ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

কোন পথে এগোচ্ছে পাকিস্তানের রাজনীতি ?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৪৯, ২১ জুলাই ২০১৮ | আপডেট: ১২:০৬, ২১ জুলাই ২০১৮

আগামী ২৫ জুলাই পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাতীয় নির্বাচন। এরইমধ্যে প্রধান দলগুলো রাজনীতির মাঠ চষে বেড়াচ্ছে। নির্বাচনে দলকে জেতাতে স্বেচ্ছায় কারাবরণ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ও তার কন্যা মরিয়ম নওয়াজ। এরইমধ্যে তেহরিক-ই-ইনসাফ প্রধান ইমরান খানকে বিজয়ী করতে উঠেপড়ে লেগেছে দেশটির সেনাবাহিনী।

অনেকে মনে করছেন, এতেই স্পষ্ট, ভোটাভুটির দিন সেনাবাহিনী পছন্দের দলকে জয়ী করার চেষ্টা করবে। তবে ইমরান খানকে বিজয়ী করার চেষ্টা করলেও জরিপ বলছে, নওয়াজ শরীফের দলই ফের ক্ষমতায় আসতে পারে। তবে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দলটির। পিএমএল-এনের দীর্ঘকালের শক্ত ঘাঁটি ও ভোট ব্যাংক হচ্ছে পাঞ্জাব। সেখানে যদি ব্যাপক হারে ভোট পড়ে আর নির্বাচনে ভোট পড়ার হার ৫৫-৬০ শতাংশের মধ্যে সীমিত থাকে, তাহলে সেনাবাহিনীর পরোক্ষ বিরোধিতা সত্ত্বেও নওয়াজের দলই জয়ী হবে।

এদিকে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রধান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিও অভিযোগ করে আসছেন, প্রচারে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। অন্যদিকে সেনাবাহিনী পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকেই (পিটিআই) ক্ষমতায় দেখতে চায় বলে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন চলছে। অনেকেই মনে করেন, নির্বাচন সামনে রেখে সেনাবাহিনীর এই ইচ্ছা বাস্তবায়নের চেষ্টাই করছে দেশটির বিচার বিভাগ ও অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো। সে কারণেই পানামা পেপারসের দুর্নীতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত নওয়াজ শরিফকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে বিচ্যুত করেই থামেনি দেশটির বিচার বিভাগ; তাকে তার দলের প্রধান থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে রাজনীতিতেও।

দেশের ভেতরে নির্বাচনী প্রচারে নেমে নওয়াজের ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরাও সেনাবাহিনীর চাপের মুখে পড়ছেন বলে অভিযোগ এসেছে। দল ছেড়ে সেনা-পছন্দের দলে ভেড়ার তাড়া দেওয়া হচ্ছে। এসব পরিস্থিতি বিবেচনা করে অনেক পর্যবেক্ষকই আশঙ্কা করছেন, এবার দেশটিতে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক নির্বাচন হতে যাচ্ছে। নওয়াজের দলকে সেনাবাহিনী যদি নেপথ্যে থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করে সামান্য ব্যবধানেও হারাতে পারে, তাতে দেশের ভেতর বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়ার আশঙ্কাই বেশি। প্রভাবশালী দলটির নেতাকর্মীরা দেশটির সেনাবাহিনী, বিচার বিভাগ এবং অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুারোকে ব্যালটে পাল্টা জবাব দেওয়ার অপেক্ষাতেই রয়েছেন। এ জন্য সব ধরনের বৈষম্য ও দমনপীড়ন মুখ বুজে সহ্য করছেন। আর নওয়াজের দল পরাজিত হলে, তারা সহজেই ধরে নেবে, দেশটির সেনাবাহিনী নির্বাচনে কারচুপি করেই তাদের হারিয়েছে। তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে রাজপথেও নেমে আসতে পারে। আবার পিএমএল-এন যদি জয়ীও হয়, তাহলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে, দেশটির বিচার বিভাগের সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের দ্বন্দ্ব আরও প্রবল হবে।

এদিকে বিশ্নেষকরাও বলছেন, দুর্নীতি নয়, নওয়াজের বর্তমান পরিণতির কারণ আসলে সেনাবিরোধিতা। ১৯৯৯ সালে তৎকালীন সেনাপ্রধান পারভেজ মোশাররফকে বরখাস্ত করার মাধ্যমে যার সূচনা করেছিলেন নওয়াজ। সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক প্রধানমন্ত্রিত্বে অযোগ্য ঘোষণা করার পর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সেনাবাহিনীর নওয়াজবিরোধী অবস্থানের কথা উঠে আসে। অল্প কিছুদিনের মাথায় নওয়াজ শরিফের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে সেনাবাহিনীর রোষের মুখে পড়ে দেশটির সবচেয়ে প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন।

এমজে/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি