ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

দাম্পত্যজীবনে সুখী হতে যা প্রয়োজন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:১৩, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ২২:২৭, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭

(ফাইল ফটো)

(ফাইল ফটো)

প্রেম-ভালোবাসা মানুষের জীবনে অমূল্য সম্পদ। প্রত্যেক মানবিক সম্পর্কেই প্রেম, ভালোবাসা, ঝগড়া ও দুঃখের সংমিশ্রণ থাকে। একটি সম্পর্কের ভিত্তি শুধুমাত্র ভালোবাসাই নয়। তার সঙ্গে আরও থাকে বিশ্বাস, সততা, বোঝাপড়া এবং আত্মত্যাগ। ভালোবাসার সম্পর্ক কোনো রুপকথার গল্প নয়। দাম্পত্যজীবনে সুখী হতে যা করতে হবে।

দম্পতিরা এক সঙ্গে থাকুন-
আপনি যদি মনে করে থাকেন যে সুখী দম্পতিরা কখনো একে অপরের থেকে আলাদা হন না তবে আপনি খানিকটা ভ্রান্তির মধ্যে আছেন। প্রত্যেক মানুষই কিছুটা সময় নিজের সান্নিধ্যে কাটাতে চায়। আপনিও যদি এমন হয়ে থাকেন তবে নিজেকে দোষারোপ করার কোন দরকার নেই। পরিবার ও প্রিয় মানুষের দায়িত্ব থেকে কিছুটা সময় অব্যাহতি দেওয়া দোষের কিছু নয়। এক সঙ্গে থাকলে তাতে ভালোবাসা আরও গভীর হয়।

একে অপরের বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনকে আপন মনে করা-

আপনার সঙ্গী যে আপনার পরিবার ও বন্ধুদের পরিপূর্ণভাবে ভালোবাসবে, এমনটি আশা করার কোন প্রয়োজন নেই। আপনার সঙ্গীর পরিবারের সঙ্গেও যে আপনি একদম একাত্ম হয়ে যাবেন, সেটিও আশা করা বৃথা। আপনারা দুজন দুজনকে পছন্দ করেন বলেই একটি সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। এর পর সবার সঙ্গে খানিকটা তাল মিলিয়ে চলতে হবে যেন কোনভাবেই কেউ অপমানিত বোধ না করে। নিজস্ব আশা এবং সীমাবদ্ধতা একে অপরের সঙ্গে ভাগাভাগি করুন। এতে করে যোগাযোগের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।

ঝগড়া এড়িয়ে চুলন-
ভালোবাসাপূর্ণ সম্পর্কে যারা কখনো ঝগড়া করেন না, তারা আসলে একজন আরেকজনের প্রতি কোন মায়াই প্রদর্শন করেন না। ঝামেলাবিহীন জুটিগণ সাধারণত সম্পর্ক শেষ করার তালেই থাকেন। তার মানে এই নয় যে বড়সড় যেকোন ঝগড়া সম্পর্কের জন্য উত্তম, সেগুলো মারাত্মক হতে পারে কিন্তু ছোটখাট যেকোন কলহ-বিবাদ সম্পর্কের জন্য ভালো। এটি যেকোন সম্পর্ককে গাড় করে। কেননা, একটি ঝগড়ার পর যখন নিজেরা নিজেদের মধ্যে সেটি মিটমাট করে ফেলেন তাতে করে সম্পর্ক আরো গভীর ও আন্তরিক হয়।

বাস্তববাদী হোন
আপনি কি বিয়ের পরও আশা করেন আপনার স্ত্রী/স্বামী সেই আচরণ করবে যা সে করতো বিয়ের আগে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসেবে?
দাম্পত্যজীবনে অশান্তির একটা বড় কারণ এই অবাস্তব, অলীক প্রত্যাশা। কারণ বাস্তবজীবনে অলীক প্রত্যাশাগুলো যখন বাস্তবায়িত না হয় তখন তা আশাভঙ্গ ও মর্মপীড়ার কারণ হয়। আবার বৈজ্ঞানিকভাবেই এটা এখন প্রমাণিত যে, প্রেমের প্রাথমিক উন্মাদনা ক্ষণস্থায়ী। আপনি যাকেই বিয়ে করেন না কেন, সে কখনোই ১০০% নিখুঁত হবে না। সারাক্ষণ শুধু আপনার চিন্তা করবে না। সুখী হতে হলে আপনাকে তাই বাস্তববাদী হতে হবে।
আপনার সঙ্গী বোঝার চেষ্টা করুন-
দাম্পত্যজীবনে সমস্যার একটা অন্যতম কারণ হলো আমরা নিজেরাই যে সমস্যার জন্যে দায়ী – এটা আমরা মেনে নিতে পারি না। আমরা সবসময় মনে করি: আমি ঠিক, আমার স্বামী/স্ত্রী ভুল। অথবা মনে করি ও আমার প্রতি অন্যায় করছে কিংবা মনে করি যে ও আমাকে বোঝে না। কিন্তু আমরা এটা বুঝি না যে, আরেকজনকে বোঝার জন্যে আমিই আগে উদ্যোগ নিতে পারি।
দাম্পত্যজীবনে ভুল বোঝাবুঝি দূর করার অন্যতম উপায় হলো, নিজের ভুলগুলো নিজেই খুঁজে বের করা এবং অপরপক্ষের অবস্থান থেকে দেখার চেষ্টা করা। আমরা এটা কখনোই আশা করতে পারি না যে, আমি যা করি না, আমার স্বামী/স্ত্রী সেটা করবে। আমরা যখন ধরে নিই যে, সমস্ত ভুল আরেকজনের, তখন ভুল বোঝাবুঝি দূর করার দায়ও আমরা তার ওপরই চাপিয়ে দিই। যদি আমরা শুধু এটা মনে করতাম যে, বোঝাবুঝির অভাব হলেই ভুল বোঝাবুঝি হয়, তখন আমরাই উদ্যোগ নিতাম। কোন সমস্যাই আর সমস্যা থাকতো না।

পরিবারে সময় দিন, সম্পর্ক লালন করুন
জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো পরিবারিক জীবনেও আপনি যদি সাফল্য চান, আপনাকে পরিবারের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। বন্ধুদের সাথে আড্ডা কিংবা ক্লাবে তাস বা পুল খেলে সময় কাটানোর চাইতে পরিবারে সময় দিলে সেটা আপনার ভবিষ্যৎ জীবনের জন্যে ভালো হবে। মনে রাখবেন, বাসায় থাকা আর পরিবারের সাথে সময় কাটানো – দুটি সম্পূর্ণ আলাদা ব্যাপার। বাসায় থাকলে টিভি না দেখে পরস্পরের সাথে কথা বলুন, অনুভূতি-মতামত-পরামর্শ বিনিময় করুন। অফিসের চাপ, ঝামেলা বা টেনশনকে অফিসে রেখে শুধুমাত্র পরিবারকেই সময় দিন। সুযোগ থাকলে ঘরের কাজে স্ত্রীর সাথে অংশ নিন।


এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি