ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

রমজানে সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

প্রকাশিত : ০৯:৩৬ পিএম, ১১ মে ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ০১:২৪ পিএম, ১৭ মে ২০১৮ বৃহস্পতিবার

পবিত্র মাহে রমজান কড়া নাড়ছে দরজায়। ইতোমধ্যে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ রোজা পালনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করছে। তবে অপরিকল্পিত খাদ্যভ্যাসের কারণে কিছু মানুষের রোযা রাখলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই রমজানে ইফতার ও সেহেরীতে আহারের সময় খাবার গ্রহণে সর্তক হতে হবে। সম্প্রতি একুশে টিভি অনলাইনকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সোহেলা আখতার এমনটাই জানিয়েছেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন একুশে টিভি অনলাইন প্রতিবেদক তবিবুর রহমান। তার কথায় উঠে রোযা কি কি ধরনের খাবার গ্রহণ করা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।

একুশে টিভি অনলাইন: রামজান মাসে কি ধরনের খাবার গ্রহণ করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?

ড. সোহেলা আখতার: আমারা অন্য সময় যা খাই। রমজান মাসে তাই খেলে সমস্যা হতো না। কিন্তু আমার রমজানের সময় বিশেষ খাবার গ্রহণ করি বিধায় আমাদের বিশেষ কিছু সমস্যা দেখা দেয়। ইফতারের প্রথম অর্থাৎ রাতের প্রথমার্ধে দিনের খাবারে অধিকাংশটুকু খেয়ে ফেলি। অন্য সময় ৬ বারের খাবার রমজান মাসে তিনবারে খেতে হয়। যে কারণে বেশ কিছু সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য ইফতার ও সাহরি খাবার তালিকা তৈরি করে নেওয়া ভালো।

ইফতারকে কেন্দ্র করে ফুটপাতে, হোটেলে, খাদ্যসামগ্রীর দোকানে নানা স্বাদের ও গন্ধের ইফতার বিক্রির পসরা বসে। এর মধ্যে আছে বিভিন্ন ধরনের শরবত, ফলমূল, ভাজাপোড়া ও অন্যান্য ভারী খাবারও এসব খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো। ইফতারে নিজের বাসাই তৈরি করা খাবার গ্রহণ করা ভাল হবে।

একুশে টিভি অনলাইন: ইফতারের সময় কি কি খাবার গ্রহণ করা ভালো ?

ড. সোহেলা আখতার : ইফতারের বেশি বেশি তাজাফল খেতে হবে। শরবত বা ডাবের পানি, কাঁচা ছোলা, কম তেলে ভাজা ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি অথবা আলুর চপ বা যে কোনো একটি তেলে ভাজা মুড়ি অথবা চিড়া এবং ফল খাওয়া যেতে পারে। তবে যেদিন হালিম অথবা খিচুড়ি খাওয়া হবে সেদিন বেসনের বা ডালের তৈরি ভাজা খাবার এবং মুড়ি বা চিড়া বাদ দেওয়া ভালো। আবার নুডলস অথবা ফ্রায়েড রাইস খেলেও মুড়ি অথবা চিড়া বাদ দেওয়া উচিত। রমজানের সময় ইফতারিতে খেজুর একটি বিশেষ উপাদান হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রতিদিন অন্যান্য খাবারের সঙ্গে একটি বা দুটির বেশি খেজুর খাওয়ার ভালো। কারণ, এতে ক্যালরি ও শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে। যদিও পর্যাপ্ত লৌহ খেজুর থেকে পাওয়া সম্ভব।

একুশে টিভি অনলাইন : ইফতারে পর সন্ধ্যা রাতের স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা যেতে পারে।

ড.সোহেলা আখতার: ইফতার শেষ করে নামাজ পরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে সন্ধ্যার খাবার গ্রহণ করা ভাল। অনেকেই আছেন ইফতার করলে সন্ধ্যা রাতে আর খাবার গ্রহণ করে না এটা ঠিক নয়। অল্প করে হলেও খাবার গ্রহণ করা উচিত। তা না হলে নামাজের মনোযোগ ব্যাহত হয়। সন্ধ্যা রাতের  খাবারে ছোট মাছও রাখা যেতে পারে।

একুশে টিভি অনলাইন: সেহরিতে কি কি খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভাল ?

ড. সোহেলা আখতার : সেহরিতে পেট ভরে না খাওয়ায় ভালো। সেহরিতে কম খাবার খেয়ে রোযা রাখা উচিত। সেহরিতে শাক কম খেয়ে মুরগি মাংস, ডাল খাওয়া ভাল। সেহরির সময় না খেলে আমাদের দেহের বিপাকক্রিয়ায় বেশ পরিবর্তন আসতে পারে। এতে গ্লুকোজ ক্ষয় বেশি হয় বলে ক্লান্তি আসে। অল্প হলেও কিছু  খাওয়া দরকার। ঝাল কম  থেকে পারে ডিম, মুরগির মাংস খাওয়া যেতে পারে। সেহরিতে মাংস ও ডিম খাওয়া সুবিধাজনক। এই সময়টাতে ঘন ডাল খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া ছোট-বড় সবার জন্যই এক কাপ দুধ খাওয়া উচিত। কারণ, খাবারে চাহিদা মতো প্রোটিন বা আমিষ না থাকলে উপবাসের সময় শক্তির ঘাটতি দেখা দেবে।

 টিআর/টিকে