ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

রাখাইনে নতুন করে অভিযান, ভিটেমাটি ছেড়ে বাংলাদেশে ঢুকছে রোহিঙ্গারা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৩২, ১৭ আগস্ট ২০১৭ | আপডেট: ১৭:১৩, ১৭ আগস্ট ২০১৭

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আবারও অভিযান শুরু করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। পশ্চিম রাখাইন রাজ্যে কথিত মুসলিম বিদ্রোহী এবং বিচ্ছিন্নতাকামীদের নির্মূল করতে নতুন করে এই সার্জিক্যাল অপারেশন বলে এক খবরে জানিয়েছে সাউথ এশিয়া মনিটর। আর নতুন এই অভিযানে ৫০০-এর বেশি সৈন্য যোগ দিয়েছে।

সাম্প্রতিক অভিযানের বিষয়ে রোহিঙ্গা নেতারা বলছেন, রাখাইনে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি ও সামরিক স্থাপনা বাড়ানোর ফলে গত কয়েকদিনে শত শত রোহিঙ্গা আবারও বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে। এছাড়া পাঁচ শতাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে তাদের কঠিন যাত্রা শুরু করেছে। যাদের অধিকাংশেরই অভিযোগ তারা নতুন করে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।

এবার সাউথ এশিয়া মনিটরের প্রতিবেদক ল্যারি জাগান জানাচ্ছেন, বৃহস্পতিবার ৩৩তম লাইট ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের সদস্যদের মোতায়েন শুরু হয়। খারাপ আবহাওয়ার মধ্যেও হেলিকপ্টারে করে এসব সৈন্যকে রাজ্যের রাজধানী সিত্তইতে নামানো হয়। পরদিন তাদেরকে মোতায়েন করা হয় মংডুতে। সেখানে নামার পর থেকেই তারা ওই এলাকায় নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনী বা তাতমাদাও মৌখিকভাবে উত্তর রাখাইনের গ্রামবাসীদেরকে উত্তরের ম্যায়ু পার্বত্য এলাকায় প্রবেশ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে বলে সাউথ এশিয়া মনিটরের খবরে জানানো হয়েছে। কারণ, সামরিক বাহিনী মনে করছে, এখানেই ‘সন্ত্রাসীরা’ লুকিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে। কয়েক মাস ধরে সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী এই এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে। তারা সন্দেহভাজন মুসলিম জঙ্গিদের খুঁজছে।

গত বছরের অক্টোবরে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা উচ্ছেদে কঠোর অভিযান শুরু করে। কয়েকমাস ব্যাপী চলা অভিযানে সেনাবাহিনীর নিপীড়ন থেকে বাঁচতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েন।

মিয়ানমার সেনাবাহিনী রক্তাক্ত এ অভিযানের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নির্মূলের চেষ্টা করেছে বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ। রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা আবু তইয়ুব বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, তিনি পরিবারের সাত সদস্যসহ পালিয়ে এসেছেন। সেনাবাহিনী রাখাইনে তাদের বাড়ি-ঘর ভেঙে দিয়েছে, তরুণদেরকে গ্রেফতার করছে।

২৫ বছর বয়সী তইয়ুব বলেন, ‘তারা আমার ছোট ভাইকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গেছে। আমার দুই বছরের ছেলেকে লাথি মেড়ে আহত করেছে।’

গত বছরের অক্টোবরে রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর এ সংখ্যা আরো বাড়তে থাকে। ওই সময় অন্তত ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ধর্ষণ, হত্যা ও রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করছেন বলে রোহিঙ্গা নেতারা দাবি করছেন।

বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি বলছে, নাফ নদীর অপর প্রান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সমাবেশ বাড়ানোর খবরে তারা সীমান্তে টহল বাড়িয়েছে।

রাখাইনের নিরাপত্তা বজায় রাখতে সেখানে সেনাবাহিনীর কয়েকটি ব্যাটালিয়ন পৌঁছানোর ঘটনায় গত সপ্তাহে উদ্বেগ প্রকাশ করেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়ানঘি লি।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের পর্যটন জেলা কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী আশ্রয়কেন্দ্র ও অস্থায়ী বসতিতে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন। কক্সবাজারের সঙ্গে মিয়ানমারের রাখাইনের সীমান্ত রয়েছে।

ডব্লিউএন


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি