ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪

একুশের প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০০:১১, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ০৮:২৮, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল ​দিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে সর্বস্তরের মানুষ। ছিলেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতাসহ বিশিষ্ট জনেরাও।

রাত ১২টা ১ মিনিটেই ভাষা শহিদদের প্রতি প্রথম শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এর পরপরই শহীদ মিনারের বেদিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে দুজনই সেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেন।

এর আগে ঘড়ির কাঁটায় যখন মঙ্গলবার রাত ১১টা বেজে ৫৩ মিটি ঠিক তখনই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি প্রবেশ করে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে। এ সময় মাইকে বেজে ওঠে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর কালজয়ী গান, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি..’। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান। এ সময় উপাচার্যের সঙ্গে ছিলেন প্রোউপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমেদসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও শিক্ষকমণ্ডলী উপস্থিত ছিলেন।

আর ১১ টা ৫৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ গাড়িবহর  শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে। রাষ্ট্রপতিকে এমসয় স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান। এর পর রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে শহিদ বেদীর দিকে এগিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী।

ঘড়ির কাঁটায় ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গেই জাতির বীর সন্তানদের অমর স্মৃতির উদ্দেশ্যে শহীদ বেদিতে প্রথমে ফুল দেন রাষ্ট্রপ্রধান মো. আবদুল হামিদ। বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। এরপর ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সরকার প্রধান শেখ হাসিনা। তারা ফুল দিয়ে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এরপর শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হিসেবে দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শহীদ বেদিতে ফুল দেন। তারপর ফুল দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া ও বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ।

এরপর প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে নিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। তিন বাহিনীর প্রধান, পুলিশ প্রধান, কূটনীতিকদের পর সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, অ্যাটর্নি জেনারেলও ফুল দেন প্রথম প্রহরে।

প্রধানমন্ত্রীর পুষ্পমাল্য অর্পণের পরপরই বিভিন্ন দেশের কূটনীতিবিদ, বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, ছাত্র-শিক্ষকসহ সাধারণ মানুষ সারিবদ্ধভাবে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

মধ্যরাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঘিরে সাধারণ মানুষের ঢল নেমেছে। গোটা এলাকায় সুদৃশ্য আলপনা আঁকা হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ পৃথক বাণী দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী ভাষা শহিদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। একইভাবে তিনি শ্রদ্ধা জানান বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্বদানকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং সকল ভাষা সৈনিকের প্রতি।

আজ ২১ ফেব্রুয়ারি। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাংলা মায়ের সন্তানেরা মাতৃভাষার সম্মান রক্ষার্থে ১৯৫২ সালের এই দিনে বুকের রক্তে রঞ্জিত করেছিলেন ঢাকার রাজপথ। পৃথিবীর ইতিহাসে সৃষ্টি হয়েছিল মাতৃভাষার জন্য আত্মদানের অভূতপূর্ব নজির। দিবসটি উপলক্ষে যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন গোটা জাতি। একুশের প্রথম প্রহরে সারা দেশেই ভাষাসৈনিকদের অবদান ও তাঁদের সংগ্রামমুখর দিনগুলোকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হচ্ছে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তি থেকে সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।

আর/টিকে


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি