ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

বিসিএস ক্যাডার জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ নীতিমালায় পরিবর্তন আসছে

প্রকাশিত : ১৭:৫৮, ২৩ এপ্রিল ২০১৮

পরিবর্তন আসছে বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাদের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ প্রক্রিয়ায়। শুরু থেকে শুধুমাত্র বিসিএস পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা হলেও এখন এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে প্রশিক্ষণের ফলাফলও। ক্যাডার সার্ভিস নিয়োগ পাওয়ার পর প্রশিক্ষণের ফলাফল তার জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণে অনেকটাই অবদান রাখবে। এমন একটি খসড়া প্রস্তাবনা প্রণয়ণ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিবিএস পরীক্ষা ও প্রশিক্ষণের ফলাফল সমন্বয়ে আন্তঃক্যাডার কর্মকর্তাদের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ হবে। এমন বিধান রেখেই বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস জ্যেষ্ঠতা বিধিমালা-১৯৮৩ সংশোধন হচ্ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই সংশোধনীর খসড়া তৈরি করেছে। এখন যাবতীয় প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষ করে সংশোধনী আনা হবে।

নতুন প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে, বিসিএস নিয়োগকালীন পরীক্ষার ফলাফলের সঙ্গে বিভিন্ন মেয়াদি প্রশিক্ষণের সমন্বয় তাদের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা হবে। এক্ষেত্রে পরীক্ষার ৬০ শতাংশ আর বিভিন্ন প্রশিক্ষণে ৪০ শতাংশ নম্বর নির্ধারণ করা হবে। প্রশিক্ষণ ও পরীক্ষার উপর নির্ধারিত নম্বরের ভিত্তিতে তাদের আন্ত:ক্যাডার জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা হবে। তবে বর্তমানে শুধুমাত্র জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা হয় বিসিএস পরীক্ষার ফলের উপর ভিত্তি করে। তবে পদোন্নতির ক্ষেত্রে এমন বিষয় দেখা হয় না। এখানে নানা বিষয় দেখা হয়। এর মধ্যে জ্যেষ্ঠতা হচ্ছে একটি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন,  এবিষয় আলোচনা চলছে। বিধিমালা সংশোধনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এক্ষেত্রে বিধিগত কোন জটিলতা আছে কি-না তা খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে।

প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, এটি একটি ভালো উদ্যোগ। তবে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে নিয়োগপ্রাপ্তদের মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পদায়ন না করে সরাসরি পিএসসিতে অথবা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে যোগদানের ব্যবস্থা করতে হবে। একই ব্যাচের সব কর্মকর্তার প্রশিক্ষণ অভিন্ন সিলেবাসে করার বিষয়টিও বিধিমালায় যুক্ত করা উচিত।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিসিএস কর্মকর্তাদের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণে বিদ্যমান পদ্বতি সংশোধনে প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনা চলছিল। পরে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটির বৈঠকে ক্যাডার সার্ভিসে জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণের প্রক্রিয়া সংশোধনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তা আরও পর্যালোচনা করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি কয়েকটি সভা করে বিধিমালা সংশোধনের সুপারিশ করে।

ওই সূত্র আরও জানায়, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের জন্য একটি প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করা হচ্ছে। এছাড়া প্রশিক্ষণের সিলেবাস হবে অভিন্ন। বর্তমানে পৃথক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে পৃথক সিলেবাসে কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এর ফলে মূল্যায়ন প্রক্রিয়াও সামঞ্জস্য থাকে না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে একটি মাত্র প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে প্রশিক্ষণ প্রার্থীদের মূল্যায়নের নিয়ম করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ-পরবর্তী মেধাক্রম অনুযায়ী নিয়োগ, পদায়ন, পদোন্নতি ইত্যাদি বিষয়েও নীতিমালা তৈরির বিষয়টিও থাকছে ওই বিধিমালায়।

এ বিষয় সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসির) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আ ই ম নেছার উদ্দিন বলেন, কমিশনের মতামত ইতোমধ্যে প্রতিবেদন আকারে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে আমার কোনো মতামত নেই। তিনি আরও বলেন, প্রশিক্ষণ শেষে মেধা স্কোর সমন্বয় করতে হলে বিদ্যমান বিধিমালা বিশেষ করে বিসিএস নিয়োগবিধি ১৯৮১, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস জ্যেষ্ঠতা বিধিমালা ১৯৮৩ সংশোধন প্রয়োজন। এটি করতে জ্যেষ্ঠতার সাধারণ নীতিমালা যাতে সাংঘর্ষিক না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

টিআর/ এআর


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি