ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

দেশের উন্নয়নে আজীবন কাজ করে গেছেন ড. ওয়াজেদ মিয়া

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:৪৬, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ২২:৪৯, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

‘আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী প্রয়াত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া একজন নম্র, ভদ্র, সদালাপি, নির্লোভ, নিরহংকারী ও উদারনৈতিক মানুষ ছিলেন। তিন সত্যিকার অর্থেই একজন বিজ্ঞানী ছিলেন। বিজ্ঞানের যুক্তি দিয়েই সবকিছু বিবেচনা করতেন। সেই বিজ্ঞানমনষ্কতা তার জীবনের প্রত্যেকটি কর্মে প্রতিফলিত হয়েছে।

আজ বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এম ওয়াজেদ মিয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ৭৭ তম জন্মদিন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন আরও বলেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী প্রয়াত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ক্ষমতার অনেক কাছাকাছি থেকেও কখনো ক্ষমতার দাপট দেখাননি। এটাই ছিল তার জীবনের অন্যতম বড় একটি দিক। মেধাবী এই মানুষটি নিরবে, নিভৃতে নিরলসভাবে গবেষণা করে দেশের উন্নয়নের জন্য আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। এরকম মানুষ আমাদের মাঝে আর আসবে কিনা সন্দেহ। তিনি ইতিহাসের বিরল ব্যক্তিত্ব।


প্রধান অতিথি এ সময় বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে তার স্বপ্ন ছিল। বর্তমানে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি এম এ ওয়াজেদ মিয়ার নামে নামকরণ করার দাবি জানান আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অত্যন্ত প্রিয়পাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ড. ওয়াজেদ ক্ষমতার অনেক কাছাকাছি থেকেও কখনো ক্ষমতার দাপট দেখান নি। নীরবে নিভৃতে নিরলসভাবে গবেষণা করে দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করে গেছেন।

তিনি বলেন, জাতির জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করায় ড. ওয়াজেদ মিয়া সকলের জন্য আদর্শ হয়ে থাকবেন এবং তার অবদানের জন্য মানুষ তাকে চিরকাল স্মরণ করবে।
ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রিয় সভাপতি এ কে এম ফরহাদুল কবির অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে পঞ্চগড়-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. নূরুল ইসলাম সুজন, চারণ কবি এডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসমাইল, ভারতের কলকাতা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি অম্বর মুখার্জী, ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মশিউর রহমান, গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. মোখলেসুর রহমান সরকার প্রমুখ বক্তব্য দেন।

ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়াকে জাতীয় বিজ্ঞানীর স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, তিনি বিজ্ঞান ও মানুষের কল্যাণের কথা ভাবতেন। তারা ওয়াজেদ মিয়ার শিক্ষা ও জ্ঞানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশবাসীকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞানমনষ্ক গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বৃত্তি’ চালু ; তার জীবন ও কর্মের নিদর্শন সংরক্ষণের জন্য একটি জাদুঘর নির্মাণ, একটি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন এবং তার কর্মময় জীবন ও ছবি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভূক্তিকরণের দাবি জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে ২০১৮ সালে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া স্বর্ণপদক প্রাপ্ত গুণিজনেরা হলেন- বিজ্ঞান গবেষণায় ড. এম এ সোবহান (মরণোত্তর), সেরা ব্যাংকার হিসেবে মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম, সেরা জেলা প্রশাসক হিসেবে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক বেগম উম্মে সালমা তানজিয়া, ভারতের সফল ফুটবল কোচ হিসেবে সঞ্জয় কুমার ব্যাণার্জী ও সমাজসেবক হিসেবে ভারতের অনুপম বড়াল।


অনুষ্ঠানে অতিথিরা ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটেন এবং বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আইকিউ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার হিসেবে বই তুলে দেন।


উল্লেখ্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জামাতা ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এবং ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৬১-’৬২ শিক্ষা বছরের জন্য হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে গ্রেপ্তারবরণ করেন। ১৯৬৩ সালের ১ এপ্রিল তিনি তৎকালীন পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনে যোগ দেন। শেষ ইচ্ছানুযায়ী মৃত্যুর পর পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর গ্রামে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। সূত্র: বাসস

টিকে/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি