ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:৪২, ৫ জুন ২০২০

আজ ৫ জুন ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’। কোভিড-১৯ এর তাণ্ডবে সারাবিশ্বের মানুষ যখন বিপর্যস্ত তখন প্রকৃতিতে ফিরেছে প্রাণ। গত চার মাস ধরে পৃথিবীর মানুষ একপ্রকার ঘরবন্দি। প্রকৃতির ওপর চালানোর অবিচার কমে আসায় প্রকৃতি যেন নিজেকে মেলে ধরেছে। ফিরেছে স্বমহিমায়। এই বাস্তবতা থেকে নতুন করে শিখতে শুরু করেছে মানুষ। তবে সেই শিক্ষা করোনার পরও থাকবে কিনা এখন সেটিই দেখার বিষয়। চলতি বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের মূল প্রতিপাদ্য- ‘টাইম ফর নেচার’। অর্থাৎ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের এখনই সময়।

জীব বৈচিত্র্য ধংস হলে ভারসাম্য হারাবে পরিবেশ, বিরাট ক্ষতির মুখে পড়বে মানবজাতি। করোনার মত মহামারি হানা দেবে বার বার। এ অবস্থায় পরিবেশ রক্ষায় এখনই সব দেশকে নতুন করে ভাববার আহ্বান পরিবেশ বিজ্ঞানীদের। করোনার কারণে দিবসটিতে এবার সরকারিভাবে আনুষ্ঠানিক কোনো আয়োজন থাকছে না।

অর্থনৈতিক কর্মকান্ড চালাতে গিয়ে মানুষই পরিবেশের ক্ষতি করছে। বেড়েই চলেছে গ্রিন হাউজ গ্যাস নি:সরণ। বাড়ছে তাপমাত্রা, সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্য, ভূমিধ্বসের মতো প্রাকৃতি দুর্যোগ হানা দিচ্ছে বার বার। এর ফলেই ধ্বংস হচ্ছে জীব বৈচিত্র্য। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবেশ চক্র বজায় রাখতে জীবজগতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কোন একটি প্রজাতি ধংস হলে মানুষের জন্য তা হুমকি। 

তারা বলছেন, করোনার ওষুধ হয়তো রয়েছে আশপাশের কোন গাছে বা প্রানীর দেহে। তাই পরিবেশ রক্ষায় এখনই সচেতন হওয়া প্রয়োজন। কারণ পরিবেশকে রক্ষা করেই জীব বৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখতে হবে মানুষের স্বার্থেই। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জীববৈচিত্র্য রক্ষার যে তাগিদ দুনিয়াব্যাপি আলোচিত হচ্ছিলো মানুষের অতিপ্রয়োজনীয়তা তাতে বাঁধ সাধছিল। করোনা মানুষের সেই অতিপ্রয়োজনীতা কমিয়ে জীববৈচিত্র্য রক্ষা করছে। বিশ্ব পরিবেশ দিবসে ঢাকার বাতাসে যেমন কমেছে সিসার বিষ, তেমনি শব্দের দূষণও কমেছে।

এবার পরিবেশ দিবসের আয়োজক দেশ কলম্বিয়া। জার্মানির সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে তারা। গত বছর ছিল চীন। সারা বিশ্বের জীববৈচিত্র্যের ১০ শতাংশই রয়েছে কলম্বিয়াতে। অ্যামাজন এর একটি বড় অংশ রয়েছেই কলম্বিয়াতে। এই অ্যামাজনেই বছরের পর বছর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকার বনভূমিতেও গত বছর বড় রকমের আগুনের সূত্রপাত হয়।

জাতিসংঘ বলছে, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ না করাতে আমাদের পরিবেশের ভারসাম্যই শুধু নষ্ট হচ্ছে না আমরা এর মাধ্যমে আমাদের জীবনকে ধ্বংস করছি। কোভিড আমাদের সেই শিক্ষা দিচ্ছে উল্লেখ করে জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে আমরা জীববৈচিত্র্য রক্ষা করলে শুধু খাদ্যেরই যোগান পাব না বরং ওষুধসহ নির্মল পানি এবং বাতাস পাব। যা মানুষের সুস্থতার বড় অনুষঙ্গ হতে পারে।

আয়োজক কলম্বিয়া বলছে, এখন তাদের দেশে প্রায় ১০ লাখ জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে এর থেকে গুরুত্বপূর্ণ সময় আর আসেনি। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ না করায় জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে যার শিকার হচ্ছে বাংলাদেশও। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়াতে লবণাক্ত পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে বিস্তর এলাকা। এতে মানুষ গৃহহীন হয়ে ভাসমান জীবন যাপন করছে। শুধু বাড়িই নয় মানুষ হারাচ্ছে ফসলের মাঠ এবং তার কাজের জায়গাও।

করোনার প্রভাবে গত দু’মাস ধরে চিরায়ত শব্দ দূষণের যন্ত্রণার হাত থেকে অনেকটাই মুক্ত রাজধানীবাসী। তবে একটু একটু করে জীবনযাত্রা সচল হওয়াতে শব্দ দূষণ কিছুটা বেড়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৪ সাল থেকে জাতিসংঘের মানবিক পরিবেশ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) উদ্যোগে প্রতিবছর ৫ জুন ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি