ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

আজ বিশ্ব ফ্যাটি লিভার দিবস

‘ফাস্টফুড’ কালচার এ রোগের কারণ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৩৭, ১২ জুন ২০১৮

আজ বিশ্ব ফ্যাটি লিভার দিবস। এটি এখন বিশ্বজনীন এক রোগ। তবে পশ্চিমা বিশ্বে এর প্রাদুর্ভাব খুবই বেশি।
চিকিৎসকরা বলছেন, অতিরিক্ত ফ্যাট বা কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার গ্রহণের ফলে লিভারে চর্বি জমতে পারে। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে জনপ্রিয় ‘ফাস্টফুড’কালচার এদেশে ফ্যাটি লিভারের প্রাদুর্ভাবের বড় কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, আমেরিকায় পূর্ণবয়স্কদের মধ্যে শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ এবং শিশুদের মধ্যে ১০ ভাগ ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত।
জাপান ও ইতালিতে মোট জনসংখ্যার ৩০ ভাগ থেকে ৫৮ ভাগের ফ্যাটি লিভার রয়েছে। আমাদের দেশেও এ রোগে আক্রান্তদের হার বাড়ছে।
ফোরাম ফর দ্য স্টাডি অব দ্য লিভার পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের পর ফ্যাটি লিভারই এদেশে ক্রনিক হেপাটাইটিসের প্রধান কারণ। একইভাবে আমাদের আরেক গবেষণায় দেখা যায় যে, এদেশে প্রায় ৪ শতাংশ লিভার সিরোসিস রোগী ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পাশ্চাত্যে ফ্যাটি লিভারের মূল কারণ অ্যালকোহল। তবে আমাদের মতো দেশগুলোয় মেদ-ভুড়ি, ডায়াবেটিস, ডিজলিপিডেমিয়া বা রক্তে অতিরিক্ত চর্বি, হাইপারটেনশন বা অতিরিক্ত রক্তচাপ আর হাইপোথাইরয়েডিজমই ফ্যাটি লিভারের মূল কারণ। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি খুবই বেশি।
আমেরিকায় পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায়, ৩৩ ভাগ ডায়াবেটিস রোগীর ফ্যাটি লিভার রয়েছে। অন্যদিকে ৪৯ ভাগ ভারতীয় যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, তারা পাশাপাশি ফ্যাটি লিভারেও আক্রান্ত। হেপাটাইটিস ভাইরাসগুলোর মধ্যে হেপাটাইটিস সি ভাইরাস আনেক সময়ই ফ্যাটি লিভার তৈরি করে থাকে।
কর্টিকোস্টেরয়েড, টেমোক্সিফেন ইত্যাদি ওষুধ দীর্ঘদিন সেবনেও ফ্যাটি লিভার হতে পারে। ফ্যাটি লিভারের আরেকটি বড় কারণ খাদ্যাভাস ও লাইফ স্টাইল। সিডেন্টারি বা আয়েশি জীবনযাপন আর অতিরিক্ত ফ্যাট বা কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খেলে লিভারে চর্বি জমতেই পারে। আমাদের দেশে ইদানীংকার খুবই জনপ্রিয় ‘ফাস্টফুড’ কালচার এদেশে ফ্যাটি লিভারের বাড়তি প্রাদুর্ভাবের সম্ভবত একটি বড় কারণ।
এ রোগ চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার বিভাগের অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল গণমাধ্যকে বলেন, ফ্যাটি লিভার চিকিৎসার মূল লক্ষ্যই হচ্ছে লিভারে সিরোসিস ও ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রতিরোধ করা।
অতিরিক্ত মেদ কমানো ফ্যাটি লিভার চিকিৎসার একটি অন্যতম দিক। তবে খুব দ্রুত, অপরিকল্পিতভাবে ওজন কমালে তাতে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কারণ এর ফলে লিভার সিরোসিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
ওজন কমানোর জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরিকল্পিত ডায়েট কন্ট্রোল, এক্সারসাইজ, ওষুধ সেবন কিংবা প্রয়োজনে অপারেশন করা যেতে পারে। তিনি বলেন, এখনও এজন্য শতভাগ কার্যকর কোনো ওষুধ আবিষ্কৃৃত হয়নি। তবে বাজারে বেশ কিছু ওষুধ আছে, যা ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসায় উপকারী বলে প্রমাণিত।
/ এআর /


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি