ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

শীতের সঙ্গে বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:৫২, ৫ ডিসেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১০:১৭, ৬ ডিসেম্বর ২০১৭

মহাখালীর আইসিসিডিডিআর’বিতে ডায়রিয়ার রোগীদের ভিড়

মহাখালীর আইসিসিডিডিআর’বিতে ডায়রিয়ার রোগীদের ভিড়

শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশে শুরু হয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। আবহাওয়া পরিবর্তন এবং নানা কারণে বাড়ছে ডায়রিয়া। রাজধানীর বিভিন্ন হসপিটালে বর্তমানে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত ইন্টারনেশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিস রিচার্স (আইসিডিডিআরবি), বাংলাদেশ গিয়ে দেখা যায় প্রতিদিন সেখানে অনেক রোগী ভর্তি হচ্ছে। ঢাকা এবং এর আশে-পাশের জেলা থেকে শিশুকে নিয়ে ছুটে আসছেন সবাই।

হাসপাতালের বাইরে বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পায়চারী করছেন রুপগঞ্জ থেকে আসা জাকির হোসেন। তিনি বলেন, আমার বাচ্চার হঠাৎ করে পাতলা পায়খানা শুরু হয়। এক বছরের বাচ্চা। প্রথমে এলাকার ডাক্তার দেখাই। এতে কিছু না হলে তাড়াতাড়ি এসে এই হসপিটালে ভর্তি করি। আজকে চার দিন এই জায়গায় পড়ে আছি। এখন কিছুটা ভালো আছে।

হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায় অসংখ্য রোগী ভর্তি হয়ে আছে। টাঙ্গাইল থেকে এসেছেন ১২ মাসের এক শিশু নিয়ে বাবা মা। তারা জানান, গত সাত দিন ধরে তাদের বাচ্চা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে এসেছেন আসমা বেগম। তিনি বলেন, আমরা গ্রামে থাকি। আমার বাচ্চার বয়স এক মাস একদিন। ডায়রিয়া শুরু হলে এক প্রতিবেশির পরামর্শে আমরা তাড়াতাড়ি এখানে চলে আসি।

এভাবে সারাদেশেই এখন ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। রাজধানীর এই আইসিডিডিআরবি হসপিটালে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ রোগী ভর্তি হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্র থেকে জানা যায়, সেখানে ২ ডিসেম্বর ভর্তি হয় ৫০১ জন রোগী। ৩ ডিসেম্বর ৪৫১ জন। ৪ ডিসেম্বর ৪৭০ জন। এ রকম প্রতিদিন রোগী ভর্তি হচ্ছে।

হাসপাতালে কর্তব্যরত একজন ডাক্তার বলেন, আমাদের এখানে এখন প্রতিদিনই অসংখ্যা রোগী ভর্তি হচ্ছে। এর মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন বয়সী রোগীও আছে তবে শিশু রোগী প্রায় ৯০ শতাংশ।  

বর্তমানে ডায়রিয়া কেন বেশি হচ্ছে এবং এ থেকে কিভাবে রক্ষা পাওয়া যায় জানতে চাইলে আইসিডিডিআরবি হাসপাতালের সিনিয়র বিজ্ঞানী ও চাইল্ড ম্যালনিউট্রিশন এর প্রধান ডা. মো. ইকবাল হোসেন বলেন, অনেক কারণেই ডায়রিয়া হয়ে থাকে। সাধারণত পচা-বাসি খাবার থেকে বা বাড়ির পাশের কোনো মলমূত্র থেকে যেখানে মাছি বসছে এবং পরে সেই মাছি এসে খাবারে বসছে, টয়লেটে যাচ্ছে কিন্তু ভালোভাবে হাত পরিস্কার করছে না। পরে এসে সেই হাত দিয়ে খাবার বানাচ্ছে বা বাচ্চাকে খাওয়াচ্ছে। আবার অনেক সময় বাচ্চাকে খাওয়ানোর ফিডার ভালো মতো পরিস্কার থাকে না। নিপলের মধ্যে জীবাণু থাকে। সেখান থেকেও ডায়রিয়া হতে পারে।

ডায়রিয়ায় কী করবেন : ডায়রিয়া হলে এর চিকিৎসা কি হবে এ সম্পর্কে ডা. মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ডায়রিয়া হলে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে-

এক. পায়খানা বেশি হলে স্যালাইন বেশি খাওয়াতে হবে। আর কম পায়খানা হলে স্যালাইনও কম খাওয়াতে হবে।  

দুই. পাঁচ বছরের নিচের বাচ্চারা জিঙ্ক খাবে। একটা টেবলেট পানির মধ্যে গুলে খেয়ে নিবে। আর ৬ মাসের কম বয়সী বাচ্চাদের টেবলেটের আধা অংশ পানিতে গুলে খাওয়াবে। এক্ষেত্রে সিরাপও খাওয়াতে পারে।  

তিন. স্বাভাবিক সব খাবার খাবে।

তবে সাধারণ ডায়রিয়া হলে রোগীকে কোনো ধরণের এন্টিবায়োটিক খাওয়ানো যাবে না। সমস্যা বেশি দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ সেবন করবে। শাক সবজি এ সময় না খাওয়াই ভালো। তবে শীতে বাচচাদের রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়া বেশি হয়। এথেকে সাবধান থাকতে হবে।

 

এসএইচ/  

 

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি