ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

সারাদেশে মাদকবিরোধী অভিযানে নিহত ১৩

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:২৪, ৩০ মে ২০১৮ | আপডেট: ১২:০১, ৩০ মে ২০১৮

রাজধানীসহ সারাদেশে চলমান মাদক বিরোধী অভিযানে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মৃত্যুর সংখ্যা ১১৯ জনে পৌঁছেছে। গত ২৬ দিনে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া অভিযানকালে আটক করা হয়েছে ১০ হাজার মাদক ব্যবসায়ী। গতকাল সোমবার থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

জানা গেছে, রাজধানী ঢাকা, কুষ্টিয়া, যশোর ও কুমিল্লার মুরাদনগরে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঠাকুরগাঁও, সাতক্ষীরা, নারায়ণগঞ্জ, বরগুনা ও ময়মনসিংহে অভিযানকালে মাদকব্যবসায়ীদের সঙ্গে পুলিশ ও র‌্যাবের বন্দুকযুদ্ধে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

রাজধানী: ঢাকার দক্ষিণখানে `বন্দুকযুদ্ধে` সুমন ওরফে খুকু সুমন নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে দক্ষিণখান থানা এলাকার আশিয়ান সিটি মাঠে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, নিহত ওই ব্যক্তি চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। ঘটনাস্থল থেকে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। সুমনের নামে দক্ষিণ খান থানায় ৫টি মাদকের মামলা রয়েছে। পুলিশের উত্তরা বিভাগের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি-দক্ষিণখান) মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে আবুল হোসেন ওরফে টাওয়ার সুমন (৪০) নামে এক ডাকাত নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার বারদী ইউনিয়নের শান্তিরবাজার চেঙ্গাকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সোনারগাঁও থানার ওসি মোরশেদ আলমসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে বলে দাবি পুলিশের।

কুমিল্লা: মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে কুমিল্লায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে রোস্তম আলী নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। ওই মাদক ব্যবসায়ী উপজেলার ছয়গ্রাম এলাকার মৃত আলী আহাম্মদের পুত্র। মুঠোফোনে বিষয়টি গণমাধ্যমকে বুড়িচং থানার ওসি মনোজ কুমার দে নিশ্চিত করেছেন।

ওসি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদক উদ্ধার করতে উপজেলার লড়িবাগ এলাকায় রাস্তার পাশে তিনি পুলিশ নিয়ে অবস্থান নেন। সেখানে মাদক ব্যবসায়ী রোস্তম ও তাদের সহযোগিরা পৌঁছালে পুলিশ তাদের আটকের চেষ্টা করে। এসময় তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে রুস্তম মারাত্মকভাবে আহত হন। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কুষ্টিয়া: পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মাদক সম্রাট মোকাদ্দেস হোসেন (৩৫) ও ফজলুর রহমান টাইটেল (৫২) নিহত হয়েছেন। উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের শেহালা মাঠে সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের দাবি এ ঘটনায় তাদের ৪ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। দৌলতপুর থানার ওসি শাহ দারা খান জানান, মাদক দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে একদল মাদক ব্যবসায়ী দৌলতপুরের শেহালা মাঠে অবস্থান করছে এমন গোপন সংবাদ পেয়ে পুলিশের একটি টহল দল সেখানে অভিযান চালায়। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই মাদক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হন। তাদের উদ্ধার করে দৌলতপুর হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কক্সবাজার: কক্সবাজাররে নিহত মজিবুর রহমান নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের মৃত আবদুর রশিদের ছেলে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাটি ঘটে বলে র‍্যাব সূত্রে জানা গেছে। র‍্যাব জানায় মজিবুরের নামে মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে অন্তত দশটি মামলা রয়েছে।

র‍্যাব-৭-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. রুহুল আমিন গণমাধ্যমকে বলেন, মাদক কেনা-বেচা হচ্ছে এমন খবর পেয়ে তাঁরা সেখানে অভিযান চালান। ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সেখানে অবস্থানরত মাদক ব্যবসায়ীরা র‍্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। র‍্যাবও গুলি ছুড়ে পাল্টা জবাব দেয়। ঘটনাস্থলে প্রায় চার থেকে পাঁচজন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। গোলাগুলির একপর্যায়ে সবাই পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থলে মজিবুরের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ পড়ে থাকে। ঘটনাস্থল থেকে মজিবুরের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে র‍্যাব।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: আখাউড়ায় সহযোগীদের সঙ্গে `বন্দুকযুদ্ধে` শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী জনি মিয়া (৩০) নিহত হয়েছেন। সোমবার মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র উদ্ধার করেছে। জনি রেলওয়ে বাগানবাড়ীর ফিরোজ মিয়ার ছেলে। আখাউড়া থানার ওসি মোশারফ হোসেন তরফতার জানান, জনির বিরুদ্ধে আখাউড়া ও অন্যান্য থানায় ৮টি মামলা রয়েছে।

যশোর: যশোরে মঙ্গলবার ভোররাতে মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে কথিত গোলাগুলিতে দু’জন নিহত হয়েছেন। তারা হলেন- শহরের রায়পাড়া এলাকার মানিক ও মন্ডলগাতি এলাকার আসর আলী। পুলিশ নিহত দু’জনের লাশ উদ্ধার করে যশোর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি কেএম আজমল হুদা জানান, জেলা শহরের চাঁচড়া রায়পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় দু’দল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দু’জনকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

ময়মনসিংহ: ভালুকায় পুলিশের সঙ্গে ‌`বন্দুকযুদ্ধে` মো. মিজান (৪৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। তিনি একাধীক মামলার আসামি।

ঠাকুরগাঁও: হরিপুর উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হারুন (৪৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোর রাতে উপজেলার শীতলপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হারুন ওই এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে। হরিপুর থানার ওসি রুহুল কুদ্দুস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, হারুনের বিরুদ্ধে হরিপুর থানায় মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে।

বরগুনা: বেতাগীতে র‌্যাবের সঙ্গে `বন্দুকযুদ্ধে` ফিরোজ মৃধা নামে এক মামলা ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোররাতে কাজিরাবাদ ইউনিয়নের কুমড়াখালি এলাকায় এ ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে। বেতাগী থানার ওসি মামুনুর রশিদ জানান, ফিরোজের বিরুদ্ধে নয়টি মাদক মামলা রয়েছে।

সাতক্ষীরা: এদিকে দেশের অন্যান্য জায়গায় পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে গুলিতে অন্যদের মৃত্যু হলেও, উপজেলার কলারোয়ার চিতলার মাঠে সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ২টায় দিকে আনিসুর রহমান নামের এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি দুপক্ষের মধ্যে গোলাগুলিতে তিনি মারা গেছেন। নিহতের নাম আনিসুর রহমান (৪০)। তিনি পাকুড়িয়া গ্রামের সুরত আলির ছেলে।
এমজে/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি