ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

প্রথা বিরোধী লেখক আহমদ ছফার জন্মদিন আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৪৮, ৩০ জুন ২০১৮

গত শতাব্দীর শেষার্ধে যারা মুক্তচিন্তা-কর্মে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির জগৎকে সমৃদ্ধ করেছেন তাদের অন্যতম আহমদ ছফা। আজ শনিবার বরেণ্য লেখকের জন্মদিন।

আহমদ ছফা ১৯৪৩ সালের ৩০ জুন চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার গাছবাড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার লেখায় বাংলাদেশি জাতিসত্তার পরিচয় প্রাধান্য পায়। তিনি ২০০২ সালে সাহিত্যে মরণোত্তর একুশে পদক লাভ করেন। জীবদ্দশায় আহমদ ছফা তার প্রথাবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গির জন্য বুদ্ধিজীবী ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিশেষভাবে আলোচিত ও সমালোচিত ছিলেন।

শুধু লেখক হিসেবেই নন; বরং সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠক হিসেবেও আহমদ ছফা মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ১৯৭১ সালে ‘লেখক সংগ্রাম শিবির’ গঠন এবং এর বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনায় ভূমিকা রাখেন আহমদ ছফা। পরে কলকাতায় গিয়েও মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে ‘দাবানল’ নামের পত্রিকা সম্পাদনা করেন।

মুক্তবুদ্ধির এই সাহসী লেখক ১৯৮৬ সালে জার্মান ভাষার ওপর গোথে ইনস্টিটিউটের ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেন। জার্মান জ্ঞানই তাকে গোথের অমরকর্ম ‘ফাউস্ট’ অনুবাদে সাহস জুগিয়েছে। গান, গল্প, উপন্যাস, কবিতা, প্রবন্ধ, অনুবাদসহ সাহিত্যের প্রায় প্রতিটি শাখা মিলিয়ে ৩০টির বেশি গ্রন্থ রচনা করেন তিনি।

জীবদ্দশায়ই আহমদ ছফা রচনাবলি প্রকাশ শুরু হয়। তার রচনাবলী ৯ খন্ডে প্রকাশিত হয়েছে। আহমদ ছফা`র প্রথম উপন্যাস ‘সূর্য তুমি সাথি’ ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত হয়। এছাড়া তার উল্লেখযোগ্য রচনাবলী হলো- মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ‘অলাতচক্র’ (১৯৯৩), বুদ্ধিবৃত্তির নতুন বিন্যাস (১৯৭২), ‘ওঙ্কার’ (১৯৭৫), বাঙালি মুসলমানের মন (১৯৮১), একজন আলী কেনানের উত্থান-পতন (১৯৮৮), অলাতচক্র (১৯৯৩), গাভী বিত্তান্ত (১৯৯৫), অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী (১৯৯৬), পুষ্পবৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণ (১৯৯৬), ফাউস্ট (১৯৮৬), যদ্যপি আমার গুরু (১৯৯৮) ইত্যাদি বাংলা সাহিত্যে বিশেষ সংযোজন। তার প্রবন্ধ দেশের রাজনীতি ও ইতিহাসের অনবদ্য দলিল এবং এ ক্ষেত্রে ‘বুদ্ধিবৃত্তির নতুন বিন্যাস’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

আহমদ ছফা`র প্রথা বিরোধীতা ও স্পষ্টবাদীতা ৭০- দশকে অনেককে অনুপ্রাণিত করেছিল। তাঁর সান্নিধ্যে এসে পরবর্তীতে কীর্তির সাক্ষর যারা রেখেছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রয়াত চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান, প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ, ফরহাদ মজহার, শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল, প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ, শিক্ষাবিদ ও গবেষক সলিমুল্লাহ খান অন্যতম।

প্রতিষ্ঠানবিরোধী এ লেখক ও চিন্তাবিদ ১৯৭৫ সালে লেখক শিবির পুরস্কার ও ১৯৯৩ সালে বাংলা একাডেমির সাদত আলী আখন্দ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ২০০১ সালের ২৮ জুলাই অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

আআ / এআর


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি