ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪

ফার্মগেটে বেড়েছে ছিনতাই-পকেটমারি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:২৫, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১২:০৮, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

রাজধানীতে আগে থেকেই ছিনতাই-পকেটমারি হয়ে আসছে। তবে সম্প্রতি এর সংখ্যা বেড়েছে আগের চেয়ে বেশ বলেই জানা যাচ্ছে। অনেকটা বলা যায়,  বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ছিনতাইকারী চক্রগুলো। একটু বেখেয়াল হলেই টাকা মোবাইল বা ল্যাপটপ খোয়াতে হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধের লক্ষণ চোখে পড়েও না তেমন। রাজধানীর প্রায় ১৫০টি ছিনতাই স্পটের মধ্যে ফার্মগেট অন্যতম একটি। জনবহুল এবং ব্যস্ত এলাকা হওয়ায় এখানেই বেশি ঘটছে পকেটমারিসহ অন্যান্য অপরাধ।

ছিনতাইকারী চক্র ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহার করছে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল। এদের টার্গেট নারীদের ভ্যানেটিব্যাগ, হাতব্যাগ, স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোনসেট। এছাড়াও ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমার মোড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে ছিনাতাইকারীরা। গাড়িতে যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করে উঠার সময় তারা পেছন থেকে ধাক্কাধাক্কি করে সামনের জনকে উঠতে বলে। এ সুযোগে পকেট থেকে হাতিয়ে নেয় মোবাইল, মানিব্যাগ।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী থেকে এসেছিল হাবিবুর রহমান। তিনি ঢাকায় চাকরির জন্য আসেন। তিনি বিশ্বরোডে যাওয়ার জন্য ফার্মগেট থেকে বিআরটিসি বাসে উঠেন। বিজয় স্মরণী গিয়ে আবার ফিরে এসেছেন। তিনি বলেন, একটু আগে এখান থেকে গাড়িতে উঠার সময় কয়েকজন ধাক্কাধাক্কি করেছে। পরে গাড়িতে উঠে ভাড়া দিতে গিয়ে দেখি মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ কোনোটাই নেই।

ছিনতাইকারীরা ভদ্র লোক সেজে রাস্তার বিভিন্ন অংশে অপেক্ষা করতে থাকেন। সুযোগ বুঝে ঝাঁপিয়ে পড়ে যানজটে আটকে থাকা অথবা ধীর গতিতে চলা সিএনজি অটোরিকশা যাত্রীর ওপর। বিশেষ করে নারী যাত্রীরাই তাদের বেশি টার্গেট।

প্রায় প্রতিদিনই ফার্মগেটে পথচারীরা ছিনতাই আর পকেটমারের শিকার হচ্ছেন। অধিকাংশ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা থানা পুলিশের দ্বারস্থ হন না। গত ৩ ফেব্রুয়ারি ছিনতায়ের কবলে পরেন চট্টগ্রাম থেকে আসা জাহেদুল ইসলাম। ভোরে ফার্মগেট থেকে রিকশা করে মতিঝিল যাওয়ার পথে কারওয়ান বাজারের কাছাকাছি যেতেই সাদা মাইক্রোবাস থেকে তার কোলে থাকা ব্যাগটি টান মেরে নিয়ে পালিয়ে যায়। শুধু এ দুটি ঘটনায় নয়, এরকম অনেক ভুক্তভুগির সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তারাও এ ধরনের সমস্যায় পড়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাফিক বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে হলে মানুষকে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে। বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন মানুষিকতা নিয়ে চলাফেরা করে। অনেকের হয়তো কেউ হাসপাতালে ভর্তি থাকে বা কারও অন্য কোনো কাজের ব্যস্ততা থাকে। এ কারণে সবাই সবসময় সচেতন থাকতে পারে না। আর এ সুযোগটাই নেয় ওই চক্রটি।

টাকা ও মোবাইল ফোন নেওয়ার পর দ্রুত তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। ভুক্তভোগী একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, ফার্মগেট থেকে শাহবাগ মোড় পর্যন্ত প্রায়ই যানজট লেগে থাকে। এ সুযোগটা বেশি কাজে লাগায় ছিনতাইকারীরা। তারা ভদ্র লোক সেজে রাস্তার বিভিন্ন অংশে অপেক্ষা করতে থাকেন। সুযোগ বুঝে ঝাঁপিয়ে পড়ে যানজটে আটকে থাকা অথবা ধীর গতিতে চলা সিএনজি অটোরিকশা যাত্রীর ওপর। মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় পেছন থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়াটা নিত্য নৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর ছিনতাই করার পরপরই রাস্তা পেরিয়ে কখনও পূর্ব অংশে অথবা পশ্চিম অংশে চলে যায় ছিনতাইকারীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফার্মগেটের একজন হকার জানান, পুলিশ এসব ছিনতাইকারীদের অনেককেই চেনে। নানা সময় এদের অনেকে আটক হয়েছে পুলিশের হাতে। ছাড়া পেয়ে আবারও শুরু করে ছিনতাই, পকেটমার ও চুরি।

 

এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি