ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ভাতা পেতে যাচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধের পর বাহিনীতে ফেরা সদস্যরাও

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:০৯, ২১ নভেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৬:১৪, ২১ নভেম্বর ২০১৭

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশের বিভিন্ন বাহিনীতে যোগ দেওয়া সামরিক সদস্যরাও ভাতা পাবেন। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের উত্তরাধীকারীদের জন্য আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকেই এ ভাতা প্রযোজ্য হবে।

মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ততকালীন পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসসহ (ইপিআর) পাকিস্তানের বিভিন্ন বাহিনীতে কর্মরত বাঙ্গালী সদস্যরাও বাংলাদেশের হয়ে যুদ্ধে অংশ নেন। ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীনের পর বাংলাদেশ সরকারের অধীন বিভিন্ন বাহিনীতে তারা যোগদান করেন। কিন্তু বাকি মুক্তিযোদ্ধারা নির্দিষ্ট হারে ভাতা পেলেও, ভাতা পাচ্ছিলেন না নিয়মিত বাহিনীতে থাকা এসব মুক্তিযোদ্ধারা। এ কারণে বিভিন্ন সময়ে তাদের ভাতা দিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানানো হচ্ছিল।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধের পরে বাহিনীতে যোগদান করা এসব মুক্তিযোদ্ধাদের প্রায় সবাই এখন অবসরে গেছেন। অনেকের পরিবার বেশ কষ্টে আছেন। আমরা সেজন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাহিনীতে যারা ছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধে যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন সেই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলোর ভাতার ব্যবস্থা আমরা করব।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জীবনমান উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানি ভাতা নয়শ’ টাকা থেকে পর্যায়ক্রমে বাড়িয়ে দশ হাজার টাকা করা হয়েছে। ভাতা গ্রহণকারীর সংখ্যা এক লাখ থেকে বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ৬৭৬ জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে বাড়ানো হয়েছে। বীরশ্রেষ্ঠদের ভাতা ৩০ হাজার টাকা, বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্তদের জন্য ২৫ হাজার টাকা, বীর বিক্রমদের জন্য ২০ হাজার এবং বীর প্রতীকদের ভাতা ১৫ হাজার টাকায় টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।

এছাড়া শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার এবং যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানি ভাতা ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৫ হাজার টাকা করার কথাও তার বক্তব্যে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, “ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের জন্য শিক্ষা ভাতা, কন্যা সন্তানের ক্ষেত্রে বিবাহ ভাতা, উতসব ভাতা, দেশে-বিদেশে চিকিতসাসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধার সরকার দিচ্ছে”।

সীমিত সামর্থের মধ্যেও সরকার মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারগুলোর মর্যাদা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের সাতজন বীরশ্রেষ্ঠর উত্তরাধিকারী এবং খেতাবপ্রাপ্ত ১০১ জন মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের হাতে চেক ও শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়া সেনাবাহিনীর দশজন, নৌ বাহিনীর একজন ও বিমান বাহিনীর একজনকে ২০১৬-১৭ বছরের জন্য শান্তিকালীন পদক এবং সেনাবাহিনীর দশজন, নৌ বাহিনীর দুইজন ও বিমান বাহিনীর দুইজনকে ২০১৬-১৭ সালের পদক তুলে দেন সরকারপ্রধান। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান।

অনুষ্ঠান শেষে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিন বাহিনীর প্রধানরা তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) তারিক আহমদ সিদ্দিক, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার।

//এস এইচ এস// এআর


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি