ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

কাভার্ডভ্যান হামলায় রক্তাক্ত বার্সেলোনা, নিহত ১৩, আহত ১০০

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:০৮, ১৮ আগস্ট ২০১৭ | আপডেট: ১৭:২৫, ১৮ আগস্ট ২০১৭

স্পেনের নগরী বার্সেলোনার পর্যটন এলাকা লাস রামব্লাসের ব্যস্ততম সড়কে ভিড়ের মধ্যে কাভার্ডভ্যান চালিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক ব্যাক্তি। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। খবর আলজাজিরা ও বিবিসির।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, হামলার সময় প্ল্যাকা কাতালুনিয়া নামে ওই পর্যটন এলাকায় অনেক মানুষ ছিল। এ কারণে বহু হতাহত হতে পারে বলে পুলিশের সূত্র জানিয়েছে। বার্সেলোনার পুলিশ এই হামলাটিকে একটি সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে বিবেচনা করছে।

গত বছর ১৪ জুলাই ফ্রান্সের নিস শহরে বাস্তিল দিবসের উৎসবে যোগ দিতে আসা মানুষের ভিড়ে ট্রাক উঠিয়ে ৮৬ জনকে হত্যার এক বছরের মাথায় একই ধরনের হামলা হল বার্সেলোনায়।  

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, জমায়েতের ওপর ভ্যান উঠিয়ে বেশ কয়েকজনকে আঘাতের পর চালক ও অন্য একজন ব্যক্তি হেঁটে গাড়ি থেকে নেমে একটি রেস্টুরেন্টে গিয়ে ঢোকে। ওই দুই হামলাকারীই সশস্ত্র বলে জানিয়েছে পুলিশ।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লাস রামব্লাস এভিনিউয়ে দ্রুতগতির সাদা ভ্যানটি পথচারীদের উপর উঠিয়ে দিলে অনেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। টম গুয়েলার নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে বলেন, আমি অনেকের আর্তনাদ ও ভাঙাচোরার শব্দ শুনতে পাই। তারপরই দেখি ভ্যানটি রামব্লাসের মাঝ বরাবর এগিয়ে যাচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে জানতে পারি, এটা সন্ত্রাসী হামলা বা এ রকম কিছু একটা।এটা মোটেই গতি কমায়নি। এটা ভিড়ের মাঝখান দিয়ে সোজা চলে যাচ্ছিল।  
মোবাইলে ধারণ করা ঘটনার ভিডিওচিত্রে রামব্লাস এভিনিউয়ে অনেকের দেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়, সেগুলোর কয়েকটি ছিল নিথর।
এদিকে এক টুইটে বার্সেলোনা পুলিশ হামলাস্থলে মানুষকে না যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। এ ছাড়া মেট্রো ও রেলস্টেশন বন্ধেরও ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ।

দি ইনডিপেনডেন্টের খবরে জানানো হয়, হামলার পর আতঙ্কিত মানুষ স্থানীয় হোটেল ও ক্যাফেগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। তাঁদের উদ্ধারে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

বার্সেলোচনায় ছুটি কাটাতে আসা এলেন ভার্কাম বলেন, আমরা দেখলাম, সাদা রঙের একটি ভ্যান লোকজনের উপরে উঠিয়ে দেওয়া হল। এতে লোকজনকে উড়ে যেতে দেখলাম, তিন সাইকেল আরোহীও উড়ে গিয়েছিল।
হামলার পর লোকজন কাছাকাছি দোকান ও ক্যাফেগুলোতে আশ্রয় নেয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় স্থানীয় মেট্রো ও ট্রেন স্টেশনগুলো।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বার্সেলোনার শহরতলির একটি বারে দুইজন অস্ত্রধারীর অবস্থানের খবর দিলেও পরে তা নাকচ করে পুলিশ।
এই হামলার নিন্দা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, স্পেনবাসীকে সহায়তায় যা যা করা দরকার তা তারা করবেন। তিনি বলেন, কঠোর ও শক্ত হও, আমরা তোমাদের ভালোবাসি!
নিহতদের জন্য শোক প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে বলেছেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে স্পেনের পাশে থাকবে তার দেশ।
হামলার নিন্দা জানিয়ে স্পেনের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো ও জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল।
রয়টার্স বলছে, প্রতিবছর বার্সেলোচনায় এক কোটি ১০ লাখ পর্যটক ভ্রমণ করেন। সেখানে পর্যটন মৌসুম যখন তুঙ্গে সে সময় এবারের হামলা হল।
২০০৪ সালের মার্চে মাদ্রিদের কমিউটার ট্রেনে ইসলামি জঙ্গিদের পুঁতে রাখা বোমায় ১৯১ জন নিহত হওয়ার পর দেশটিতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটল এই হামলায়।
স্পেনের বার্সেলোনার প্ল্যাকা কাতালুনিয়া এলাকায় এর আগেও বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলা হয়। প্রায় ৩০ বছর আগে ১৯৮৭ সালের ওই গাড়িবোমা হামলায় শহরটিতে ২১ জন নিহত হয়, আহত হয়েছিল অন্তত ৪৫ জন।

//এআর


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি