ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪

শহীদ মিনারে মানুষের ঢল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১৬, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৮:৩৫, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নেমেছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। হাজার হাজার মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বাংলা মায়ের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।

যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাঙালি পেয়েছিল ভাষার অধিকার, দেখেছিল এক স্বাধীন সোনার বাংলার স্বপ্ন। সেইসব শহীদদের স্মরণে বুধবার প্রথম প্রহরেই জেগে উঠে বাঙ্গালি চেতনায় উদ্বুদ্ধ কোটি জনতা। `একুশ মানে অহংকার, একুশ মানে মাথা নত না করা` এই প্রত্যয়ের প্রতিধ্বনিতে রফিক, জব্বার, শফিউরদের স্মরণ করছে পুরো জাতি।

রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালির রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল রাজপথ। রক্তের দামে এসেছিল বাংলার স্বীকৃতি আর তার সিঁড়ি বেয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় বাঙালির এই আত্মত্যাগের দিনটি এখন আর বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ নয়; ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে সারা বিশ্বে।

বাঙালির ভাষার সংগ্রামের একুশ এখন বিশ্বের সব ভাষাভাষীর অধিকার রক্ষার দিন। গর্ব আর শোকের এই দিনটি বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করছে জাতি, যার সূচনা হয়েছিল ১৯৫২ সালে। তখন থেকে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় হাজারো জনতা। 

মঙ্গলবার দিবাগত রাতে একুশের প্রথম প্রহরে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  দুজনই সেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেন। এরপর রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশি কূটনীতিকদের শ্রদ্ধা জানানোর পর ১২টা ১৮ মিনিটে সর্বসাধরণের জন্য উন্মুক্ত করা হয় শহীদ মিনার।

মন্ত্রিপরিষদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়েও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ। পরে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা বাংলা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ইউজিসি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নানের নেতৃত্বে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এর আগে মঙ্গলবার মধ্যরাতে শহীদ মিনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঘিরে সাধারণ মানুষের ঢল নামে। শ্রদ্ধা নিবেদন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কমকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে প্রভাত ফেরিতে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকল সদস্যরা।

এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমরে একুশে হলসহ, বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থী, বিভিন্ন বিভাগের পক্ষ থেকে শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। বেসরকারি অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়, এনসিটিবি, বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটি, নর্দান ইউনিভার্সিটিসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় শ্রদ্ধা জানায়।

শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর লক্ষ্যে শহীদ মিনারের পশ্চিম পাশের প্রবেশ পথ থেকে শুরু করে পলাশী পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। মহান ভাষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি হৃদয় নিংরানো শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ স্বরূপ শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের লক্ষ্যে শহীদ মিনারের দিকে এগিয়ে আসছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

 

আর/ এমজে


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি