ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

কার্ল মার্কসের আবিষ্কার

প্রকাশিত : ২২:২৩, ৫ মে ২০১৮

চলতি বছরে (ইংরেজি ২০১৮ সাল) কার্ল মার্কসের জন্মের দুইশ বছর পূর্ণ হচ্ছে। তাঁর বিষয়ে যতো কথা বলা যায় এর মধ্যে তার প্রায় সবই বলা হয়ে গেছে। এতোদিন পরএই এখন- নতুন আর কোন কথাটি বলা যায়? যেদিন মার্কস মারা যান তার তিন দিনের মাথায় (১৭ মার্চ ১৮৮৩ সাল) লন্ডনের হাইগেট গোরস্তানে তাঁর সমাধির পাশে দাঁড়িয়ে দীর্ঘদিনের বন্ধু ফ্রেডরিক এঙ্গেলস বলেছেন, যুগ যুগ ধরে তাঁর নাম কীর্তিত হইতে থাকবে, আর কীর্তিত হবে তাঁর সাধনা।`

এঙ্গেলসের এই ভবিষ্যদ্বাণী বৃথা যায়নি। আজ দুইশ বছর পরও আমরা তাঁর নাম  নিচ্ছি। সারা দুনিয়া নিচ্ছে। ফরাশি ইতিহাস ব্যবসায়ী ফেরনাঁ ব্রোদেল ( ১৯০২- ১৯৮৫) মার্কসের মৃত্যুর প্রায় একশ বছর পর পরলোকগমন করেছিলেন। একে আর যাই বলুন বলতে পারেন, ভুলেও মার্কস ব্যবসায়ী বলতে পারেন না। আর এর মতেও উনিশ শতকে ইউরোপে শ্রেষ্ঠ সমাজ সংস্কারক মহাত্মাদের মধ্যে - বিশেষত যারা ১৭৬০ সাল হতে ১৮২৫ সালের মধ্যে জন্মেছেন তাঁদের মধ্যে কার্ল মার্কসের নাম সর্বাগ্রগ্রণ্য। এদের মধ্যে তিনি উল্লেখ করেছেন অঁরি সা সিঁমো, রবার্ট ওয়েন, শার্ল ফুরিয়ে, এতিয়েন কাবে,  ওগুস্ত কোঁত, পিয়ের জোসেফ প্রুঁধু, ভিক্তর কঁসিদেরাঁ এবং লুই ব্লাঁ। বয়সে এরা সবাই কার্ল মার্কসের বড়। কার্ল মার্কসের জন্ম ১৮১৮ সালে। আর ফ্রেডরিক এঙ্গেলস ও ফার্দিনান্দ লাসালের জন্ম জন্ম যথাক্রমে ১৮২০ ও ১৮২৫ সালে। ব্রোদেল উল্লেখ করিতে ভোলেন নাই যে শেষের এই তিনজন ছিলেন জাতিতে জার্মান। ইউরোপে শ্রমিক শ্রেণীর আন্দোলনকে এরা সমাজের পেছনের সারি থেকে টেনে সামনের দিকে নিয়ে এসেছিলেন।

 

ব্রোদেল বলেছেন, নিজের সহকর্মীদের মধ্যে মার্কসের প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ার যোগ্যতা রাখতেন কেবল ফার্দিনান্দ লাসাল। ১৮৬৪ সালে এক দ্বন্দ্বযুদ্ধে তিনি যদি হঠাৎ নিহত না হতেন তো কার্ল মার্কসের নামাংকিত রাজনৈতিক আন্দোলনটির জয়জয়কার এখন যতোটা নিশ্চিত হয়েছে ততোটা হতো কীনা বলা মুশকিল। তবে শেষ পর্যন্ত ইতিহাস ব্যবসায়ী ব্রোদেলও বলতে বাধ্য হয়েছেন, মার্কসের রাজনৈতিক সাফল্যের আসল রহস্য তাঁর লেখা `দাস কাপিটাল` বা `পুঁজি` গ্রন্থের বিশ্লেষণ শক্তির যথার্থতায় নিহিত। কি সেই শক্তি? সমাধিপার্শ্বের বক্তৃতার এক জায়গায় ফ্রেডরিক এঙ্গেলস দাবি করেছেন কার্ল মার্কস যা আবিষ্কার করেছেন তা চার্লস ডারিউইনের আবিষ্কারের সমতুল্য। তিনি বলেছেন, ডারউইন যেমন সপ্রাণ প্রকৃতি জগতের বিকাশের বিধি আবিষ্কার করেছিলেন, মার্কসও তেমনি মানুষের ইতিহাস বিকাশের বিধি আবিষ্কার করেছেন।

মানবজাতির ইতিহাস বিকাশের বিধি বা নিয়ম বলতে কী বুঝাচ্ছে? এঙ্গেলস বলেছেন, এই বিধি বা নিয়ম আরকিছু নহে- একটি সরল সত্য মাত্র। সত্যটি এই যে অন্য কোনো কাজে হাত দেওয়ার আগে মানুষকে খাওয়া দাওয়া করতে, মাথাগোঁজার ঠাঁই করতে আরপড়ার এক টুকরা কাপড়ের ব্যবস্থা করতে হয়। এটুকুর ব্যবস্থা হলে তারা রাষ্ট্রনীতি, শিল্পকলা, ধর্মকর্ম ইত্যাদির পেছনে সময় দিতে পারে। এতোদিন পর্যন্ত সাকার ভাবধারার বাড় অতি বেশি বাড়ার কারণে এই সরল সত্যটা পায়ের তলায় চাপা পড়ে ছিল। তাই এই সত্যের প্রকৃত অর্থ দাঁড়াচ্ছে এরকম, কোনো বিশেষ জাতি বিশেষ কোনো যুগে প্রতিদিনকার জীবনযাপনের নগদ প্রয়োজনে যেটুকু উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে পারে অর্থাৎ যে পরিমাণ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারে তার ভিত্তিতেই সেই জাতির পক্ষে রাষ্ট্র পদবাচ্য অনুষ্ঠান- প্রতিষ্ঠাণ বা আইন কানুনের গোড়াপত্তন করা কিংবা শিল্পকলা আরএমনকি ধর্মকর্ম সংক্রান্ত ভাবধারা গড়ে তোলা সম্ভব। এই ভিত্তির নিরিখে তার উপর গড়ে উঠা ধ্যান ধারনার ব্যাখ্যা বিশ্লেষন করতে হবে, এতোদিন ধরে যা চলছিল- অর্থাৎ ধ্যান ধারণার ভিত্তিতে অর্থনৈতিক বিকাশের ব্যাখ্যা, সেরকম উল্টা পাল্টা ব্যাখা আর চলবে না।

এঙ্গেলসের এই দাবি নিছক মন গড়া কথা নয়। মার্কস তাঁর পুঁজি গ্রন্থের প্রথম সংস্করণের মুখবন্ধযোগে একই কথা লিখেছেন, `শেষ পর্যন্ত এই বইয়ের উদ্দেশ্য একটাই- এ যুগের সমাজ ব্যবস্থা কোনো অর্থনৈতিক বিধি বা নিয়ম অনুসারে বিকশিত হচ্ছে তা আবিষ্কার করা`।

এঙ্গেলসের মতে, এই আবিষ্কারটাই কার্ল মার্কসের একমাত্র আবিষ্কার ছিলো না। সমাধির পাশের বক্তৃতায় তিনি আরো যোগ করেছিলেন, বর্তমান যুগের পুঁজিভিত্তিক উৎপাদন প্রণালী আরসেই প্রণালী হতে যে বুর্জোয়া শ্রেণী জন্মেছে তাহারা যে বিশেষ বিধি বা নিয়ম অনুযায়ী চলছেন সেই নিয়মটিও মার্কস আবিষ্কার করেছেন। মার্কস আবিষ্কার করেছেন যে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়ে শ্রমিক শ্রেণী যে পরিমাণ নতুন মূল্যের সৃষ্টি করে তার একাংশ মাত্র তারা মজুরি হিসেবে পাচ্ছেন। বাকি বা উদ্ধৃত্ত অংশটুকু পুঁজির মালিকগণ ভোগ করে থাকেন। ফ্রেডরিক এঙ্গেলস নির্দেশ করেছেন,  এই উদ্ধৃত্তমূল্যের নিয়মটা কার্ল মার্কসের দুই নম্বর আবিষ্কার। এই আবিষ্কারকে এ যুগের বুর্জোয়া অর্থনীতিবিদগণ নতুন নামে ডাকছেন। তাঁরা এর নাম রেখেছেন `পুঁজিগঠন` বা ক্যাপিটাল ফর্মেশন।

এই আবিষ্কারের ফলে এতোদিন যে সমস্যার সমাধান নিয়ে একদিকে বুর্জোয়া অর্থনীতি ব্যবসায়ী এবং অন্যদিকে সমাজতন্ত্রবাদী সমালোচকগণ অন্ধকারে পথ হাতড়াচ্ছিলেন তা সহজবোধ্য হয়ে উঠলো। এই সমস্যার নাম এতোদিন ছিল শ্রমিক সমস্যা। এখন এর নতুন নাম দাঁড়ালো বুর্জোয়া সমস্যা। অর্থাৎ সমাজ হতে কীভাবে বুর্জোয়া শ্রেণীর শাসন উঠিয়ে দেওয়া যায়।

একটা জীবনের পক্ষে এই মাপের দুটো আবিষ্কার কী যথেষ্ট নয়? আরএমন একটা আবিষ্কারের মতন আবিষ্কার যে মানুষটি করতে পারেন তাকে নির্দ্বিধায় সুখী মানুষ বলা যেতে পারে। জ্ঞানের যে ক্ষেত্রেই মার্কস হাত দিয়েছিলেন সেখানেই এমনকি গণিতশাস্ত্রেও তিনি নিজস্ব একটা কিছু আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাঁর জ্ঞানানুসন্ধানের ক্ষেত্রও খুব একটা কম ছিলো না। ছিলো অনেকগুলো আর কোনো ক্ষেত্রেই নিছক ভাসাভাসা অনুসন্ধান করে বা দায় সেরে তিনি কর্তব্যকর্ম সমাপন করেন নাই।

সেদিনের বক্তৃতায় এঙ্গেলস যে কোনো কারণেই হোক আরেকটিআবিষ্কারের কথা বলতে ভুলে গেছেন। মার্কস নিজে সে আবিষ্কারের কথা বলে গেছেন। এঙ্গেলসেরও তাতে দ্বিমত ছিলোনা। জগদ্বিখ্যাত ` কমিউনিস্ট পার্টির ইশতেহারকার্ল মার্কস ও ফ্রেডরিক এঙ্গেলস দুজনেরই কীর্তি। তবু এই ইশতেহারের মূল ধ্যান ধারনার কৃতিত্ব এঙ্গেলসও একা কার্ল মার্কসকেই দিয়েছিলেন। এই প্রধান ধারণাটির নাম শ্রেণী সংগ্রাম। মার্কস বলেছেন, শ্রেণী সংগ্রাম কথাটি বা তার অন্তর্গত অর্থটি তাঁদের নিজেদের মৌলিক আবিষ্কার নয়। তাঁদের একযুগ আগে ফরাশিদের কয়েকজন ইতিহাস ব্যবসায়ী এই ধারণাটির প্রবক্তা। এই বুর্জোয়া ইতিহাস ব্যাবসায়ীদের মথ্যে ওগুস্তিন থিয়েরি প্রমুখ কেউ কেউ ছিলেন সাঁ সিমোঁর শিষ্য।

মার্কস দাবি করেছেন, শ্রেণী সংগ্রামের মধ্যস্থতায় পশ্চিম ইউরোপের ইংল্যান্ড, ফরাশি প্রভৃতি দেশে বুর্জোয়া শ্রেণী রাষ্ট্র ক্ষমতা লাভ করেছে। মার্কস দেখাতে চেয়েছেন যে, বুর্জোয়া শ্রেণীর ক্ষমতা যে পথে এসেছে একদিন সেই পথের তার বিনাশ ঘটবে। অর্থাৎ শ্রেণী সংগ্রামেই তার অবসান হবে।  ইংল্যান্ড ও ফরাশি দেশের নতুন শাসক শ্রেণী সংক্ষেপে যাদের নাম বুর্জোয়া শ্রেণী,  একদিন শ্রমিক শ্রেণীর হাতে পরাস্ত হবেন। এই নতুন বিপ্লবী শ্রেণীর লক্ষ্য হচ্ছে সমাজ ব্যবস্থার দুষ্টক্ষতস্বরূপ যে শ্রেণী সংগ্রাম জারি রয়েছে তার অবসান ঘটানো। মার্কস নিবেদন করেছেন, একদিন শ্রমিক শ্রেণীর রাজ কায়েম হবে। এই ধারণাটি তাঁর নিজের পক্ষে শেষ আবিষ্কার।

ইংরেজীতে এই ধারণার অনুবাদ হচ্ছে,  ডিক্টেটরশিপ অব দি প্রলেতারিয়েত বা শ্রমিক শ্রেণীর একান্ত শাসন।

এঙ্গেলস তাঁর ১৭ মার্চের বক্তৃতায় বলেছেন, সকল কথার গোড়ার কথা, মার্কস ছিলেন একজন বিপ্লব ব্যবসায়ী। প্রচলিত ভাষায় পেশাদার বিপ্লবী। তাঁর ধ্যানজ্ঞান ছিল একটাই, ছলে বলে কিংবা কৌশলে পুঁজিমালিক সমাজের উচ্ছেদ সাধন আর সেই উচ্ছেদ সাধনের কাজে তার সঙ্গে যে সবল রাষ্ট্র জাতীয় প্রতিষ্ঠাণের কল্যাণে এই ধরণের সমাজ গেড়ে বসেছে তাদের উচ্ছেদ সাধনে সর্বাত্মক শরিক হওয়াই তাঁর জীবনের ধ্রুবতারা হয়েছিল। তিনি শরিক হতে চেয়েছিলেন বর্তমান যুগের প্রলেতারিয়েত বা সর্বহারা শ্রমিক শ্রেণীর মুক্তিসংগ্রাম। শ্রমিক শ্রেণী যে শ্রমিক শ্রেণী- বুর্জোয়া শ্রেণী যে তাদের শোষণ করছে এই সত্য খোদ শ্রমিকদের মাথায় তিনিই প্রথম ভালোভাবে ঢুকিয়েছেন। শ্রমিকদিগকে তিনি বলে দিয়েছিলোন, মুক্তিলাভ করতে হলে তার কি কি জিনিশ দরকার জবে, বা কোন কোন শর্ত পূরণ করতে হবে। এক কথায় লড়াই করার মেজাজটা তাঁর অস্থিমজ্জায় গাঁথা ছিল।

এমন মানুষের পক্ষে বুর্জোয়া শ্রেণীর ঘৃণা না কুড়িয়ে বেঁচে থাকা কী সম্ভব? এঙ্গেলস জানাচ্ছেন, মার্কস ছিলের তাঁর কালের সবচেয়ে বেশি ঘৃণাপ্রাপ্ত এবং সবচেয়ে বেশি কুৎসার শিকার ব্যক্তি। রাজতন্ত্রপন্থী আর প্রজাতন্ত্রপন্থী দুই ধরণের সরকারই তাঁকে স্ব স্ব দেশ থেকে বের করে দিয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অপবাদ রটনার দৌড়ে বুর্জোয়া শ্রেণীর প্রতিনিধিরি নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন।

এই একটি ক্ষেত্রে কে সংরক্ষণশীল আর কে অতি গ্রণতন্ত্রী সেই ভেদাভেদ করা যেতোনা।

মার্কস আপন মনে কাজ করে গেছেন। একান্ত বাধ্য না হলে তিনি এই সকল কুৎসার কোনো জবাব দিতেন না। উদাহরণস্বরূপ `পুঁজি` প্রথম খন্ডের মুখবদ্ধ লিখতে বসে তিনি লিখেছেন, যে কোনো বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল যাদের বিরুদ্ধে যায় তারা যে সেই গবেষণার মুন্ডপাত করবেন তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু অর্থশাস্ত্রের বিষয়টা একটু আলাদা। যে সমস্ত বিষয় নিয়ে অর্থশাস্ত্রের কাজ তাদের প্রকৃতিটা একটু অালাদা। এইসব বিষয় ব্যক্তিগত সম্পত্তির বা স্বার্থের সহিত জড়িত বিধায় অর্থশাস্ত্র গবেষকের বিরুদ্ধে গড়ে উঠা যুদ্ধক্ষেত্রের শত্রুব্যূহে দেখা যায় মানবজাতির বক্ষে পৃথিবীর যতো চরম ধ্বংসাত্মক, পরম হীণ আরঅসুস্থ আবেগ আছে সবই এক জায়গায় এসে সমবেত হয়েছে। এদের নাম ব্যক্তিগত সম্পত্তির অসুর- অসুরি।

শত্রুতার প্রকৃতিটা কেমন ত দেখার উদ্দেশ্যে মার্কস লিখেছেন, `উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আপনি যদি ইংরেজদের সর্বজনস্বীকৃত চার্চ বা ধর্মসংঘের ৩৯ টি নিয়মের মধ্যে ৩৮ টি বাতিল করার দাবি তোলেন তা সহজে ক্ষমা করতে রাজি হবেন। তবে যদি তাদের আয়ের ৩৯ ভাগ হতে ১ ভাগও কমাতে চান অত সহজে ক্ষমা করতে রাজি হবেন না। কারণ মার্কস বলেছেন, আজকাল সম্পত্তি প্রথার সমালোচনার সাথে তুলনা করলে দেখবের নাস্তিকতা ছোট অপরাধ ছাড়া আর কিছু নয়।

১৮৪৮ সালে কার্ল মার্কস যখন ` কমিউনিস্ট পার্টির ইশতেহার` রচনা করেছেন তখনো ইউরোপ মহাদেশে শ্রমিক শ্রেণী পুরোপুরি গড়ে উঠে নাই। ফরাশি একাডেমি প্রণীত ফরাসি ভাষার অভিধানে `প্রলেতারিয়েত` শব্দটি প্রথম ঢুকবার অনুমতি পেয়েছিল মাত্র ১৮২৮ সালে। মানে মার্কসের জন্মের মাত্র ১০ বছর পর আর ইশতেহারের বিশ বছর আগে। বুর্জোয়া শ্রেণী খুব সহজে এই শব্দটি উচ্চারণ করতে চাননাই। তারা এর পরিবর্তে `জনতা` শব্দটি ব্যবহার করতে শুরু করেন। ইংরেজিতে একবচনে `ম্যাস` আর বহুবচনে `ম্যাসেস` শব্দের ব্যবহার ১৮৩০ সালের পর খুব বেড়ে যায়। নাপোলেয়ঁ বোনাপার্তের ভাইয়ের ছেলে লুই নাপোলেয়ঁ বলেছেন, ` এখন বর্ণভেদ লোপ পেয়েছে। অার জনতার শাসন কায়েম হয়েছে`।

এঙ্গেলসের যে বক্তৃতা হতে আজ আমরা এতোগুলো কথা ধার করেছি সেই বক্তৃতায় তিনি মার্কসের পরিচয় দিয়েছেন এভাবে: মার্কসের মৃত্যুতে দুটো শক্তির প্রচন্ড ক্ষতি হয়েছে। প্রথম শক্তির নাম ইউরোপ ও আমেরিকার প্রলেতারিয়েত শ্রেণী বা শ্রমিক শ্রেণি। আর দ্বিতীয় যে শক্তিটির ক্ষতি হয়েছে তার নাম ইতিহাস শাস্ত্র। দু:খের মধ্যে বর্তমান কালের অনেক মার্কস ব্যবসায়ী এই সত্যটা আমলই করেন নাই।

আআ/এমএইচ/টিকে


** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।
Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


টেলিফোন: +৮৮ ০২ ৫৫০১৪৩১৬-২৫

ফ্যক্স :

ইমেল: etvonline@ekushey-tv.com

Webmail

জাহাঙ্গীর টাওয়ার, (৭ম তলা), ১০, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

এস. আলম গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি