ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪

নাগরিকদের বানায় দাস, টাকা যায় পরমাণু খাতে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:১২, ১৮ এপ্রিল ২০১৮

উত্তর কোরিয়া প্রতি বছর দেশটি থেকে অন্তত দেড় লাখ শ্রমিককে বিদেশে প্রেরণ করেন। তবে সে অর্থ ওই শ্রমিকরা নিজেদের পরিবারের জন্য ব্যয় করতে পারেন না। বরং ওই অর্থের পুরোটাই যায় পরমাণু অস্ত্র নির্মাণের কাজে।

জানা গেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন নজিরবিহীন একটি বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। একে সামনে রেখেই বিবিসির একটি অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ইউরোপের দেশে দেশে উত্তর কোরিয়ার আধুনিক এক `দাস প্রথার` তথ্য।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি বছর উত্তর কোরিয়া থেকে দেড় লাখের মতো মানুষকে দেশটির সরকার বিদেশে পাঠায় শ্রমিক হিসেবে যাদের প্রধান কাজ আসলে সরকারের জন্য অর্থ প্রেরণ করা। এবং মনে করা হয় যে এ অর্থের পরিমাণ বছরে প্রায় এক বিলিয়ন পাউন্ড। যুক্তরাজ্যে দেশটির সাবেক উপ রাষ্ট্রদূত থায় ইয়ং হো জানাচ্ছিলেন এ অর্থ আসলে পারমানবিক কর্মসূচিতে ব্যয় করে উত্তর কোরিয়া সরকার।

তবে ওই অর্থ শুধু পারমাণবিক কর্মসূচিতে নয়, সামরিক খাত ও কিম পরিবারের উন্নত জীবন-যাপনেও ব্যয় হয় বলে জানিয়েছেন দেশটির এক কূটনীতিক।

বিবিসির একটি অনুসন্ধানী দল এ নিয়ে প্রায় দু বছর ধরে কাজ করেছে চীন, রাশিয়া ও পোল্যান্ডে। রাশিয়ায় বিবিসির অনুসন্ধানী দলটি কথা বলে গৃহস্থালির কাজ করা একদর উত্তর কোরিয়ান শ্রমিকের সাথে। তাদের একজন জানান যে তাদের আয়ের সব চলে যায় দলনেতার কাছে এবং তিনিও একজন উত্তর কোরিয়ান।

শ্রমিকদের একজন জানান, গৃহস্থালির কাজে উত্তর কোরিয়ান তরুণদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করা হয়। এমনকি তাদের থাকতে দেওয়া হয় ময়লা-নোংরা ঘরে। পাশাপাশি তাদের সঙ্গে কুকুরের মতো আচরণ করা হয় এবং খেতে দেওয়া হয় ময়লা খাবার। সব টাকাই দিয়ে দিতে হয় আর একে বলে পার্টি ডিউটি। আর কেউ বলে রিভলিওশনারি ডিউটি বা বৈপ্লবিক দায়িত্ব। যারা দিতে পারবেনা তারা এখানে থাকতে পারবেনা। দশ বছর আগেও এটা ছিলো ২৬০ পাউন্ড আর এখন এটা প্রায় দ্বিগুণ"।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত দেশগুলোর বিভিন্ন কোম্পানিতে নানা ধরনের কাজে আছে বেশ কিছু উত্তর কোরীয়। পোল্যান্ডে তেমনি একটি জায়গায় কাজ করছেন এমন একজন কথা বলেছেন বিবিসির সাথে। এক শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের লোকজন পোল্যান্ডে আছে শুধু কাজ করতে। ছুটির দিনগুলোতে তারা কোন টাকা পয়সা পায়না। কোন কাজ শেষ করার যখন কোন তাড়া থাকেনা তখন কোন বিশ্রাম না নিয়েই আমরা কাজ করি। পোলিশরা যেখানে আট ঘণ্টা কাজ করে বাড়ি যায় আমরা সেখানে কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাজ করেই যাই।

ওয়ারশোতে উত্তর কোরিয়ার দূতাবাস অবশ্য বলছে তাদের নাগরিকরা পোলিশ ও ইইউ র নিয়ম কানুনের মধ্যেই কাজ করে যাচ্ছে। পোল্যান্ড সরকার জানিয়েছে তারা প্রতিনিয়ত বিষয়টি মনিটর করে এবং এখনো তারা এমন কোন প্রমাণ পায়নি যে এসব শ্রমিকের আয় করার অর্থ উত্তর কোরিয়ায় পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।

এমজে/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি