ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

আ. লীগে যোগ দেওয়ার প্রস্তাবেও ‘রাবিশ’ বলেছিলেন মুহিত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:২৬, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

‘রাবিশ’ শব্দটি শুনলেই অর্থমন্ত্রী এম এ মুহিতের কথা মনে পড়ে। এ শব্দটি তার মুখ থেকেই ভালো শোনায়। নিজের অসন্তোষ প্রকাশে প্রায়ই ‘রাবিশ’ শব্দ ব্যবহার করতে দেখা গেছে তাকে। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও রয়েছে। নতুন তথ্য হচ্ছে, আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার প্রস্তাবেও ‘রাবিশ’ বলেছিলেন মুহিত।
প্রায় দুই দশক আগের সেই ঘটনা প্রকাশ্যে এনেছেন তারই ছোট ভাই ড.  এ কে আব্দুল মোমেন। বড় ভাইয়ের স্পষ্টবাদিতার কথা উল্লেখ করে মোমেন বলেন, তিনি প্রায় সময়ই ‘রাবিশ’ শব্দটি বলে থাকলেও তিনি কারও পেছনে কোনো কথা বলেন না, যা বলেন সামনাসামনি বলেন।
রোববার রাজধানীর বারডেম হাসপাতাল মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) আমাকে বললেন, মুহিত সাহেবকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিতে। আমি তাকে বললাম, আমার কথা তো তিনি শুনবেন না। আপনি বলেন। কিন্তু নেত্রী আমাকেই বলতে বললেন। আমি উনাকে বললাম আওয়ামী লীগে যোগ দিতে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে এটাকে ‘রাবিশ’ বলে উড়িয়ে দিলেন। বললেন, ‘নো’।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন এম এ মুহিতের ছোট ভাই আব্দুল মোমেন। মুহিতের আওয়ামী লীগে যোগদানের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে আব্দুল মোমেন বলেন, ১৯৯২, ৯৩ সালের দিকে তিনি লিখেছিলেন ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ কী ধরনের হবে, কী ধরনের গুচ্ছ গ্রাম তৈরি হবে- এগুলো অত্যন্ত নিখুঁতভাবে তিনি তুলে ধরেছিলেন। আমি তখন তাকে বললাম, তুমি একটা রাজনৈতিক চরিত্র, তোমার আওয়ামী লীগে যাওয়া উচিত।
প্রথমে তিনি রাগ করলেন, কিন্তু নানাভাবে আমি ‘পুল’ সৃষ্টি করলাম। ভাইবোন, বন্ধু-বান্ধব সবাই যখন বলল, তখন তিনি রাজি হলেন।
২০০১ সালে নির্বাচনে পরাজয় মুহিতের জন্য ‘সবচেয়ে বড় শিক্ষা’ মন্তব্য করে মোমেন বলেন, কারণ তখন সেটা নিয়ে তিনি যেভাবে কাজ করলেন তার কারণে বাংলার মানুষের দেশটাকে আরও জানার একটি পরিবেশের সৃষ্টি হল। তিনি যে কাজটি করতেন, তা খুব উৎসাহের সঙ্গে করতেন।
মুহিতের ডাক নাম শিশু, আর সেকারণেই তার মধ্যে এখনও শিশুচরিত্রও লক্ষণীয় বলে মনে করেন তার ছোট ভাই। মোমেন বলেন, উন্নয়নে অর্মন্ত্রীর মতো এমন একজন হাতিয়ারকে পাওয়ার কারণে আমরা তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে মডেল ইকোনোমি হিসেবে বিকশিত হয়েছি। তার চরিত্র, তার কর্মপ্রবাহ অনুকরণীয়। তিনি যেই কাজটি করেন তাতে লেগে থেকে মন দিয়ে করেন।
বারডেমের এই অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ, অর্থনীতি ও সমাজসেবায় অবদানের জন্য ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম স্মৃতিপদক দেওয়া হয় আবুল মাল আবদুল মুহিতকে।

প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ভাষা আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন মুহিত। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দিয়ে কয়েক দশক তৎকালীন পাকিস্তান ও পরে বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮২-৮৩ সালে তৎকালীন এরশাদ সরকারে অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন মুহিত। ২০০১ সালে নিজের এলাকা সিলেট থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে হেরে যান তিনি। এরপর ২০০৮ সালে সেখান থেকেই ভোটে জিতে আসেন সংসদে, নেন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পরও তাকে অর্থমন্ত্রী করেন শেখ হাসিনা।বর্তমানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনিই বাংলাদেশের পক্ষে জাতীয় সংসদে সর্বোচ্চ বাজেট দেওয়া অর্থমন্ত্রী।
/ এআর /


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি