োজক কর্তৃপক্ষ অনেক স্বেচ্ছাসেবক এবং নিরাপত্তারক্ষীদের উগ্র আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকেই। উত্তেজিত দর্শনার্থীদের একাংশ তখন সম্মেলন কেন্দ্রে ভাংচুর করে। এসময় তারা আয়োজকদের প্রতি তাদের ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

হোম ইকোনমিক্স কলেজের ছাত্রী ফাবিয়া মনিসা বলেন, "এমন এক অনুষ্ঠানে আমরা আরও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা আশা করেছিলাম। মেয়েদের জন্য আলাদা প্রবেশপথ বা অন্য কোন ব্যবস্থা করা উচিত ছিল।"

অনেকেই সোফিয়াকে অল্প সময় দর্শকদের সামনে আনার সমালোচনা করেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র লিমন বলেন, "আমরা এত এত মানুষ। আমাদের সবারই তো খুব আগ্রহ ছিল। রীতিমত যুদ্ধ করে ঢুকতে ঢুকতেই দেখি সোফিয়া নেই। আরও কিছু সময় রাখলে আমরা সবাই দেখতে পারতাম"।

অনেকে আবার বলেন সোফিয়াকে দর্শকদের আরও কাছে আনা উচিত ছিল। সিটি বিশ্ববিদালয়ের ছাত্র নূর বলেন, "সোফিয়াকে যদি আমাদের কারও কাছে আনা হত, আমার মত বিজ্ঞানের ছাত্রদের মধ্যে আগ্রহের মাত্রা বেড়ে যেত। এমন ডিজিটাল অনুষ্ঠানে এমন ম্যানুয়াল অব্যবস্থাপনা মানা যায় না"।

উল্লেখ্য, আজ থেকে শুরু হয়ে আগামী ৯ তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে এ অনুষ্ঠান।

 

//এসএইচএস//এসএইচ