ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

যেসব কারণে প্রশ্ন ফাঁস

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:০২, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

প্রশ্নফাঁস নিয়ে করণীয় নির্ধারণে তিনজন মন্ত্রী এবং ছয়জন সচিবের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে ছয়টি কারণ চিহ্নিত হয়েছে বলে বৈঠকে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। আজ মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে লিখিত পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করতে হলে এর উৎস এবং পরীক্ষা গ্রহণ পদ্ধতির ত্রুটিসমূহ চিহ্নিত করা প্রয়োজন। প্রশ্নপত্র ফাঁসের কয়েকটি বড় ক্ষেত্র রয়েছে। সেগুলো হলো-

প্রথমত : বিজি প্রেসে প্রশ্ন কম্পোজ, এডিট, প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং পর্যায়ে প্রায় ২৫০ জনের মতো কর্মী প্রশ্ন দেখতে পারে। তারা প্রশ্ন কপি করতে না পারলেও স্মৃতিতে ধারণ করা অসম্ভব ব্যাপার নয়। ৩-৪ জনের একটি গ্রুপের পক্ষে এভাবে প্রশ্ন ফাঁস করা সম্ভব হতে পারে।

দ্বিতীয়ত : নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট/দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে ট্রেজারি/ নিরাপত্তা হেফাজত হতে প্রশ্ন গ্রহণ করে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, অনেক কেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যথাযথভাবে দায়িত্বপালন করছেন না মর্মে অভিযোগ রয়েছে।

তৃতীয়ত : অতিরিক্ত কেন্দ্র অনুমোদন দেয়া হয়েছে, যার ব্যবস্থাপনা করার মতো পর্যাপ্ত জনবল নেই; তাছাড়া ভেন্যুগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মূল কেন্দ্র হতে দূরবর্তী স্থানে অবস্থিত। ফলে ৩০ মিনিট সময়ের অধিক পূর্বে কেন্দ্র সচিবরা প্রশ্ন খুলতে বাধ্য হচ্ছেন।

চতুর্থত : পরীক্ষার্থী কিংবা পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্তদের স্মার্টফোন নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। গুটিকয়েক শিক্ষক/ কর্মচারীর কারণে গোটা প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে পড়ছে।

পঞ্চমত : সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁসকারীদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা আরও বৃদ্ধি করার সুযোগ রয়েছে। এটা পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ১৫ দিন পূর্ব হতে করা সম্ভব হলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।

গোয়েন্দা সংস্থার লোকবল ও অবকাঠামোগত ও প্রযুক্তিগত স্বল্পতার কারণেও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নজরদারি করা সম্ভব হচ্ছে না মর্মে প্রতীয়মান হয়। দুষ্কৃতকারীদের তাৎক্ষণিক গ্রেফতার ও শাস্তি প্রদান করতে না পারায় অন্যরাও অপরাধ করতে ভয় পাচ্ছে না।

ষষ্ঠতম : বিটিআরসি কর্তৃক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন আপলোডকারীদের চিহ্নিত করা যাচ্ছে না এবং সন্দেহজনক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

যৌথসভার বৈঠকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোজাম্মেল হক খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরীও অংশ নেন।

এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

আরকে/টিকে


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি