ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

এইচআইভি দূর করবে জিএমও ধান!

প্রকাশিত : ০৩:৩৪ পিএম, ৪ আগস্ট ২০১৮ শনিবার

এইচআইভি এইডস রোগীদের চিকিৎসায় অভিনব এক উপায় উদ্ভাবন করেছেন একদল গবেষক। তা হলো জেনেটিক্যালি মডিফাইড বা জিএমও ধান।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং স্পেনের গবেষকরা মিলে নতুন জিএমও ধান উদ্ভাবন করেছেন এইচআইভি এইডসের উপসর্গ মোকাবেলা করার জন্য। বিশেষ করে যেসব দেশে এইচআইভির ঔষধ সহজলভ্য নয়, সেসব দেশে এই ধান বিশেষ উপকারে আসতে পারে। তাদের এ গবেষণা প্রকাশিত হয় প্রসিডিংস অব দ্যা ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস জার্নালে।

বিশ্বের বিভিন্ন ফসলের জিএমও প্রকরণ রয়েছে। এর আগে পুষ্টিহীনতা এবং পরিবেশ বিপর্যয় মোকাবেলা করতে সক্ষম জিএমও ধান উদ্ভাবন হয়েছে। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে বিশ্বে ৩ কোটি ৬৯ লাখ এইচআইভি এইডস রোগী ছিল। এর মাঝে ২ কোটি ৫৭ লাখই আফ্রিকার বাসিন্দা। ১৯৮০ এর দশকে মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছিল এই রোগটি। তখনকার তুলনায় এর সংক্রমণ কিছুটা কমে গেলেও আশঙ্কাজনক হারে নতুন করে বাড়ছে এইচআইভি সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা।

বর্তমানে এই রোগ নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন ওষুধ এবং টিকা পরীক্ষাধীন রয়েছে। তবে বর্তমানে যৌনশিক্ষার প্রসার এবং মুখে খাওয়ার ওষুধ ছাড়া এই রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারের কোনো উপায় নেই।

এইডসের ইতিহাসে মাত্র একজন রোগী পুরোপুরিভাবে সুস্থ হতে পেরেছেন। অন্য রোগীরা একধরণের অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল ওষুধ খান, যা শরীরের ভেতরে এইডস ছড়িয়ে যাওয়া রোধ করে। সঠিক চিকিৎসা করা হলে রোগী লম্বা ও সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন।

সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, এসব ওষুধ সবার জন্য সহজলভ্য নয়। এ কারণেই গবেষকরা এইচআইভি রোগীদের জন্য বিশেষ ধান উদ্ভাবন করেন। তাদের মতে, যেসব রোগী ওষুধ কেনার সুযোগ পাচ্ছে না, তাদের জন্য সহজলভ্য এবং সস্তা সমাধান হলো এই জিএমও ধান।

কী করে এইচআইভি নিয়ন্ত্রণে রাখবে এই ধান? এসব ধানের বীজে রয়েছে তিনটি প্রোটিন- মোনোলোকাল অ্যান্টিবডি ২জি১২, লেকটিনস গ্রিফিথসিন এবং সায়ানোবাইরিন-এন। এগুলো এইচআইভি শরীরের ভেতরে ছড়ানো রোধ করে। এই ধান বেটে ত্বক প্রয়োগ করা যায় ক্রিমের মতো, এতে তা অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল ওষুধের মতোই কাজ করে। এসব ধানের উৎপাদনে খরচ খুবই কম।

এই ধান জনসাধারণের জন্য সহজলভ্য করে তুলতে অবশ্য বেশ কিছুটা সময় লাগবে। বিশেষ করে অনেকের মাঝেই জিএমও ফসল নিয়ে একটা ভীতি কাজ করে। এই ভীতি কাটিয়ে উঠতে হবে। এই ফসলের কোনো খারাপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, সেটাও প্রমাণ করতে হবে।

কেএনইউ/ এআর