ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশন বাদ দেওয়ার সুপারিশ টিআইবির

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৫১, ২১ আগস্ট ২০১৭

নতুন পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে বিদ্যমান পুলিশ ভেরিফিকেশন পদ্ধতি বাতিলের সুপারিশ করেছে দুর্নীতি নিয়ে কাজ করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ (টিআইবি) এসময় পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে সেবাগ্রহিতাদের হয়রানি দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে প্রতিষ্ঠানটি।

টিআইবি বলছে, ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা ওই ব্যবস্থা নতুন পাসপোর্টের আবেদনকারীদের তিন চতুর্থাংশকেই পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় অনিয়ম ও হয়রানির শিকার হয়ে ‘ঘুষ বা নিয়ম বহির্ভূত টাকা’ দিতে হয়।

সোমবার ধানমণ্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশিত ‘পাসপোর্ট সেবায় সুশাসন: চ্যালেঞ্জ ও করনীয়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরে টিআইবি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জমান বলেন, গবেষণা প্রতিবেদনে আমরা দেখিয়েছি, ভেরিফিকেশনে হয়রানি হচ্ছে তাই এটার কোনো দরকারই নেই। এর পরিবর্তে তিনি নাগরিকের জন্য ‘বায়োমেট্রিক ডাটা ব্যাংক’ এবং ‘অপরাধী তথ্য ভাণ্ডার’ তৈরি করে পাসপোর্ট অফিস ও ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের সংযোগ স্থাপন করার সুপারিশ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবির রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাহনূর রহমান। তিনি বলেন, পাসপোর্ট করাতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হতে হয় পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) ছাড়পত্রের (ভেরিফিকেশন) জন্য।

টিআইবির জরিপে অংশগ্রহণকরীরা বলেছেন, পুলিশের ওই দপ্তর (এসবি) ‘অযথা’ আবেদনপত্রে ত্রুটি খুঁজে বের করার পাশাপাশি জঙ্গি কার্যক্রম বা অন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা বলে ভয় দেখায়। বাড়িতে না গিয়ে চায়ের দোকান বা থানায় ডেকে পাঠায়। ঘুষ দাবি করে এবং ক্ষেত্রবিশেষে তা বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে বলে।

এসময় জানানো হয়, টিআইবির জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৫৫ দশমিক ২ শতাংশ পাসপোর্ট সংশ্লিষ্ট কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হওয়ার কথা বলেছেন।

এর মধ্যে ৪৫ দশমিক ৩ শতাংশ ঘুষ বা নিয়ম বহির্ভূত অর্থ দিতে বাধ্য হয়েছেন। আর ২৭ শতাংশ অযথা সময়ক্ষেপণের শিকার হওয়ার এবং ২ দশমিক ২ শতাংশ পাসপোর্টগ্রহীতা সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব পালনে অবহেলার কথা বলেছেন।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি ও অনিয়ম হয় পুলিশ ভেরিফিকশনের ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে ৭৬ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা এ কাজের জন্য অনিয়ম ও হয়ারনির শিকার হওয়ার কথা বলেছেন।

৭৫ দশমিক ৩ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, ভেরিফিকেশনের জন্য তাদের গড়ে ৭৯৭ টাকা ঘুষ বা নিয়ম বহির্ভূত টাকা দিতে হয়েছে।

তবে পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতি আগের তুলনায় কমেছে বলে টিআইবির তথ্যে উঠে আসে।

টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল বলেন, সেই ঔপনিবেশিক আমল থেকে এই ভেরিফিকেশনের বিষয়টি চলে আসছে। আগে কোনো কিছু করতে হলেই বলা হত- পুলিশের কাছে থেকে চারিত্রিক সনদপত্র লাগবে। সেখানে লেখা থাকত- ‘ওই ব্যক্তি কোনো রাষ্ট্রবিরোধী কাজে জড়িত নয়’। এখন এই গণতান্ত্রিক সময়েও জনগণের প্রতি রাষ্ট্রের যে অবিশ্বাস সেটা রয়ে গেছে।

 

//আর//এআর


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি