ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

অষ্টম শ্রেণীতে বাধ্যতামূলক হচ্ছে কারিগরি শিক্ষা

তবিবুর রহমান

প্রকাশিত : ০৭:০১ পিএম, ১৫ এপ্রিল ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ১০:৫০ এএম, ২৩ এপ্রিল ২০১৮ সোমবার

দেশে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির লক্ষে আগামী বছর অষ্টম শ্রেণী থেকে বাধ্যতামূলক কারিগরি শিক্ষা চালু করতে যাচ্ছে সরকার।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, কর্মমুখী শিক্ষার প্রসার ঘটাতে এবং দেশের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডকে (জনসংখ্যার বোনাসকাল) সঠিকভাবে কাজে লাগতে এই পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার। তারা বলছেন দেশের বিভিন্ন স্থানে সিম্পোজিয়াম, সেমিনার এবং আলোচনার মাধ্যমে নানা পর্যলোচনা করে এই শিক্ষার কারিকুরাম নির্ধারণ করা হবে।

কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদেরকে অষ্টম শ্রেণীতে সাধারণ পাঠক্রমের পাশাপাশি কারিগরি বিষয় পড়ানো হবে। এরা চাইলে নবম ও দশম শ্রেণিতে কারিগরির বিশেষায়িত শিক্ষা নিতে পারবে।

এছাড়া যেসব উপজেলায় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় নেই কিংবা আশপাশে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, টেক্সটাইল কিংবা ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট নেই সেসব উপজেলায় কারিগরি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সরকার। এমনকি এসব বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুতের সহজলভ্যতা, জনবহুল এলাকা ইত্যাদি বিষয়কে বিবেচনায় নেওয়া হবে। কম্পিউটার, বাংলা, ইংরেজি, জীববিজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান, সাধারণ বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, অংক, ধর্ম, শারীরিক শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষার দু’একটি বিষয় বাধ্যতামূলক করা হবে।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী বছর প্রথামিকভাবে অষ্টম শ্রেণিতে কারিগরি শিক্ষা ব্যধতামূলক করা হবে। তবে এসএসসি ও এইচএসসির মত বিভাগীয়ভাবে পরীক্ষা নেওয়া হবে না। স্কুলে ক্লাস পরীক্ষা ও বার্ষিক পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের মেধা যাচাই করে সনদ দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, আগামী বছর অষ্টম শ্রেণি থেকে একটি বা দুইটি বিষয় কারিগরি শিক্ষা ব্যধত্যামূলক করা হবে। বিষয়টি পাবলিক পরীক্ষায় বাধ্যতামূলক করা হবে না। ক্লাস পরীক্ষাটা বাধ্যতামূলক করা হবে। যেমন শারীরিক শিক্ষা, ক্রীড়া, কালচার, সংগীত, চিত্রকলা এগুলো যেমন আমাদের জন্য বাধ্যতামূলক কিন্তু তেমনি কারিগরি শিক্ষাও বাধ্যতামূলক করা হবে। এজন্য আমরা সব মানুষের মতামত নিতে একটি প্রস্তাবনা কপি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। সবার মতামত দেওয়া জন্য ১৫ দিন সময় দেওয়া হবে সেই সময়ের মধ্যে এখানে সবাই মতামত প্রকাশ করতে পারবেন। সবার মতামতের ভিত্তিতে আমরা একটি বিষয় সিন্ধান্ত নেবো। এখানে থেকে আমাদের যে অভিজ্ঞতা হবে এর আলোকে আমরা আগামীতে আরও ভালো কিছু করতে পারব বলে আশা করছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আলমগীর বলেন, বর্তমানে নবম শ্রেণি থেকে কারিগরি শিক্ষা চালু রয়েছে। দক্ষ জনশক্তি গড়তে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই। এটা বিবেচনায় রেখে অষ্টম শ্রেণি থেকে কারিগরি শিক্ষা চালু করা হচ্ছে। এখন থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষা নিতে পারবেন। তিনি বলেন, আগামী বছর থেকে আমার অষ্টম শ্রেণিতে কারিগরি শিক্ষা প্রথম চালু করতে যাচ্ছি। আশা করছি সরকারের এই উদ্যোগ দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। দক্ষ জনশক্তিই পারে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বাড়িয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখতে।

কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতায় স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট (step) কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে চাকরির বাজারের কোনো সর্ম্পক নেই। যে কারণে পড়ালেখা শেষ করে অনেকেই চাকরি পাচ্ছে না। বিষয়টি ‍উপলব্ধি করে সরকার প্রাথমিকে কারিগরি শিক্ষার প্রসার করতে যাচ্ছে। এটি দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

/এআর/