ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪

ডয়চে ভেলের বিশ্লেষণ

ইইউ সংস্কার ইস্যুতে মেরকেল-মাক্রোর দূরত্ব বাড়বে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২৩:১৭, ২২ এপ্রিল ২০১৮

 

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সংহতি ধরে রাখার মূল শক্তি জার্মানি ও ফ্রান্স। কিন্তু ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোন দ্রুত সংস্কার কর্মসূচির সঙ্গে তাল মেলাতে গেলেই সমস্যায় পড়বেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল।

দীর্ঘ ১২ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ক্যারিয়ারের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছেন জার্মান চ্যান্সেলর। অন্যদিকে সবেমাত্র রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেছেন মাক্রোন। প্রাণশক্তিতে ভরপুর মাক্রোন চান অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ জার্মানি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর পাশে থাকুক। সেই তালিকায় অবশ্য ফ্রান্সও আছে।

২০০৫ সাল থেকে মেরকেল তার দলকে কেন্দ্র থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ ও পুরুষদের জন্য বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ নীতি থেকে সরে এসেছেন। শরণার্থীদের আগমনের মধ্যে উদার মানসিকতা দেখিয়ে দরজা উন্মুক্ত রেখেছেন। ব্যয় সংকোচনের পরামর্শ দিয়েছেন ইইউর অন্যান্য দেশকে। ইইউর সমস্যা দূর করতে আরও একদফা তার ক্ষমতায় থাকা দরকার বলেও বারবার ইঙ্গিত দিয়েছেন মেরকেল। আর এভাবেই মেরকেল নেতৃত্ব দিতে চান, যা তিনি শুরু থেকেই করে এসেছেন।

এখন সেখানেই সমস্যা। নতুন এক অভিন্ন ইউরোপ গঠনের ব্যাপারে মাক্রোনের রয়েছে গঠনমূলক স্পষ্ট এক ভাবনা। এটি মেরকেলের নেই। মাক্রোন এক ধরনের অর্থনৈতিক সাম্য চান যাতে ইউরোপের ধনী দেশগুলো দরিদ্র দেশগুলোকে সাহায্য করবে। মেরকেলের রক্ষণশীল দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) মাক্রোনের এই ভাবনার তীব্র বিরোধিতা করে আসছে। এমনকি সামাজিক গণতন্ত্রী দলের অর্থমন্ত্রী ওলাফ শুলজও এ ক্ষেত্রে মেরকেলকেই সমর্থন করেছেন।

ইইউর সংস্কারের প্রশ্নে মেরকেল বরাবরই তার দলের চেয়ে বেশি উদার। ২০০৫ সালে গ্রিসকে তৃতীয়বার আপৎকালীন ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে জার্মানির পার্লামেন্টে ভোট হয়। সে সময় প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেন ৬৩ রক্ষণশীল সদস্য। বলা বাহুল্য, এই মুহূর্তে এ ধরনের বিদ্রোহ জার্মানির জোট সরকারের পতন ডেকে আনতে পারে। ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন চ্যান্সেলর সেই পরিস্থিতি এড়াতেই চাইবেন।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমতার কেন্দ্রে পরিবর্তন আসছে। মেরকেল বুঝতে পারছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে তার প্রভাব ক্রমশ কমছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মাক্রোনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। মাক্রোনের পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যাওয়ার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতাও জার্মান পার্লামেন্টে মেরকেলের নেই। তাছাড়া ইইউ নিয়ে সন্দিহান জনতারও তাতে সমর্থন থাকবে না।

এই পরিস্থিতিতে মাক্রোন ক্রমশ চাপ বাড়াচ্ছেন। বার্লিন তার পরিকল্পনায় কী মত দেয়, সেটা জানার জন্য তিনি এখনও পর্যন্ত ধৈর্যসহকারে অপেক্ষাও করছেন। তবে একটা কথা পরিস্কার, ভবিষ্যতের নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে ইইউকে নেতৃত্ব দিতে চলেছেন মাক্রোন। তাই মেরকেলের পক্ষে তাকে অনুসরণ করা বা অনুসরণ করতে বাধ্য হওয়া ছাড়া কোনও পথ থাকবে না।

সূত্র: ডয়চে ভেলে

একে/ এমজে


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি