ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ইবতেদায়ী শিক্ষকদের আমরণ অনশন কাল থেকে

প্রকাশিত : ০২:০৬ পিএম, ৮ জানুয়ারি ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ০২:০৭ পিএম, ৮ জানুয়ারি ২০১৮ সোমবার

মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড থেকে নিবন্ধন পাওয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলো জাতীয়করণের দাবিতে  আন্দোলনরত শিক্ষকরা আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে আমরণ অনশন শুরু করবেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে অষ্টম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন ও সরকারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েও কোনো ঘোষণা না আসায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শিক্ষকরা। রোববার রাতে শিক্ষক নেতাদের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। আর ঘোষণা দেওয়া হয় আজ সকালে।

বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির ব্যানারে চলমান অবস্থান কর্মসূচিতে আজ সমিতির সভাপতি কাজী রুহুল আমিন চৌধুরী বলেন, আমাদের ৮ দিনের অবস্থান কর্মসূচি পালন করেও সরকারের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাইনি। আমাদের আর পেছনে ফেরার পথ নেই। আমরা কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের নতুন প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছি। গতকাল রাতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে আমরা আমরণ অনশনে যাব।

শিক্ষক সমিতির মহাসচিব কাজী মোখলেসুর রহমান বলেন, সরকারের কাছে আমাদের দাবি, বেতন-ভাতার ব্যবস্থা করে দিন। আমরা বৈষম্যের শিকার কেন হব। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এতো সুযোগ দিচ্ছেন। আর আমরা বেতনও পাচ্ছি না। আমরা কী দেশের নাগরিক না?

এদিকে আজ প্রেস ক্লাবের সামনে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে অন্যদিনের তুলনায় উপস্থিতি বেড়েছে। বিভিন্ন ধরণের দাবি সংবলিত ফেস্টুন গলায় ঝুলিয়ে শিক্ষকেরা এই কর্মসূচি পালন করছেন।

বছরের শুরুর দিন ১ জানুয়ারি থেকে আন্দোলনকারী এ শিক্ষকরা বলছেন, সারা দেশে রেজিস্ট্রেশনকৃত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা ১৮ হাজার ১৯৪টি। তবে এখন চালু আছে ১০ হাজারের মতো। এগুলোতে মাদ্রাসাশিক্ষার প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। এসব মাদ্রাসায় শিক্ষক আছেন প্রায় ৫০ হাজার। এর মধ্যে ১ হাজার ৫১৯টি মাদ্রাসার ৬ হাজার ৬৭৬ জন শিক্ষক সরকার থেকে কিছু ভাতা পান। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষকেরা মাসে আড়াই হাজার টাকা এবং সহকারী শিক্ষকেরা পান ২ হাজার ৩০০ টাকা। অন্যরা সরকার থেকে কোনো বেতন-ভাতা পান না। সরকার থেকে বেতন-ভাতা না পাওয়ায় তাদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। এ জন্য তারা দাবি করছেন রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে যেভাবে সরকারি করা হয়েছে, তাদেরও সেভাবে জাতীয়করণ করতে হবে।

কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছেন পিরোজপুর জেলার রাঙ্গাবালী থানার গাঙ্গিপাড়া সতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষিকা ইশরাত জাহান। তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আমি এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করে আসছি। প্রতিবছরই ভাবি আমাদের প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হবে। কিন্তু অনেকবার অনেক পক্ষ থেকে আশ্বাস পেয়েও তা শেষ পর্যন্ত করা হয়নি। আমার প্রতিষ্ঠানে ৩ হাজার ছাত্র-ছাত্রী। সন্তান-পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে আছি আমরা। আমাদের তেমন জায়গা জমিও নেই যে তাই চাষবাস করে চলবো। সরকার একটু সদয় হলে আমাদের জীবন রক্ষা পায়।

আরকে / এআর