ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

তিন দিন মৃত সন্তান আগলে রাখল মা তিমি

প্রকাশিত : ০২:৪৪ পিএম, ২৯ জুলাই ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ১১:৫০ এএম, ১ আগস্ট ২০১৮ বুধবার

দীর্ঘ সতেরোটা মাস, ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করেছিল সে। কবে মা হবে, কবে সন্তানের মুখ দেখবে! গত মঙ্গলবার সকালে ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ভিক্টোরিয়ার কাছে সন্তানের জন্ম দেয় ‘জে৩৫’ নামে বিপন্নপ্রায় ‘কিলার হোয়েল’টি। মেয়ে হয়েছিল। গত তিন বছরে ওই তিমি পরিবারে প্রথম জীবিত সন্তানের জন্ম দিয়েছিল জে৩৫ (সংরক্ষণবিদরা তাই বলছেন)। তাই আনন্দের সীমা ছিল না। জে৩৫ ও তার সদ্যোজাত সন্তানকে ঘিরে ছিল পরিবারের সবাই। সব কিছু একদম ঠিক ছিল।

কিন্তু হঠাৎই নড়াচড়া বন্ধ করে দেয় জে৩৫-এর সন্তান। এক জন মাকে সব চেয়ে ভয়াবহ যে পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হতে পারে, সেটাই হয়েছিল। তৈরি ছিল না জে৩৫। মাত্র কয়েকটা ঘণ্টা চোখের সামনে মারা গিয়েছিল তার সদ্যোজাত সন্তান। কিছু করতে পারেনি সে।

‘সেন্টার ফর হোয়েল রিসার্চ অন স্যান জুয়ান আইল্যান্ড’-এর প্রতিষ্ঠাতা তথা বিজ্ঞানী কেন ব্যালকোম্ব বলেন, ‘এর পরের দৃশ্যগুলো চোখে দেখা যায় না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে গেছে, সন্তানকে মুখে নিয়ে সাঁতরে যাচ্ছে জে৩৫।’ ঘণ্টার হিসেব ক্রমে দিন ছুঁয়েছে। বৃহস্পতিবারও দেখা গেছে, মৃত সন্তানকে কিছুতেই কাছ ছাড়া করছে না সে। ব্যালকোম্বের কথায়, ‘এমন নয় যে এ ঘটনা আগে দেখা যায়নি। কিন্তু এত দীর্ঘ সময়, এই প্রথম দেখলাম।’

সমুদ্রবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার থেকে তিন দিনে নিজের দলের সঙ্গে ভ্যাঙ্কুভার গিয়ে, সেখান থেকে স্যান জুয়ান আইল্যান্ড ফিরেছে জে৩৫। প্রতি দিন গড়ে ৬০-৭০ মাইল সাঁতরে পার করেছে। আর গোটা সময়টা তার সন্তানের ৪০০ পাউন্ডের দেহটা ভাসিয়ে রেখেছে সে।

‘ব্যাপারটা সামলানো জে৩৫-এর জন্য খুব একটা সহজ নয়,’ বলেন ‘ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন সেন্টার ফর কনজ়ারভেশন বায়োলজি’র তিমি বিশেষজ্ঞ ডেবরা গিলস।

বৃহস্পতিবার একটি নৌকা থেকে জে৩৫-এর উপর নজর রেখে গিয়েছেন ডেবরা। তার কথায়, ‘সন্তানের মৃতদেহ যত বার ডুবে যাচ্ছে, ওকে দেহটা তুলে আনতে হচ্ছে। মাথার উপর সন্তানের দেহটা নিয়ে সাঁতরে চলেছে সে। এইভাবে তিন তিনটা দিন! সন্তান হারানোর শোক সব প্রাণীদেরই ক্ষেত্রেই একই রকম।’

সূত্র: আনন্দবাজার

একে//