ঢাকা, বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪

আদনান সামির ওজন কমানোর রহস্য

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫৩, ২১ জুন ২০১৮

মেদ ঝরিয়ে সুস্থ থাকতে কে না চায়! পুরো বিশ্বে অতিস্থূলতা এখন মাথা ব্যথার কারণ। যে পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়ে ওজন কমানোর যুদ্ধে নেমেছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় গায়ক আদনান সামি। ২০০ কিলোগ্রাম থেকে শুরু হয়েছিল যাত্রা। ১৫৫ কিলো ঝরিয়ে আদনান এখন ছিপছিপে, প্রায় মেদহীন। কেমন ছিল আদনানের জার্নি-

২০০০ সালের কথা। ‘মুঝকো ভি তো লিফট কারা দে’-র সঙ্গে নেচে উঠেছিল গোটা দেশ। র‌্যাপ, পপের বাজারে একটু অন্যরকম তাজা হাওয়া এনে দিয়েছিলেন আদনান। সুরেলা কণ্ঠের ওই গায়ক প্রথম ঝলকেই মন কেড়েছিলেন লক্ষ লক্ষ সঙ্গীত প্রেমীর। একে একে আরও অ্যালবাম, আরও খ্যাতি। মোটাসোটা, গোলগাল চেহারার গায়কের কিন্তু তাতে মন ভরেনি। কারণ একটাই তার অতিস্থূলতা।

নিজের চেহারা নিয়ে নানা ভাবে ট্রোলড হতে হয়েছিল আদনানকে। একটা সময় প্রবল মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলেন গায়ক। ‘তেরা চেহেরা’, ‘উড়ি উড়ি’, ‘ইসক হোতা নেহি’ গান তখন লোকের মুখে মুখে। ক্যারিয়ারের চূড়ান্ত সাফল্যও তাকে শান্তি দিতে পারেনি। প্রিয়জনের কাছ থেকেও নাকি আঘাত পেয়েছিলেন তিনি।

এক সাক্ষাৎকারে আদনান বলেছিলেন, ‘আমি ওবেসিটিতে আক্রান্ত মানে এই নয় আমার একটা সুন্দর মন নেই। শুধু পর্দায় আমাকে সুন্দর দেখায় না।’

২০০৫-০৬ সালে হঠাৎই উধাও হয়ে যান আদনান। গুজব ছড়ায়, তিনি নাকি লাইপোসাকশন করাতে গিয়েছেন। তবে, সব জল্পনায় জল ঢালেন গায়ক নিজেই। লাইপোসাকশন নয়, বরং চিকিৎসা করাতেই গিয়েছিলেন বলে জানান আদনান। অতিরিক্ত মেদের কারণে শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন তিনি। চিকিৎসকেরা জানান, দ্রুত ওজন না ঝরালে আর হয়তো মাস ছ’য়েক বাঁচবেন তিনি।

চিকিৎসকের পরামর্শ মতোই শুরু হয় মেদ নিধন অভিযান। সঠিক ডায়েট ও শরীরচর্চার জন্য নামী নিউট্রিশনিস্টের দ্বারস্থ হন তিনি। উড়ে যান হিউস্টন। তবে ওই অভিযানে তিনি একা ছিলেন না। পরিবার ও বন্ধুরাও তার পাশে ছিলেন।

ওজন ঝরানোর প্রক্রিয়া মোটেই সহজ ছিল না তার। আদনানের কথায়, ‘বিষয়টা ৮০ শতাংশ মানসিক এবং ২০ শতাংশ শারীরিক’। ডায়েট শুরুর আগের দিন নাকি কব্জি ডুবিয়ে পছন্দের খাবার ম্যাশড পটেটো, প্রচুর মাখন মাখানো স্টেক এবং বড়সড় চিজ কেক দিয়ে ভুরিভোজ সেরেছিলেন তিনি। তবে, ঠিক তার পর দিন থেকেই শুরু করেছিলেন লো-ক্যালরি এবং হাই-প্রোটিন ডায়েট।

প্রথমেই তার খাদ্যতালিকা থেকে ভাত, রুটি এবং জাঙ্কফুড ছেঁটে ফেলেন নিউট্রিশনিস্ট। সেখানে পাকাপাকি ভাবে জায়গা করে নেয় স্যালাড, মাছ এবং সেদ্ধ ডাল।

আদনান বলেন, ‘নিউট্রিশনিস্ট আমাকে বলেন আগে মন থেকে খাই খাই বন্ধ কর। তার পর ডায়েট মেনে চল। মনকে সংযত করলে তবেই শরীর কথা শুনবে।’

আদনানের দিন শুরু হতো এক কাপ চিনি ছাড়া চা দিয়ে। লাঞ্চে সব্জির স্যালাড এবং মাছ। রাতে শুধু সেদ্ধ ডাল অথবা চিকেন। তা ছাড়া, খুচরো খিদে মেটাতে বাড়িতে তৈরি পপকর্ন, নুন-মাখন ছাড়া। সঙ্গে চিনি ছাড়া ড্রিঙ্কস।

সঠিক ডায়েট মেনে ৪০ কিলোগ্রাম ওজন ঝরানোর পরেই জিমে যাওয়ার অনুমতি পান আদনান। সেখানে ট্রেডমিল এবং হালকা ফ্রি-হ্যান্ড দিয়েই শুরু হয় তার শারীরিক কসরৎ। কয়েক মাস পর ট্রেনার প্রশান্ত সবন্ত তার জন্য ওয়েট ট্রেনিং-এর রুটিন বানিয়ে দেন। সপ্তাহে ছ’দিন মেপে ফিটনেস ট্রেনিং শুরু করেন গায়ক।

প্রতি মাসে ১০ কিলোগ্রাম করে ওজন ঝরিয়েছেন আদনান। ১৬ মাসের মধ্যে ১৫৫ কিলো ওজন ঝরিয়ে এখন তার ওজন ৬৫ কিলোগ্রাম। ২০১৩ সালে ফের যখন পর্দায় ধরা দেন গায়ক, গোটা দেশ তার নতুন লুক দেখে চমকে ওঠে। মেকওভারের পর আদনান নিজেও খুব খুশি।

গায়ক বলেন, ‘আগে নিজের পায়ের পাতা দেখতে পেতাম না। আর এখন অনেক ফিট এবং ঝরঝরে লাগে। মানসিক অবসাদও চলে গেছে।’

সূত্র : আনন্দবাজার

এসএ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি