ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

কারাগারে যেভাবে সময় কাটছে খালেদা জিয়ার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৩৮, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আজ ১৩ দিন হলো  রাজধানী নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।

ইবাদত-বন্দেগি বিটিভি দেখে এবং পত্রিকা পড়ে কারাগারে বেশিরভাগ সময় কাটছে তার। কারাগারে দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশিষ্টরা বলছেন, পুরারো কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের জ্যেষ্ঠ কারা তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে রাখা হয়েছে খালেদা জিয়াকে। খালেদা জিয়া ঘুম থেকে উঠে সকালের নাস্তা করেন রুটি ও সবজি দিয়ে। দেশের সার্বিক পরিস্থিত জানতে দৈনিক পত্রিকা পড়তে দেওয়া হয় তাকে। এরপর গোসল করেন, জোহরের নামাজ পড়েন। জোহরের নামাজ শেষে তিনি অজিফা পড়েন। পরে তিনি কিছুক্ষণ ডে-কেয়ার সেন্টারের বারান্দায় হাঁটাহাঁটি করেন, পরে সেখানে কিছুক্ষণ চেয়ারে বসে থাকেন।

দুপুরের খাবার খান বিকেল চারটা থেকে সাড়ে চারটার দিকে। দুপুরে তাঁকে ভাত, সবজি, রুই বা আইড় মাছ খেতে দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর বিটিভি দেখেন। এরপর রাতের খাবার খান। রাতে তাঁকে সবজি ও রুটি, মুগ ডাল খেতে দেওয়া হয়। কোনো কোনো দিন রাতে ভাত খেতে দেওয়া হয়। খাবার শেষে আবার খালেদা জিয়া বিটিভি দেখেন।

খালেদা জিয়ার গ্রেফতারের আগেই কারা বিধি অনুসারে ভিআইপি বন্দি রাখার জন্য পুরোনো কারাগারের ‘ডে-কেয়ার সেন্টারের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির ডান পাশের দুটি কক্ষ থাকার উপযোগী করে তোলা হয়। সেখানে আগে বন্দীদের সন্তানদের রাখা হতো। এর মধ্যে একটি কক্ষে লাগানো হয় নতুন টাইলস, সিলিং ফ্যান। বসানো হয় খাট, চেয়ার ও টেবিল এবং বিটিভি সংযোগ দেওয়া হয় সেখানে।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি ডিভিশন (প্রথম শ্রেণির বন্দী হিসেবে বিশেষ সুবিধা) পাওয়ার পর সেখান থেকে খালেদা জিয়াকে বন্দীদের সন্তান রাখার স্থান ডে-কেয়ার সেন্টারে নেওয়া হয়।

পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে তাঁর খাবার রান্না করা হয়। রান্না করা এ খাবার প্রথমে উপকারাধ্যক্ষ ও কারাধ্যক্ষ খান। পরে চিকিৎসকের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর খালেদা জিয়াকে দেওয়া হয়। তিন বেলাই এসব নিয়ম মানা হয়।

কারা কর্মকর্তারা বলেন, খালেদা জিয়ার তত্ত্বাবধানের জন্য ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারেই আছেন। তিনি দিনে কর্তব্যরত নারী কারারক্ষীর কাছে থাকেন। ডাকা হলে তিনি খালেদা জিয়াকে ওষুধ দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেন। রাতে ঘুমান খালেদা জিয়ার পাশের কক্ষে। খালেদা জিয়ার সেবায় কারাগারের ভেতরে সার্বক্ষণিক একজন নারী ফার্মাসিস্ট, প্রয়োজন হলে একজন চিকিৎসক থাকেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় খালেদা জিয়ার কক্ষ ঘিরে একজন নারী উপকারাধ্যক্ষের নেতৃত্বে সার্বক্ষণিক চারজন নারী কারারক্ষী থাকেন। কারাগারের বাইরে আছেন একজন উপকারাধ্যক্ষের নেতৃত্বে একদল কারারক্ষী। আরও আছেন পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়া কারাগারে শান্ত ও চুপচাপ থাকেন। কারা কর্মকর্তাদের কাছে তিনি কোনো চাহিদার কথা জানান না। কিছু লাগবে কি না কারা কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় খোঁজ নিতে গেলে খালেদা জিয়া বলেন, প্রয়োজন হলে তিনিই জানাবেন।

 প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি ৫ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হয় খালেদা জিয়ার। একই মামলায় বিএনপির দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের ১০ বছর কারাদণ্ড হয়। রায়ের দিনই খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে পুরনো কেন্দ্রীয় কারগারেই বন্দি সময় কাটছে এক সময়ের প্রধানমন্ত্রীর।

/ এআর /

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি