ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা আর যেনো ক্ষমতায় আসতে না পারে’

প্রকাশিত : ১৮:২৫, ১৮ নভেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ২৩:১২, ১৮ নভেম্বর ২০১৭

প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেছেন, পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা আর যেনো ক্ষমতায় আসতে না পারে সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেছেন, ইতিহাস প্রতিশোধ নেয়। যারা পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসকে মুছে দিতে চেয়েছিলো তাদের কি লজ্জা হয় না? বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি কি তাদের লজ্জা দেয় না?

আজ শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বেলা আড়াইটার দিকে ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশ পরিচালনা করেন রামেন্দু মজুমদার ও ডা. নুজহাত চৌধুরী।

বক্তব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ ‍মুজিবুর রহমানকে। শ্রদ্ধা জানান জাতীয় চার নেতাকে, শ্রদ্ধা শহীদদের ও সম্ভ্রম হারানো মা-বোনদের। এ সময় ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। সেইসঙ্গে যারা ভোট দিয়ে ভাষণকে নির্বাচিত করেছেন তাদেরকেও ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

দীর্ঘ ২৫ মিনিটের বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, আমার মা কোনো রাজনীতিবিদ ছিলেন না কিন্তু আমার বাবা প্রতিটি বিষয়েই তিনি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন। ৭ মার্চের ভাষণের আগে তিনি আব্বাকে বলেছিলেন, তোমার মন যা চাই তুমি তা-ই বলবা, অন্য কারো কথা শুনার দরকার নেই। তুমি সারাটা জীবন দেশ ও জনগণের জন্য ত্যাগ করে আসছো। এই জনগণের ব্যাপারে তোমার চেয়ে ভালো আর কেউ বুঝবে না।

১৯৪৮ সালে বঙ্গবন্ধু যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন তখনই দেশের ছাত্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। পাকিস্তানি হানাদারদের বিপক্ষে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। ২৩ বছর শোষণের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর ছিলো ৭ মার্চের ভাষণ। তার এই ভাষণে গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে উঠে।

মিত্রবাহিনীর সহায়তায় এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ( ততকালীন রেসকোর্স ময়দান) ৯৩ হাজার সেনা নিয়ে আত্ম সমর্থন করে হানাদার বাহিনী।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু জানতেন কী হতে চলেছে। তিনি ৭মার্চের ভাষণে বলেন, আমি যদি নির্দেশ দিতে না পারি তোমরা রাস্তা ঘাট বন্ধ করে দিবে। পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিই অনেক ভাষণ দিয়েছেন। কিন্তু তাদের সবার ভাষণ ছিলো লিখিত। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ভাষণ লিখিত ছিলো না। তাঁর সামনে কোনো নোট ছিলো না।

৭ মার্চের পর থেকে  দেশ চলেছে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে। ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে তিনি দিক নির্দেশনা দিতেন। সে অনুযায়ী দেশ চলতো। বঙ্গবন্ধু জানতেন পাকিস্তানিরা ক্ষমতা দিবেনা । তাই তিনি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিলো জনগণের ম্যান্ডেট নেওয়া।

 প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে প্রথম সাত ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে করেছে বঙ্গবন্ধুর শাসন আমলে। বঙ্গবন্ধু চেয়েছেন এ দেশের অর্থনীতিক মুক্তি,রাজনৈতিক মুক্তি, সাংস্কৃতিক মুক্তি।

সবশেষে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আবার নতুন করে সূর্য দেখা দিয়েছে। এই সূর্যই এগিয়ে নিয়ে যাবে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়।

এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এই সেই ঐতিহাসিক স্থান যেখানে একদিন সাত কোটি জোড়া চোখ একদিন উন্মুখ হয়ে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ শুনেছিলো। একটি দেশকে এগিয়ে নিতে হলে সে দেশের মুক্তির সংগ্রামের দলকে এগিয়ে নিতে হয়। মুক্তিযুদ্বের শক্তি ক্ষমতায় থাকলে দেশে কি উন্নতি হয়,সেটা জাতির পিতা শিখিয়েছিল। মাত্র সাড়ে তিন বছরে ৭% প্রবৃদ্বি অর্জন করতে পেরেছিলো। পৃথিবীর কোনো ভাষণ এত পরিমাণ বাজানো হয়নি, যেমনটা ৭ মার্চের ভাষণ বাজানো হয়েছে।কিন্তু দুঃখের বিষয় স্বাধীনতার পরে এই ভাষণ নিষিদ্ধ ছিলো।একটি ভাষণ বাঙালির মুক্তির সনদ হিসেবে বাঙালিকে জাগ্রত করেছে।

/ এমআর / এআর

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি