ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

সেই মায়ের ঠাঁই হলো

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:০২, ১৩ জুলাই ২০১৮

অবশেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ঢাকার ওভার ব্রিজের নিচে আশ্রয় নেওয়া অসুস্থ মা, তার স্বামী ও সন্তানদের ঠাঁই হলো কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নে।

শুক্রবার সকাল সোয়া ১০টায়  জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীনের ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিবারটিকে সদর ইউএনও আমিন আল পারভেজ, এনডিসি সুদীপ্ত কুমার সিংহ এবং কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাড. আহসান হাবীব নীলু তাদের পাঁচগাছিতে নিয়ে যান।

পরিবারটি সকাল সাড়ে ৭টায় ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম শহরে পৌঁছালে তাদের কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তারা তাদরে নিজের জীবনের কথা শোনান ফরিদা বেগম (৪০) ও তার স্বামী আনছার আলী (৬০)।

কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার প্রত্যন্ত বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ইসলামপুর মৌজার মরাকাটি গ্রামে বাড়ি ছিল ফরিদার স্বামী আনছার আলীর। ছিল দুই একর ধানি জমি।

পরিবারটি দুধের ব্যবসা করে ভালোই চলছিল।চরের মধ্যে প্রতিদিন ২ মণ করে দুধ সংগ্রহ করে ১৫ কি.মি. সাইকেল মাড়িয়ে কুড়িগ্রাম শহরের হোটেলগুলোতে দুধ সরবরাহ করতেন আনছার আলী।

এভাবেই চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু ব্রহ্মপূত্র নদের করাল বাড়িঘরসহ সব আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। গৃহহীন হয়ে পড়ে গৃহস্থ পরিবারটি।

পরে তাদের আশ্রয় হয় ইসলামপুরে জ্যাঠাত ভাইয়ের গোয়ালঘরে। সেখানে এক মাস থাকার পর জীবন বাঁচানোর তাগিদে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কাজের সন্ধানে ঢাকায় চলে আসেন তারা।

পরে তারা ঢাকায় এসে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে শেষে আশ্রয় নেন কলাবাগান ওভার ব্রিজের নিচে। ধানমণ্ডি ক্রীড়াচক্র ক্লাবে মাঠের পাতা কুড়ানোর কাজ করে দিনে আয় হয় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। সেই অর্থেই চলছিল মানবেতর জীবনযাপন।

মাঝখানে সেই কাজটাও বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় প্রায় না খেয়ে থাকতে হচ্ছিল পরিবারটিকে। সন্তানদের দুঃখ-কষ্ট সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ শরীর নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করতে বেরিয়ে পড়েন ফরিদা বেগম। তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে।

ঘটনার দিন দু’সন্তানকে নিয়ে কলাবাগান থেকে ল্যাবএইডের দিকে ভিক্ষা করতে বের হন অুসস্থ ওই মা। অসুস্থ শরীর নিয়ে বের হওয়ার ফলে ল্যাবএইডের কাছে অসুস্থ হয়ে ফুটপাতেই পড়ে যান তিনি। এরপর তার ছোট ছেলে সাড়ে তিন বছর বয়সের ফরিদুল ইসলাম বোতলে করে পানি এনে মায়ের মাথায় ঢালেন।

এরপর এই ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেলে কুড়িগ্রামের এই পরিবারটির দায়িত্ব নেন জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন।

পরে সন্তানসহ পুরো পরিবারটি কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবে এলে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেন সিভিল সার্জন ডা. এসএম আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম।

এদিকে কুড়িগ্রাম রেল ও যোগাযোগ উন্নয়ন গণকমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম এই পরিবারটির জন্য প্রাথমিকভাবে তাদের খাবারের জন্য প্রয়োজনীয় চাল, ডাল, তেল, লবণসহ সব উপকরণ সরবরাহ করেন ।

 

এমএইচ/ এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি