ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪

বড় দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে : টিআইবি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৫৫, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

বাংলাদেশে নাগরিকদের মৌলিক স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার প্রবণতা বিদ্যমান রয়েছে। ২০১৬ সালে দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন ১৯৫ জন, ২০১৫ সালে সে সংখ্যা ছিল ১৯২ জন। এছাড়া দেশে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে। বড় দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ উঠেছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ‘টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট ’১৬ : দুনীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন সংশ্লিষ্ট লক্ষ্যের উপর বাংলাদেশের প্রস্তুতি, বাস্তবতা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে বাংলাদেশের এমন চিত্র উঠে এসেছে। রোববার টিআইবির সম্মেলন কক্ষে এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে তথ্য ও মতামত প্রকাশের বিরুদ্ধে কিছু বিধানের অপব্যবহার করা হচ্ছে। বিশেষ করে যোগাযোগ ও প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা উদ্বেগজনক অপব্যবহার করা হচ্ছে। আইনের ওই ধারা বাতিলের দাবিও জানানো হয়েছে।

বিভিন্ন উদ্যোগের পরও বাংলাদেশে দুনীতি ও ঘুষ, অর্থপাচার, মৌলিক স্বাধীনতার ব্যত্যয় ও মানবাধিকার লঙ্ঘন অব্যাহত রয়েছে। জাতীয় শুদ্ধাচার কাঠমোর অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো প্রত্যাশিত পর্যায়ে কার্যকর নয়। এর পেছনে দলীয় রাজনৈতিক প্রভাব, কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা, নির্বাহী বিভাগ ও প্রশাসনের আধিপত্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেই জনগণের কাছে জবাবদিহিতার কোনো কাঠামো নেই এবং এসব প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ জবাবদিহিতা ব্যবস্থা দুর্বল উল্লেখ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশ পর্যান্ত নয় বলেও অভিযোগ করা হয়েছে এ প্রতিবেদনে।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে আইনের অনুপস্থিতি রয়েছে- এমন চিত্র তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে আইনের প্রয়োগ সীমিত বা চর্চায় ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া কোনো কোনো ক্ষেত্রে আইনের অপব্যবহার পরিলক্ষিত হয়েছে। দলীয় বিবেচনায় আইনের প্রয়োগ হচ্ছে।

আইনি সংস্কারের সুপারিশে বলা হয়েছে, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান ও সদস্যদের নিয়োগে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট যোগ্যতার মাপকাঠি নির্ধারণ করা এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ নিশ্চিত করা, সরকারি কর্মচারীদের স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা, অধিকার ও দক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য পাবলিক সার্ভিস আইন প্রণয়ন, পুলিশকে জনবান্ধব করতে পুলিশ আইন ১৮৬১ সংস্কার, বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ ধারা বাতিল করণ, নির্বাচন কমিশনের গঠন, কমিশনের নিয়োগ প্রক্রিয়া ও কার্যক্রম নিয়ে আইন প্রণয়ন, তথ্য প্রযুক্তি আইন ৫৭ ধারা বাতিল করতে হবে।

প্রতিষ্ঠানিক সুপারিশে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, দুনীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক সংস্থাগুলোর জনবল কাঠামো পর্যালোচনা করে জনবল বৃদ্ধি, প্রেষণে নিয়োগের পরিবর্তে নিজস্ব কর্মীদের পদায়ন, দক্ষতা অনুযায়ী সুবিধা প্রদান, আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি- দুনীতিদমনে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী প্রতিষ্ঠানের (দুদক, সিএজি, বিচার বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা) জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে।

লিখিত বক্তব্যে গবেষণার প্রেক্ষাপট ও যৌক্তিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন,২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত মেয়াদে তথ্য সংগ্রহ করে গবেষণাটি করা হয়েছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যারা বড় ধরনের অর্থ পাচার করেন তাদের আইনের আওতায় না এনে সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। দেশের বড় দুনীতির সঙ্গে জড়িত বিচারের ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে বলে জানান তিনি।

টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, আইনের চোখে সকল নাগরিক সমান হলেও দেশে সব স্তরে বৈষম্য-বিভাজন ও অনিয়ম বিদ্যমান। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিকভাবে কাজ করতে পারছে না। সব জায়গায় এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।

/কেআই/এআর


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি