ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

সু চির মিথ্যাচার প্রমাণ করিয়ে দিলো অ্যামনেস্টি!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৫০, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ২১:৫৬, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সম্প্রতি জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি মিথ্যাচার করেছেন বলে প্রমাণ করে দিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। গত ৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে মিয়ানমারে আর কোনো সেনা অভিযান হয়নি বলে দেশটির নেত্রী অং সান সু চি যে দাবি করেছেন তাকে ডাহা মিথ্যা বলে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি। রাখাইন রাজ্যের ভেতর থেকে সম্প্রতি ধারণ করা নতুন তিনটি ভিডিও ও স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে অ্যামনেস্টি দেখিয়েছি, শুক্রবারও নতুন করে জ্বলতে দেখা গেছে রাখাইনের গ্রাম। উড়তে দেখা গেছে, ধোঁয়ার কুণ্ডলি।

অ্যামনেস্টি জানায়, স্থানীয় উগ্র বৌদ্ধ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সম্মিলিত উদ্যোগে এইসব অপকর্ম চালিয়েই যাচ্ছে। সংস্থাটির ক্রাইসিস রেসপন্স বিভাগের একজন মুখপাত্র মন্তব্য করেছেন, ওইসব ছবি আর ভিডিও সু চির দাবির অসারতা প্রমাণ করে।

রাখাইনের হাপর ওয়াট চুয়াং নামে গ্রামের কাছে গত বৃহস্পতিবার ধারণ করা তিনটি ভিডিও হাতে পেয়েছে অ্যামনেস্টি। ওই গ্রাম থেকে পাওয়া স্যাটেলাইট ছবিগুলো অ্যামনেস্টি ১৬ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পর্যালোচনা করে। সর্বশেষ ২২ সেপ্টেম্বরও ওই গ্রাম থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। ওই দিনের ছবিতে দেখা গেছে, কয়েক দিন আগেও গ্রামে যেসব স্থাপনা ছিল, সেগুলোও আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

রাখাইন রাজ্যের একটি সূত্র অ্যামনেস্টিকে জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার  স্থানীয় সময় বেলা দেড়টা থেকে দুইটা পর্যন্ত এসব অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। আর স্থানীয় এক বাসিন্দা তাদেরকে জানান, মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) এবং নজরদারি দলের সদস্যরা গতকাল বিকেলের দিকে বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগ করে। একই দিন কিছু সময় পরে আবার অগ্নিসংযোগ করা হয় গ্রামের বিভিন্ন এলাকায়।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ক্রাইসিস রেসপন্স বিভাগের (দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা) পরিচালক তিরানা হাসান সু চির দেওয়া ভাষণকে মিথ্যাচার দাবি করে বলেন, গত মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, ৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে মিয়ানমারে আর কোনো সেনা অভিযান হয়নি। কিন্তু এসব তথ্য–প্রমাণ তাঁর দাবিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে।’

রাখাইনের ওয়াট চুয়াং গ্রামের আশপাশ থেকে ধারণ করা  একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, গ্রামের কৃষিজমি, ঘরবাড়ি ও গাছপালা আগুনে পুড়ছে। বুথিডং এলাকায় নাগা ইয়ান্ট চুয়াং গ্রামের বাইরে ধারণ করা অপর দুটি ভিডিওর ভিত্তিতে অ্যামনেস্টি বলছে, গতকাল বিকেলেও সেখানে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।

সম্প্রতি ধারণ করা নতুন তিনটি ভিডিও ও স্যাটেলাইট ছবির ভিত্তিতে তিরানা হাসান আরও বলেন, ‘মিয়ানমারে সেনা অভিযান শুরুর প্রায় তিন সপ্তাহ পরও আমরা দেখছি, রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি ও গ্রাম পোড়ানো হচ্ছে। ভয়ে রোহিঙ্গারা এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছে। অভিযানে রোহিঙ্গাদের শুধু গ্রাম থেকে তাড়ানোই হচ্ছে না, তারা যাতে আর ফিরতে না পারে, সে জন্য ঘরবাড়ি পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হচ্ছে।’

গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৪ লাখ ২৯ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে বলে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি। সংস্থাটি মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রাখাইনে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ তুলেছে।

ডব্লিউএন

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি