ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

মঙ্গল যাত্রার প্রস্তুতি স্বরূপ ৮ মাস আগ্নেয়দ্বীপে ৬ অভিযাত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:১৪, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৬:৩৩, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

মঙ্গল অভিযানের বছরটা আগেই ঘোষণা করে রেখেছে নাসা। আগামী ২০২৩ সালের মঙ্গলে পাড়ি দিয়ে অভিযাত্রীরা যাতে কোনো সমস্যায় না পরেন সেজন্য সব রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে নিশ্চিত হতে চাচ্ছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা।

মূত্রের অণুগুলো ভেঙে তা থেকে কীভাবে খাবার তৈরি করতে হয়, টানা অনেক দিন ভারশূন্য থাকার পরীক্ষার পাশাপাশি গত ৮ মাস ধরে চলছিল ধৈর্যের এক দীর্ঘ পরীক্ষা। গতকাল শেষ হয়েছে পরীক্ষার এই পর্ব।    

পরিবার থেকে বহু দূরে জনমানবহীন পরিবেশে কীভাবে থাকতে পারে মানুষ, তা দেখতে গত জানুয়ারিতে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মৌনা লোয়া নামে এক জনশূন্য স্থানে গিয়েছিলেন নাসার ছ’জনের একটি দল। দ্বীপটিতে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সক্রিয় আগ্নেয়গিরি, যদিও আপাতত: সেটা ঘুমিয়ে রয়েছে। টানা আট মাস সেখানে কাটিয়ে রোববার লোকসমাজে, চেনা পরিবেশে ফিরে এসেছেন ৬ অভিযাত্রী।

নাসা জানাচ্ছে, দীর্ঘদিন একা থাকতে থাকতে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতে পারেন অভিযাত্রীরা। পড়তে পারেন খাদ্যাভাবে।

জনহীন দ্বীপে ১২০০ বর্গফুটের উল্টোনো বাটির মতো দেখতে একটি বাড়ি। গত ক’মাস সেখানেই কাটিয়েছেন চারজন পুরুষ ও দুই মহিলা গবেষক। বাড়িটিতে ছোট দু’টি ঘর, ছ’জনের ছোট-ছোট ৬টি ঘুমোনোর জায়গা, একটি রান্নাঘর, গবেষণাগার, স্নানের ঘর ও দু’টি শৌচাগার।

মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলের কথা মাথায় রেখে সকলেই এই আট মাস স্পেসস্যুট পরে কাটিয়েছেন। বাড়ি থেকে বেরোলে, সব সময় বেরিয়েছেন দল বেঁধে। লালগ্রহে বেঁচে থাকার গুরুত্বপূর্ণ শর্ত খাবার সংস্থান। হাওয়াই-পরীক্ষায় সে কাজটি করেছেন দলের জীববিজ্ঞানী জোশুয়া এহরিল্চ। ফলিয়েছেন গাজর, গোলমরিচ, বাঁধাকপি, সর্ষে, টমেটো, আলু, পার্সলে। মঙ্গল থেকে পৃথিবীতে কোনো সিগন্যাল পৌঁছায় ২০ মিনিট পর। মৌনা লোয়া দ্বীপেও ছিল সেই ব্যবস্থা।

পরস্পরের মধ্যে সুসম্পর্ক ও তালমিল রাখাটাও ছিল পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষ করে দলের সকলেই ছিলেন অল্প বয়সী।

হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কিম বিনস্টেড বলেন, ‘‘একটা কথা আমাদের জানাই ছিল, ছয়জন লোক এক সঙ্গে থাকলে ঝামেলা বাঁধবেই। আমাদের সেরা দল পাঠালেও এটা হবেই। তাই মঙ্গলে এমন একটা দল পাঠাতে চাইছি, যারা ঝগড়া করলেও শেষমেশ নিজেদের মধ্যে মিটমাট করে নিতে পারবে। সেই বোঝাপড়াটা যাতে একে অপরের সঙ্গে থাকে।’’

গত আট মাস তারই মহড়া দিয়েছেন জোশুয়া এহরিল্চ, লরা লার্ক, স্যামুয়েল পেলার, জেমস বেভিংটন ও অ্যানসলে বার্নার্ড। তাঁদের মেজাজ-মর্জি সামলাতে সাহায্য নেওয়া হয়েছে যন্ত্রের। কথাবার্তা ও উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ সেন্সর। গলার স্বর চড়লেই যন্ত্র সজাগ করে দিয়েছে, ‘শান্ত হও’। এমনকি, কেউ যদি কারও সঙ্গে কথা না বলে কিংবা চুলোচুলি করে, সেটাও ধরা পড়েছে যন্ত্রে। সেই অনুযায়ী বার্তা দিয়েছে।

সম্প্রতি এক ভিডিও মেসেজে লরা বলেছিলেন, ‘‘এই সব সমস্যা তো থাকবেই, তবে একটু চেষ্টা করলেই সব বাধা পেরোনো যাবে। আমরাই সেটা করে দেখাব।

সূত্র:আনন্দবাজার

এম/ডব্লিউএন

 

 

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি