ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪

নাটকীয়ভাবে সাকিবদের হারালেন মাশরাফিরা!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২৩:৩৮, ২১ নভেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১২:৩০, ২২ নভেম্বর ২০১৭

শেষ ওভারের তৃতীয় বলে ওপর দিয়ে বাউন্ডারি হাকালেন কাইরন পোলার্ড। ছক্কা। ৪ বলে যেখানে লাগতো ১০ রান, সেখানে পোলার্ডে ছক্কার সুবাদে আর প্রয়োজন ৩ বলে প্রয়োজন ৪ রান। পরের বলটি করার জন্য কিছুটা সময় নিলেন বোলার থিসারা পেরেরা। অধিনায়ক মাশরাফি থিসারার পাশে এসে বুদ্ধি-পরামর্শ দিলেন, ফিল্ডিং সেট করলেন। এরই ফাঁকে বলও পরিবর্তন করা হলো।

এবার বল হাতে ছুটলেন পেরেরা, তার ইচ্ছা, একটি পারফেক্ট ইয়র্কার দেওয়ার। যাতে পরাস্ত করা যায় পোলার্ডকে। পোলার্ডও তখন বড় শট খেলতে মরিয়া। কিন্তু নিচু হয় আসা বলটি ব্যাট ফাঁকি দিয়ে গিয়ে মিডল স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিল। ঢাকা ডায়নামাইটসের জয়ের আশা তখনই শেষ।

আবু হায়দার রনি শেষ ব্যাটসম্যান হিসাবে ক্রিজে আসলেন। তখন ১ বলে দরকার ৪ রান। কোনোমতে ব্যাটে বল লাগাতে পারলেই হয়তো চার হয়েও যেতে পারে এমনটিই ভাবছেন রনি। কিন্তু থিসারা পেরেরা যে অভিজ্ঞ বোলার। পরিস্থিতি কীভাবে সামলাতে হয়, এটা তার জানা আছে। শেষ বলটিতেও ইয়র্কার দিলেন তিনি। এতেই ওড়ে গেল স্ট্যাম্প, শেষ হলো রনির উইকেট। ১৪৩ রান তাড়া করতে নেমে ১৩৯ রানেই থেমে গেল ঢাকা। মাত্র ৩ রানের অসাধারণ এক জয় পেয়ে গেলো রংপুর রাইডার্স। নিশ্চিত হারতে থাকা ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি হাসলো মাশরাফির রংপুর।

চাপ নিয়েই ঢাকার ইনিংস শুরু হয়েছিল। দ্বিতীয় বলেই ফিরে যান ওপেনার সুনীল নারাইন। তিনে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন সাকিব। ১১ রান করে সোহাগ গাজীর বলে ঢাকা অধিনায়ক যখন আউট হন, দলের স্কোর তখন ৩.২ ওভারে ২ উইকেটে ২৫। এখান থেকে ঢাকা ইনিংস গড়েছে এভিন লুইস আর জহুরুল ইসলামের ব্যাটে। লুইসের ব্যাট থেকে এসেছে ২৮, জহুরুলের সংগ্রহ ২৯। তারপরও একপর্যায়ে ১০.১ ওভারে ৫ উইকেটে ৭৫ রান নিয়ে ধুঁকছিল ঢাকা। শহীদ আফ্রিদির ১৫ বলে ২১ রানে বিপর্যয় কাটিয়ে জয়কে ৩৩ বলে ৩২ রানের সমীকরণে নামিয়ে আনে সাকিবের দল। কিন্তু ঠিক তখনই রুবেল হোসেনের বলে আফ্রিদির উইকেট ছত্রখান! এখান থেকে পোলার্ড-মারুফ চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত দল জেতেনি। রংপুরের হয়ে ২টি করে উইকেট পেরেরা, সোহাগ গাজী, রুবেল হোসেন ও মাশরাফির।

এর আগে টস জিতে রংপুরকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন সাকিব। ক্রিস গেইলের ২৮ বলে ৫১ রানের ঝোড়ো ইনিংসে রংপুর বড় সংগ্রহের ইঙ্গিত দিলেও শেষ পর্যন্ত আর পারেনি। বলা ভালো, ইনিংসের শেষ ওভারে সাকিব একাই ছেঁটে দিয়েছেন রংপুরের ব্যাটিংকে! ৫ বলের ব্যবধানে ফেলেছেন ৪ উইকেট! এর মধ্যে তাঁর প্রথম বলে রান আউট হন রবি বোপারা। পরের বলে ক্যাচ দেন জিয়াউর রহমান। তৃতীয় বলে লাসিথ মালিঙ্গা ১ রান নিলেও সাকিবের পরবর্তী দুই বলে ফিরেছেন সোহাগ গাজী আর রুবেল হোসেন।

শেষ ওভারে ভেলকি দেখানোর আগে মোহাম্মদ মিথুন আর শাহরিয়ার নাফিসকেও তুলে নেওয়ায় এ ম্যাচে ১৬ রান খরচায় মোট ৫ উইকেট পেলেন সাকিব। এর আগে ২০১৩ সালে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) বার্বাডোজ ট্রাইডেন্টসের হয়ে ৬ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। একই বছর বিজয় দিবস টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে প্রাইম ব্যাংকের হয়ে মোহামেডানের বিপক্ষে শিকার করেছিলেন ৬ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

রংপুর রাইডার্স: ১৯.৫ ওভারে ১৪২ (গেইল ৫১, ম্যাককালাম ৬, মিঠুন ২২, শাহরিয়ার ৯, মাশরাফি ১৫, বোপারা ১২, থিসারা ১৫, জিয়াউর ৪, মালিঙ্গা ১*, সোহাগ ০, রুবেল ০; আবু হায়দার ০/৯, নারাইন ০/২৯, আমির ১/৩৪, আফ্রিদি ২/৩৯, মোসাদ্দেক ১/৪, সাকিব ৫/১৬, পোলার্ড ০/৬)

ঢাকা ডায়নামাইটস: ২০ ওভারে ১৩৯ (লুইস ২৮, নারাইন ০, সাকিব ১১, জহুরুল ২৯, মোসাদ্দেক ২, মারুফ ১৫, সাঙ্গাকারা ২৮, আফ্রিদি ২১, পোলার্ড ১২, নাদিফ ২, আমির ০*, আবু হায়দার ০; মাশরাফি ২/৩০, সোহাগ ২/১৮, মালিঙ্গা ১/২০, রুবেল ২/২৯, থিসারা ২/৩৭)।

ফল: রংপুর রাইডার্স ৩ রানে জয়ী

 

ম্যান অব দা ম্যাচ: ক্রিস গেইল


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি