ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪

সাত খুন : র‌্যাবের তিন কর্মকর্তাসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৫৯, ২২ আগস্ট ২০১৭ | আপডেট: ২২:০৬, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের মামলায় সাবেক তিন র‌্যাব কর্মকর্তা ও  সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেনসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে হাই কোর্ট। জজ আদালতের দেওয়া ২৬ জনের মৃত্যুদণ্ডের মধ্যে বাকি ১১জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন হাই কোর্ট।

এছাড়া নিম্ন আদালতে নয়জনকে দেওয়া বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ডের রায় হাই কোর্টেও বহাল রয়েছে।

আসামিদের করা আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের বেঞ্চ মঙ্গলবার এই রায় দেন।

আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত ২৬ জুলাই একই বেঞ্চ রায়ের জন্য ১৩ আগস্ট তারিখ রেখেছিলেন। এদিন রায়ের তারিখ পিছিয়ে ২২ আগস্ট নতুন তারিখ দেন আদালত।

সাত খুনের ঘটনায় দায়ের করা দুই মামলায় চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালত রায় দেন। রায়ে র‍্যাবের সাবেক ১৬ কর্মকর্তা-সদস্য এবং নারায়ণগঞ্জের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেন ও তাঁর অপরাধজগতের নয় সহযোগীসহ মোট ২৬ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। এ ছাড়া র‍্যাবের আরও নয়জন সাবেক কর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এরপর চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত নুর হোসেনসহ আসামিদের নিয়মিত ও জেল আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাই কোর্ট। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নুর হোসেন, তারেক সাঈদসহ আসামিরা খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল দায়ের করেন।

গত ২২ মে সাত খুন মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয়।

মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ হল-আমাদের রক্ষা করা, সেখানে তারাই হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছে। দেশে যত অপরাধ ঘটেছে, সব অপরাধের পরিসংখ্যান যদি নেওয়া হয় তবে এই অপরাধটি অপরাধ জগতের মাইলফলক হয়ে থাকবে।’

আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান, অ্যাডভোকেট আহসান উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সরোয়ার কাজল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।

নিম্ন আদালতের রায়ে এ মামলায় দণ্ডিত ৩৫ আসামির মধ্য ২৫ জনই র‌্যাবের সদস্য। তাদের মধ্যে ১৫ জন সেনাবাহিনী, দুজন নৌবাহিনী ও আটজন পুলিশ বাহিনীর সদস্য হিসেবে ছিলেন। সাত খুনের মামলা হওয়ার পর তাদের সবাইকে চাকরিচ্যুত করা হয়।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন, সহযোগী মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, স্বপনের গাড়ি চালক জাহাঙ্গীরকে । ঘটনা দেখে ফেলায় নজরুলের গাড়ির পেছনে থাকা আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিমও অপহৃত হন। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে মেলে ছয়জনের লাশ। পরের দিন ভেসে ওঠে আরেকটি লাশ। মৃতদেহগুলো ইটভর্তি দুটি করে বস্তায় বেঁধে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। ওই ঘটনায় নিহত নজরুলের স্ত্রী বিউটি ও চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল দুটি মামলা করেন।

একসঙ্গে দুই মামলার বিচার শেষে গত ১৬ জানুয়ারি রায় দেন নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ এনায়েত হোসেন। বিচারিক আদালতের রায়ে সেনাবাহিনীর বরখাস্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেনসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়েছিল।

ডব্লিউএন


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি